কেন্দ্রীয় বাহিনীর রুট মার্চ। — ফাইল চিত্র।
পঠনপাঠন ব্যাহত করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভোটের নিরাপত্তারক্ষী না রেখে অন্যত্র রাখা হোক, এই দাবিতে সরব শিক্ষক মহল। নির্বাচন কমিশন ও শিক্ষা দফতরকে এ নিয়ে চিঠিও দিয়েছে শিক্ষক সংগঠন মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতি।
মার্চের গোড়াতেই জেলায় জেলায় চলে এসেছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। তারা রুট মার্চও শুরু করেছে। এখনও লোকসভা নির্বাচন ঘোষণা হয়নি। নির্বাচন কমিশনের মতে, পশ্চিমবঙ্গের আইন-শৃঙ্খলার যা অবস্থা, তাতে আগে থেকেই বাহিনী মোতায়েনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে।
বিভিন্ন জেলা থেকে শিক্ষকেরা জানাচ্ছেন, সেই কেন্দ্রীয় বাহিনীর জন্য ইতিমধ্যেই কয়েকটি স্কুল খালি করার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। শিক্ষক সংগঠনগুলির প্রশ্ন, নিরাপত্তারক্ষী রাখার ক্ষেত্রে প্রথমেই কেন স্কুলের কথা মনে হবে? শহরাঞ্চলে ক্লাব, ওয়ার্ড কমিউনিটি সেন্টার থেকে শুরু করে সরকারি গেস্ট হাউস-সহ থাকার জন্য সরকারি নানা ব্যবস্থাপনা রয়েছে। গ্রামাঞ্চলে কিষান মান্ডি, সাইক্লোন সেন্টার, সরকারি গেস্ট হাউস-সহ সরকারি অন্যান্য় ব্যবস্থাপনা রয়েছে থাকার।
শিক্ষকদের দাবি, সে সব জায়গায় আগে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে রাখা শুরু হোক। তারপর না হয় স্কুলের কথা ভাবা যেতে পারে। প্রথমেই কেন স্কুলে কেন্দ্রীয় বাহিনী ঢুকিয়ে দেওয়া হবে? তাতে তো ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনার ভয়ঙ্কর ক্ষতি হবে।
কেন্দ্রীয় বাহিনীর থাকার সময়ে, স্কুল বন্ধ থাকলেও অনলাইনে পঠনপাঠন শুরু করার প্রসঙ্গও উঠেছে। যদিও তার পক্ষপাতী নন অধিকাংশ শিক্ষক। তাঁদের মতে, গ্রামাঞ্চলে নেটওয়ার্ক দুর্বল থাকে। সবার স্মার্ট ফোন নেই। করোনার সময়ে অনলাইন পঠনপাঠন
হলেও গ্রামাঞ্চলের পড়ুয়ারা যে তাতে খুব একটা উপকৃত হয়নি, তা করনো পরবর্তী কালে পড়ুয়ারা স্কুলে আসতেই বোঝা গিয়েছিল। তাই স্কুলে সশরীরে উপস্থিত থেকে পঠনপাঠন যেন চালানো যায়, তার ব্যবস্থাই করতে হবে।
মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক নীলকান্ত ঘোষ বলেন, ‘‘শিক্ষার অধিকার আইন অনুযায়ী বছরে ১০০০ ঘণ্টা পঠনপাঠন হওয়ার কথা। এ ভাবে এখন থেকেই স্কুলে স্কুলে কেন্দ্রীয় বাহিনী ঢুকে পড়লে যা ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলেই আমাদের আশঙ্কা।
এপ্রিলের শুরু থেকে সরকার নির্ধারিত প্রথম পর্য়ায়ক্রমিক মূল্যায়ন হওয়ার কথা। কেন্দ্রীয় বাহিনীর জন্য স্কুল ছুটি হয়ে গেলে এই পরীক্ষার জন্য পড়ুয়ারা কী ভাবে তৈরি হবে? সে ক্ষেত্রে পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়ন সময় মতো করা যাবে কি না, প্রশ্ন উঠেছে। আমাদের দাবি, কেন্দ্রীয় বাহিনীর থাকার বিকল্প ব্যবস্থা করতে হবে।’’