(বাঁ দিক থেকে) রাজ চক্রবর্তী, ‘টাইগার ইজ় ব্যাক’ লেখা সেই ফ্লেক্স, অর্জুন সিংহ। —নিজস্ব চিত্র।
ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিংহের ছবি সম্বলিত ফ্লেক্স ঝুলল শিল্পাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায়। সেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অর্জুনের ছবি দিয়ে লেখা, ‘টাইগার ইজ় ব্যাক’। যা দেখে অনেকেই মনে করছেন, রাজ চক্রবর্তীর নামে যে ফ্লেক্স ঝুলেছিল গত ২১ ফেব্রুয়ারি, তারই পাল্টা হিসাবে অর্জুন অনুগামীরা এই ফ্লেক্স ঝুলিয়েছেন। যদিও অর্জুন বলেন, ‘‘কারা করেছেন আমি কিছুই জানি না।’’
গত ২১ ফেব্রুয়ারি ছিল ব্যারাকপুরের তৃণমূল বিধায়ক তথা পরিচালক রাজের জন্মদিন। সে দিন রাজের ছবি সম্বলিত ফ্লেক্সে ছেয়ে গিয়েছিল ব্যারাকপুরের বিভিন্ন এলাকা। সেখানে লেখা ছিল, ‘এ বার ব্যারাকপুরে জনতার রাজ।’ লোকসভা ভোটের প্রাক্কালে সেই হোর্ডিং দেখে তৃণমূলের মধ্যে তো বটেই, রাজনৈতিক মহলে এই আলোচনা শুরু হয়েছিল, তা হলে কি লোকসভায় রাজকে প্রার্থী করা হবে? যদিও সে ব্যাপারে শাসকদল বা রাজের তরফে স্পষ্ট করে কিছুই জানা যায়নি। অনেকের মতে, ভোটের আগে প্রার্থী কে হবেন তা নিয়ে নানা অনুমান থাকে। কিছু কিছু জিনিস থেকে ধারণাো তৈরি হয়। রাজের ফ্লেক্সের ক্ষেত্রেও তেমনটাই হয়েছিল।
২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে তৃণমূলের টিকিট না পেয়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন অর্জুন। পদ্ম শিবির তাঁকে টিকিট দেয়। তিনি ভোটেও জেতেন। পরাস্ত করেছিলেন তৃণমূলের দীনেশ ত্রিবেদীকে। কিন্তু সেই অর্জুনই ২০২২ সালের অগস্টে তৃণমূলে ফিরে যান। কিন্তু তার পর থেকে সবটা যে মসৃণ ভাবে চলছে তা নয়। অর্জুনের সঙ্গে জগদ্দলের তৃণমূল বিধায়ক সোমনাথ শ্যামের প্রকাশ্যে বাগ্যুদ্ধ চলেছে। দু’জনের মিটমাট করাতে কলকাতা থেকে শিল্পাঞ্চলে ছুটতে হয়েছিল তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীকে। যদিও সেই বৈঠকের কথা জানেন না বলে ‘এড়িয়ে’ গিয়েছিলেন সোমনাথ। সোমবার অর্জুনের ছবি সম্বলিত ‘টাইগার ইজ় ব্যাক’ হোর্ডিং দেখে কটাক্ষের সুরে সোমনাথ কটাক্ষের সুরে বলেছেন, ‘‘বাঘ তো জঙ্গলে থাকে জানতাম। এ রকম হলে তো বন দফতরকে খবর দিতে হবে।’’
ব্যারাকপুর লোকসভার সাতটি বিধানসভার মধ্যে ছ’টি বিধানসভা তৃণমূলের দখলে। ভাটপাড়ার বিজেপি বিধায়ক অর্জুনের ছেলে পবন সিংহ। তৃণমূল সূত্রে খবর, দলের ছ’জন বিধায়কের মধ্যে পাঁচ বিধায়কই অর্জুনের বিরুদ্ধে। দলের মধ্যে রাজও অর্জুনের তীব্র বিরোধী বলেই খবর। কেবল আমডাঙার তৃণমূল বিধায়ক রফিকুল ইসলাম অর্জুনের পক্ষে রয়েছেন বলে খবর। এ হেন ব্যারাকপুরে হোর্ডিংয়ের পাল্টা হোর্ডিং ঘিরে রাজনৈতিক মহলে আলোচনা শুরু হয়েছে।