Lok Sabha Election 2024

বসিরহাটে লড়বে সিপিএম, প্রার্থী ঘোষণা দুই আসনে, আইএসএফ-কে সমর্থন ডায়মন্ড হারবারে

আসন সমঝোতা নিয়ে বামফ্রন্ট, কংগ্রেস এবং আইএসএফের আলাদা আলোচনায় এই রকম মীমাংসা-সূত্র উঠে এসেছে বলে সূত্রের খবর। এরই মধ্যে রাজ্যের আরও দুই আসনে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেছে বামফ্রন্ট।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ মার্চ ২০২৪ ০৭:৫০
Share:

—প্রতীকী ছবি।

বিস্তর আলাপ-আলোচনার পরে বসিরহাট লোকসভা আসনে এ বার লড়তে চলেছে সিপিএম। সব ঠিক থাকলে ওই লোকসভা কেন্দ্রে সিপিএমের প্রার্থী হতে পারেন প্রাক্তন বিধায়ক এবং সন্দেশখালি-কাণ্ডের সময়ে জেল খেটে আসা নিরাপদ সর্দার। ডায়মন্ড হারবারে তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে লড়তে পারে আইএসএফ। একান্তই তারা সেখান থেকে নওসাদ সিদ্দিকীকে প্রার্থী করতে অপারগ হলে ডায়মন্ড হারবারে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে সিপিএম। আসন সমঝোতা নিয়ে বামফ্রন্ট, কংগ্রেস এবং আইএসএফের আলাদা আলোচনায় এই রকম মীমাংসা-সূত্র উঠে এসেছে বলে সূত্রের খবর। এরই মধ্যে রাজ্যের আরও দুই আসনে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেছে বামফ্রন্ট। বাকি আসন নিয়ে আলোচনা চলছে।

Advertisement

বামফ্রন্টের বৈঠক শেষে শুক্রবার ফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু জানিয়েছেন, তফসিলি জাতির জন্য সংরক্ষিত আরামবাগ লোকসভা কেন্দ্রে সিপিএমের প্রার্থী হচ্ছেন বিপ্লব কুমার মৈত্র। তফসিলি জনজাতির জন্য সংরক্ষিত ঝাড়গ্রামে সিপিএমের প্রার্থী সোনামণি মুর্মু (টুডু)। এখনও পর্যন্ত ২৩টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা হল বামফ্রন্টের। সমঝোতার ভিত্তিতে কংগ্রেস প্রার্থী ঘোষণা করেছে ৮ আসনে। কোচবিহারে বামফ্রন্টের প্রার্থী থাকা সত্ত্বেও কংগ্রেস সেখানে পরে প্রার্থী দিয়েছে। ওই আসনে প্রার্থী প্রত্যাহার করার জন্য কংগ্রেসের কাছে আবেদন জানিয়েছেন বিমানবাবু। তাঁর বক্তব্য, ‘‘বিজেপি ও তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে বোঝাপড়া গড়ে তুলতে যারা আগ্রহী, তাদের মধ্যে আসন সমঝোতা হচ্ছে। এই বোঝাপড়ায় থেকে একে অপরের বিরুদ্ধে লড়াই করা যায় না। এই বিষয়টা বিবেচনায় রাখতে হবে।’’ আসন ভাগ নিয়ে বাম শরিক এবং বাইরে কংগ্রেস ও আইএসএফের সঙ্গে আলোচনা শেষ না হওয়ায় বাকি কেন্দ্রের প্রার্থীদের নাম একসঙ্গে তাঁরা ঘোষণা করছেন না বলে জানিয়েছেন বিমানবাবু। আগামী ৩১ মার্চ, রবিবার ফের বামফ্রন্টের বৈঠক ডাকা হয়েছে। ওই দিনের মধ্যে সার্বিক রফা পরিষ্কার হয়ে যাবে বলে ফ্রন্ট চেয়ারম্যানের আশা।

বাম সূত্রের খবর, প্রথমে রাজি না থাকলেও শেষ পর্যন্ত বসিরহাট আসনটি সিপিএমের জন্য ছেড়ে দিতে রাজি হয়েছে বাম শরিক সিপিআই। বসিরহাটে বিজেপি এ বার প্রার্থী করেছে সন্দেশখালির ‘নির্যাতিতা’দের প্রতিনিধি রেখা পাত্রকে। তার পরেই সন্দেশখালির আন্দোলনের মুখ, ক্ষেতমজুর সংগঠনের নেতা নিরাপদকে সেখানে প্রার্থী করার জন্য নতুন করে তৎপর হয়েছিলেন সিপিএমের রাজ্য নেতৃত্ব। তাঁদের আবেদনের প্রেক্ষিতে বসিরহাট থেকে সরে দাঁড়াতে রাজি হয়েছে সিপিআই। তবে সেখানে এখনও আইএসএফের প্রার্থী রয়েছে। অন্য দিকে, নিজেদের ভাগ থেকে ঘাটাল আসন এ বার সিপিএমতে ছেড়ে দিতে রাজি হয়েছিল সিপিআই। এখন পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তারা আবার ঘাটাল ফিরে পাবে নাকি বিকল্প হিসেবে কাঁথি আসনে লড়বে, সেই ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। শরিকদের নিজেদের দলে আলোচনার পরে আজ, শনিবার ফের সিপিএমের সঙ্গে দ্বিরপাক্ষিক বৈঠক হওয়ার কথা।

Advertisement

বামফ্রন্টের বৈঠকে এ দিনও অবশ্য উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল আর এক বাম শরিক ফরওয়ার্ড ব্লককে ঘিরে। তারা পুরুলিয়া আসনের দাবি ছাড়তে নারাজ। সেখানে কংগ্রেস আগেই নেপাল মাহাতোকে প্রার্থী করেছে। বিমানবাবুর কাছে ফ ব নেতৃত্বের প্রস্তাব, কোচবিহারে বামফ্রন্ট যেমন ফ ব প্রার্থীকে সমর্থন করছে, সে ভাবে পুরুলিয়ায় ফ্রন্ট না হয় কংগ্রেসকে সমর্থন করুক। দলীয় ভাবে ফ ব-র প্রার্থী থাকুক। কিন্তু সিপিএম মনে করছে, এক শরিকের জন্য ‘ব্যতিক্রম’ করলে পরিস্থিতি জটিল হবে, আসন সমঝোতার ক্ষেত্রেও ভুল বার্তা যাবে। এমতাবস্থায় বারাসতে ফ ব প্রার্থীর নাম এখনও ঘোষণা করেনি বামফ্রন্ট। ফ ব-র রাজ্য সম্পাদক নরেন চট্টোপাধ্যায় আবার প্রয়োজনে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে বীরভূমে প্রার্থী দিয়ে দেওয়ার ইঙ্গিত প্রকাশ্যে এনে ফেলায় ফ্রন্টের অন্দরে সমীকরণ আরও ঘোরালো হয়েছে।

সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম অবশ্য বলছেন, ‘‘গণতান্ত্রিক পথে আলোচনা করে বামফ্রন্টের ঐক্য রক্ষা করতে চাইছি, বামফ্রন্টের বাইরে বৃহত্তর ঐক্যও গড়ে তুলতে চাইছি। বিজেপি ও তৃণমূলের হাতে তামাক খাওয়া চলবে না, এই সাধারণ শর্ত মানলেই সকলে এই ঐক্যে শামিল হতে পারেন।’’ একই দিনে আইএসএফের চেয়ারম্যান নওসাদ ফের বলেছেন, ‘‘প্রথম দিনের মতো আমি আজও ডায়মন্ড হারবারে লড়াই করার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী। দলের রাজ্য কমিটিতে আলোচনা চলছে। আমাদের দল ছোট হতে পারে কিন্তু গণতন্ত্র আছে।’’ নওসাদের বক্তব্য, তাঁর প্রার্থী হওয়ার পক্ষে ও বিপক্ষে, দু’রকম মতই দলে আছে। তাই তাঁরা একটু সময় নিচ্ছেন। প্রার্থী হলে নওসাদকে সমর্থনে প্রস্তুত সিপিএম ও কংগ্রেস। নইলে সিপিএম সেখানে প্রার্থী দেবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement