(বাঁ দিকে) মহম্মদ সেলিম এবং (ডান দিকে) প্রয়াত সিপিএম নেতা অনিল বিশ্বাস।
বহু দিন হল, তিনি নেই। তবু তাঁর পৈতৃক ভিটে করিমপুরে পৌঁছে প্রয়াত অনিল বিশ্বাসকে স্মরণ করলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক তথা মুর্শিদাবাদ কেন্দ্রের বাম প্রার্থী মহম্মদ সেলিম। রাজ্যে বাম জমানার পতনের আগেই, সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম ঘটারও আগে, ২০০৬ সালের ২৬ মার্চ প্রয়াত হন সিপিএমের ‘চাণক্য’ অনিল বিশ্বাস। মাত্র ৬২ বছর বয়সে তিনি মারা না গেলে পাঁচ বছরের মধ্যে সিপিএম ক্ষমতাচ্যুত হত না বলেও এখনও অনেকের বিশ্বাস।
তৃণমূলের মহুয়া মৈত্র যে কেন্দ্র থেকে জিতে প্রথম বার বিধায়ক হয়েছিলেন, সেই করিমপুর নদিয়া জেলার অংশ হলেও বর্তমানে তা মুর্শিদাবাদ লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে। সেখানেই ১৯৪৪ সালে অনিল বিশ্বাসের জন্ম। সেই একতলা বাড়িতে এখনও তাঁর আত্মীয়স্বজন থাকেন। করিমপুরে অনিল পরিচিত ছিলেন ‘কেরু’ ডাকনামে। ভোটের প্রচারে সচেতন ভাবেই এ বার সেই নামটি সামনে আনছে সিপিএম।
সিপিএমের করিমপুর ১ এরিয়া কমিটির সম্পাদক সন্দীপক বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, “মহম্মদ সেলিম দাঁড়ানোর পর থেকেই বার বার প্রয়াত অনিল বিশ্বাসের প্রসঙ্গ চলে আসছে। কারণ তিনি যে পদে ছিলেন, আমাদের প্রার্থী বর্তমানে সেই পদেই রয়েছেন— এটা বললে সাধারণ ভোটারেরা খুব সহজে তাঁর গুরুত্ব বুঝছেন। এটা একটা বাড়তি সুবিধা।’’
যদিও সামান্য হলেও অস্বস্তির কাঁটা রয়েছে অনিল-কন্যা অজন্তা বিশ্বাসের সঙ্গে সিপিএমের ‘দূরত্ব’ নিয়ে। ২০২১ সালে তৃণমূলের মুখপত্র ‘জাগো বাংলা’য় উত্তর সম্পাদকীয় লিখে দলের রোষের মুখে পড়েছিলেন অজন্তা। দল তাঁকে সাসপেন্ড করে, তিনিও সে সময়ে সদস্যপদ নবীকরণ করাননি। এ বার লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল তাঁকে প্রার্থী করতে পারে বলেও জোর জল্পনা ছিল। তবে সিপিএমের করিমপুর এরিয়া কমিটির অন্যতম সদস্য শঙ্কর মণ্ডলের দাবি, “অজন্তা এখনও নিয়মিত আমাদের করিমপুরের পার্টির সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন। বিভ্রান্তির জায়গা নেই।”
তবে অনিল বিশ্বাসের নাম নিয়ে প্রচারের বিষয়টিকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে রাজি নয় তৃণমূল বা বিজেপি। করিমপুরের তৃণমূল বিধায়ক বিমলেন্দু সিংহ রায়ের বক্তব্য, “এই প্রচারে খুব একটা লাভ হবে বলে মনে হয় না।” বিজেপির করিমপুর বিধানসভা কেন্দ্রের আহ্বায়ক সুকেশ মণ্ডলেরও মত, “অনিল বিশ্বাসের কথা বলে প্রার্থীকে সহজে চেনানো যাবে হয়তো, তার বেশি কিছু হবে না।”