দেবশালায় গাজন উৎসবে ঢাকিদের দল। —নিজস্ব চিত্র।
চৈত্রের শেষ দিকে গাজন উৎসব শুরু হয়। আর এই গাজন থেকেই গ্রামবাংলায় মনসাপুজো, চব্বিশ প্রহরের মতো নানা অনুষ্ঠানও হয়ে থাকে। এই সব ধর্মীয় অনুষ্ঠানে ডাক পড়ে ঢাকিদের। কাজেই এ সময় উপার্জনও ভাল হয়ে থাকে তাঁদের। তবে এ বছর এই সব অনুষ্ঠানের পাশাপাশি যোগ হয়েছে ‘ভোট উৎসব’। সেখানেও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রচারের অঙ্গ হিসেবে ঢাকিদের নিয়ে যাওয়া হয়। তাই এ বার বাড়তি আয়ের আশা দেখছেন কাঁকসা ও বুদবুদের ঢাকিরা।
কাঁকসার রক্ষিতপুর, বান্দরা, বামুনাড়ার পাশাপাশি বুদবুদের দেবশালা, ভাতকুণ্ডা, সোঁয়াইয়ের মতো গ্রামে গাজন উৎসব হয়ে থাকে। আবার দুর্গাপুরের নামো সগড়ভাঙা, নডিহার মতো শহর ঘেঁষা এলাকাগুলিতেও গাজনের আয়োজন হয়ে আসছে দীর্ঘ দিন ধরেই। আবার বৈশাখ মাস শুরু হতেই গ্রামে গ্রামে চব্বিশপ্রহর, মনসাপুজোও হয়। এ সব ধর্মীয় অনুষ্ঠানে ডাক পড়ে ঢাকিদের। আউশগ্রাম ২ ব্লকের মাজুড়িয়া গ্রামে প্রায় ১২ জন ঢাকি রয়েছেন। সেখানকার এক ঢাকি কার্তিক রুইদাস জানান, গাজনের সময় চার দিনের বায়না মেলে। থাকা ও খাওয়া বাদে এক এক জনের প্রায় ৪,০০০ টাকার মতো পারিশ্রমিকও মেলে। আর এই সময়ে গাজন থেকে শুরু করে আষাঢ় মাস পর্যন্ত তাঁদের বরাত মেলে। বছরের উপার্জনের অনেকটাই এ সময়ে হয়ে থাকে। পাশাপাশি যুক্ত হয়েছে ভোটও।
পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান জেলায় ভোট শুরু হতে কিছু দিন দেরি রয়েছে। তবে জোরদার প্রচারে নেমে পড়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। আর প্রচারে ডাক পড়ছে ঢাকিদেরও। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, প্রচারে চমক আনতে ঢাকি-সহ অন্য নানা শিল্পীদের নিয়ে আসা হয়। মাজুড়িয়ার আর এক ঢাকি মঙ্গলা দাস, নেপাল দাসরা জানান, গত বিধানসভা ভোটের সময় পাঁচ থেকে ছ’টি করে প্রচারের বরাত পেয়েছিলেন বিভিন্ন দলের হয়ে। যাতায়াত ও খাওয়া খরচ বাদ দিয়ে এক এক জনকে ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা করে পারিশ্রমিক দেওয়া হয়েছিল। তাঁরা বলেন, “এ বারের প্রচারের জন্যও অনেকে বলতে আসছেন। গাজন, চব্বিশ প্রহরের জন্য সময়ের কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। তবে এখনও প্রচারের জন্য বেশ কিছু দিন সময় রয়েছে। আমাদের ডাক পড়বে।” আর এই ভোটের জন্য এ বছর উপার্জনও বেশি হবে বলে আশা করছেন তাঁরা। বুদবুদের মাড়ো
গ্রামের ঢাকি সঞ্জয় রুইদাস বলেন, “প্রতি বছর তো আর ভোট থাকে না। তাই এ বার গাজন, চব্বিশপ্রহরের পাশাপাশি ভোটের কারণে আমাদের উপার্জন বাড়বে।”