জাতীয় নির্বাচন কমিশন। —ফাইল চিত্র।
বড় কোনও ঘটনা না ঘটলেও উত্তেজনা ছিল ষষ্ঠ দফার ভোটে। সপ্তম দফার সেই সম্ভাবনা এড়াতে ‘১০ মিনিট’-এর সময়সীমা বেঁধে দিল নির্বাচন কমিশন। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, ১ জুন ওই দফার ভোটে কোনওরকম গোলমালের সম্ভাবনা দেখা দিলে তা সমাধানের জন্য ওই সময়ই বেঁধে দেওয়া হয়েছে কলকাতা পুলিশ কমিশনার, কলকাতা উত্তর এবং কলকাতা দক্ষিণ কেন্দ্রের জেলা নির্বাচনী আধিকারিকদের (ডিইও) নিয়ে হওয়া বৈঠকে।
অন্য দিকে রবিবারই ষষ্ঠ দফার ভোটের চূড়ান্ত হার প্রকাশ করেছে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের (সিইও) কার্যালয়। তাতে বিগত লোকসভা ভোটের সামগ্রিক হারকে ছাপিয়ে না গেলেও, তমলুক কেন্দ্রে (সেই কেন্দ্রে নন্দীগ্রাম রয়েছে) এ বারের ভোটের হার ছাপিয়ে গিয়েছে ২০১৯ সালকে। আবার ঘাটাল কেন্দ্রে গত এবং এ বারের লোকসভা ভোটের হার একেবারে কাছাকাছি।
সিইও কার্যালয় সূত্রের খবর, কলকাতার পুলিশ কমিশনার এবং দুই ডিইও-কে নিয়ে বৈঠক করেছিলেন কমিশন নিযুক্ত রাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশেষ সাধারণ পর্যবেক্ষক এবং বিশেষ পুলিশ পর্যবেক্ষক। সেই বৈঠকে স্থির হয়েছে, ৩০ মে সকাল থেকে ১ জুন ভোট শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোনও ঘটনা ঘটলে বা ঘটার সম্ভাবনা তৈরি হলে ১০ মিনিটের মধ্যে তা মোকাবিলা করতে হবে কড়া হাতে। ইতিউতি অযথা জটলা বরদাস্ত করা হবে না। এখনও হাতে কয়েক দিন সময় রয়েছে। তার আগে জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা ব্যক্তিদের হেফাজতে নেওয়া এখনও বাকি থাকলে তা শেষ করে ফেলার বার্তাও দেওয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানাচ্ছে, সপ্তম দফার ভোটে আগের সিদ্ধান্ত বদলে প্রায় দু’হাজার কুইক রেসপন্স দল (কিউআরটি) মোতায়েনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। বুথ পাহারা এবং কিউআরটি-র পাশাপাশি নাকা তল্লাশিতেও কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ব্যবহার করা হবে। প্রশাসনিক বিশ্লেষকদের মতে, ষষ্ঠ দফার ভোটে কেশপুর, গড়বেতার কিছু এলাকায় গোলমাল হয়েছিল। সেখানে কিউআরটি দেরিতে পৌঁছোন নিয়ে অভিযোগও উঠেছিল। সেই দিক থেকে এই প্রস্তুতির তাৎপর্য ভিন্ন।
১ জুন সপ্তম দফায় ভোট হবে দমদম, বারাসত, বসিরহাট, জয়নগর, মথুরাপুর, ডায়মন্ড হারবার, যাদবপুর, কলকাতা উত্তর, কলকাতা দক্ষিণে। ইতিমধ্যেই সন্দেশখালির কারণে বসিরহাট কেন্দ্রটি কমিশনের বাড়তি নজরে রয়েছে। তাই ষষ্ঠের তুলনায় সংখ্যা বাড়িয়ে প্রায় ৯৭৮ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের পরিকল্পনা রয়েছে কমিশনের।
অন্য দিকে, শনিবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত ষষ্ঠ দফার সাতটি আসনে ভোটদানের মোট হার ছিল ৭৭.৯৯%। রবিবার মুখ্য নির্বাচনী কার্যালয়ের দফতর চূড়ান্ত যে তথ্য প্রকাশ করেছে, তাতে ভোটদানের হার ৪.৭২ শতাংশ বিন্দু বেড়ে হয়েছে ৮২.৭১%। তবুও তা ২০১৯ সালে গত লোকসভা ভোটের তুলনায় ৪.৬৮ শতাংশ বিন্দু কম। ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের হিসেব ধরলে তখন এই সব কেন্দ্রগুলিতে ভোটদানের মোট হার ছিল ৮৯.১৪%।
তমলুক কেন্দ্রে ২০১৯ সালের তুলনায় এ বছর ভোটদানের হার বেশি। গত লোকসভা ভোটে ওই কেন্দ্রে ভোটদানের হার ছিল ৮৪.৭১%। এ বারের ভোটে তা হয়েছে ৮৪.৭৯%। ঘাটাল কেন্দ্রেও গত লোকসভা এবং এ বারের ভোটের হার একেবারে কাছাকাছি। ২০১৯ সালে সেখানে ভোটদানের হার ছিল ৮২.৭০%। এ বার সেখানে ভোট পড়েছে ৮২.১৭%। বাকি কেন্দ্রগুলিতে অবশ্য গত বারের লোকসভা ভোটের হারকে ছাপিয়ে যেতে পারেনি এ বারের হার।