—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
গ্রাম পঞ্চায়েত নির্বাচনে বাম কংগ্রেস জোট বেঁধে সব থেকে বেশি প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল ডোমকল মহকুমা এলাকায়। আর তাতে গ্রাম পঞ্চায়েত নির্বাচনে ফলাফলেও দেখা গিয়েছে অনেক গ্রাম পঞ্চায়েত ছিনিয়ে নিয়েছে তারা। তখন থেকেই দু’দল কাছাকাছি এসেছে। রাহুল গান্ধীর যাত্রাপথে দেখা গিয়েছে হাতের পাশে কাস্তে হাতুড়ির পতাকাও। দুই দলের কর্মী সমর্থকরা দাবি করেছিলেন, রাহুল গান্ধীর ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রার সফরের রাস্তায় হিসেবে এই মহকুমার রাজ্য সড়ককে বাছা হোক।
তবে বাম-কংগ্রেস উভয় দলের নেতাদের দাবি, সাধারণ কর্মীদের দাবি থাকবে স্বাভাবিক। এমন নেতাকে একটু কাছে পেতে কে না চায়। কিন্তু এত বৃহত্তরও কর্মকাণ্ডে সব সময় সবার দাবি মতো কাজ করা সম্ভব নয়।
তবে ডোমকল মহকুমার কংগ্রেসকর্মীরা থেমে থাকেননি। তাঁরা যে যেমন পেরেছেন লালবাগ জিয়াগঞ্জ বহরমপুরে পৌঁছে গিয়েছিলেন তাঁদের প্রিয় নেতাকে এক ঝলক দেখার জন্য। আর তাতেই বহরমপুর চোনাখালি মোড়ে রীতিমতো বন্ধের চেহারা নিয়েছিল বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে। তবে কংগ্রেস নেতাদের দাবি, লোকসভা নির্বাচনের সময় রাহুল গান্ধীর একটি জনসভা ডোমকল এলাকায় করার জন্য আবেদন জানানো হবে শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে।
একটা সময় এই এলাকায় সিপিএম এবং কংগ্রেসের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল সাপে-নেউলে। বাম আমলে এক একটা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে খুন হয়ে গিয়েছেন উভয় দলের কর্মী সমর্থকেরা। কিন্তু বর্তমানে সেই সম্পর্ক অনেকটাই ফিকে হয়ে গিয়েছে। মূলত শাসক দল তৃণমূলের দুর্নীতির বিরুদ্ধে বাম-কংগ্রেস এক সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে লড়াই শুরু করেছে। বিশেষ করে গ্রাম পঞ্চায়েত নির্বাচনে এক সঙ্গে লড়ে সাফল্য পেয়েছে তারা। বেশ কিছু গ্রাম পঞ্চায়েতের দখল নিয়েছে বাম কংগ্রেস জোট। রানিনগর পঞ্চায়েত সমিতি দখল করেছে তারা। জলঙ্গিতেও পঞ্চায়েত সমিতিতে বড় ভূমিকা পালন করছে বাম-কংগ্রেস। ফলে খুব স্বাভাবিক ভাবেই এই এলাকা দিয়ে রাহুল গান্ধীর ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা হোক সেটা চাইছিলেন কংগ্রেস নেতা-কর্মীরা। তবে জলঙ্গির কংগ্রেস নেতা আব্দুর রাজ্জাক মোল্লা বলছেন, ‘‘রাহুল গান্ধী সর্বভারতীয় নেতা। তাঁর পক্ষে জেলার কোনায় কোনায় যাওয়া সম্ভব নয়। আমরা সামান্য পথ গিয়ে তাঁকে দেখে এসেছি।’’
তবে এই ঘটনা নিয়ে কংগ্রেস বা বামেদের মধ্যে তেমন কোনও ক্ষোভ নেই। তারা অনেক আগে থেকেই জেনে যান কোন পথে যাবেন রাহুল। ফলে ডোমকল মহকুমার কংগ্রেস এবং সিপিএমের কর্মী সমর্থকরা পৌঁছে গিয়েছিলেন রাহুল গান্ধীর পরিক্রমার পথে। ডোমকলের কুপিলা গ্রাম থেকে আব্দুর রশিদ মণ্ডল ৫০ কিমি পথ পাড়ি দিয়ে হাজির হয়েছিলেন চুনাখালি মোড়ে। তাঁদের নেতাকে দেখার জন্য ঠায় চার ঘণ্টা দাঁড়িয়েছিলেন সেখানে। তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের এলাকা দিয়ে একবার তিনি গেলে হয়তো লক্ষ লক্ষ মানুষ তাঁকে দেখতে পেতেন সেটা ঠিক।’’