—প্রতীকী চিত্র।
জেলার ১৬টি বিধানসভার মধ্যে বর্ধমান দক্ষিণ অর্থাৎ বর্ধমান শহরকে ‘অর্থনৈতিক ভাবে স্পর্শকাতর’ বলে মনে করছে নির্বাচন কমিশন। ইতিমধ্যে জেলা থেকে সেই রিপোর্ট কমিশনের কাছে পাঠানো হয়েছে। এই বিধানসভায় আর্থিক লেনদেন নিয়ে বিশেষ নজরদারি ও সতর্ক থাকার জন্য ইতিমধ্যে জেলা প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছে কমিশন।
কমিশন সূত্রে জানা যায়, গত লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচনে বর্ধমান শহর থেকে প্রচুর টাকা উদ্ধার হয়েছিল। প্রচুর মদও বাজেয়াপ্ত হয়। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই বর্ধমান দক্ষিণকে ‘অর্থনৈতিক স্পর্শকাতর’ বলে ঘোষণা করা হয়। জেলা প্রশাসনের দাবি, বর্ধমান শহরে একাধিক চালকল রয়েছে। পাইকারি চালের বড় বাজারও বর্ধমান শহরে। ফলে, নগদ টাকা লেনদেন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কয়েক মাস আগে, নগদ টাকা নিয়ে রায়নার সেহেরা থেকে আসার পথে শহরের তেলিপুকুরে পুলিশের হাতে ধরা পড়েন এক চালকল ব্যবসায়ী। পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে। কমিশনের দাবি, চালকলগুলির উপরেও নজর রাখা হবে। গত কয়েক দিনেই বর্ধমান শহর থেকে ২৭ লক্ষ টাকা বাজেয়াপ্ত করেছে কমিশন।
পুলিশ জানিয়েছে, প্রতি বারই ভোটের মুখে বিপুল টাকা উদ্ধার হয়। যার মোট অঙ্ক কোটি ছাড়িয়ে যায়। গত কয়েকটি নির্বাচনে কত টাকা উদ্ধার করা হয়েছে, তা নিয়ে কোনও মামলা রুজু হয়েছিল কি না, সে সব রিপোট দেওয়া হয়েছে কমিশনকে। পুলিশের এক আধিকারিক জানান, ওই রিপোর্ট খতিয়ে দেখে আগামী লোকসভা নির্বাচনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ জারি করা হয়েছে। সেই সূত্র ধরেই লোকসভা ও বিধানসভা কেন্দ্রগুলির কোনটি কতটা সংবেদনশীল, তা ঠিক হয়েছে।
কমিশন সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে জেলায় নগদ ৬৫ লক্ষ টাকা, ২৪ লক্ষ টাকার মদ, ১ কোটি ২৫ লক্ষ টাকার গাঁজা উদ্ধার হয়েছিল। সব মিলিয়ে ২ কোটি ৩৭ লক্ষ টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়। গত বিধানসভা নির্বাচনে ২০ লক্ষ টাকা নগদ-সহ ১ কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত করে কমিশন। ২০২২ সালেও প্রায় ১৩ কোটি টাকা ও চলতি আর্থিক বছরে ১৩ কোটি টাকার বেশি বাজেয়াপ্ত করেছে কমিশন।
সূত্রের খবর, ভোট ঘোষণা হওয়ার পর থেকে ৩৯৮টি মামলায় ৩ কোটি ৮১ লক্ষ টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। কমিশনের দাবি, এ ছাড়াও জেলায় ৪৯টি অভিযোগের নিষ্পত্তি করা হয়েছে। আদর্শ নির্বাচন বিধি লঙ্ঘনের জন্য ৫৮৯৯টি দেওয়াল মুছেছে কমিশন, পোস্টার খুলে দিয়েছে ২০,৬৮৮টি, ব্যানার খুলেছে ৫৯৩৫২টি।
কমিশনের দাবি, এই সব রিপোর্ট খতিয়ে দেখে ‘অর্থনৈতিক স্পর্শকাতর পকেট’ তৈরি করা হবে। বর্ধমানের স্টেশন বাজার, বাদামতলা, আলমগঞ্জ, বাসস্ট্যান্ড, গলসি বাজার এলাকা রয়েছে তাদের নজরে।