সিউড়ির সিপিএম কার্যালয়ে সূর্যকান্ত মিশ্র, রামচন্দ্র ডোমের সঙ্গে বোলপুরের প্রার্থী শ্যামলী প্রধান। নিজস্ব চিত্র।
বীরভূম লোকসভা আসনে লড়তে চেয়েছিল সিপিএম। কিন্তু জোটের স্বার্থে আসন ছেড়ে দেওয়া হয়েছে কংগ্রেসকে। রবিবার সিউড়িতে সিপিএমের জেলা কার্যালয়ে আয়োজিত জেলা কমিটির বৈঠক শেষে এমনই দাবি করলেন সিপিএমের পলিটব্যুরোর সদস্য তথা প্রাক্তন রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। পাশাপাশি তাঁর আশা, বাকি আসনগুলি নিয়ে জট অচিরেই কেটে যাবে। ।
সিপিএম সূত্রে খবর, এ দিনের বৈঠকে বীরভূম লোকসভা আসন কংগ্রেসকে ছেড়ে দেওয়া নিয়ে সিপিএমের জেলা নেতাদের একাংশের ক্ষোভ জানান। তাঁদের দাবি, জেলার দু’টি আসনের মধ্যে বীরভূমে দলের পরিস্থিতি অনেক ভাল। গত পঞ্চায়েতেও বীরভূমের অন্তর্গত রামপুরহাট মহকুমায় অনেক ভোট বেড়েছে। মুরারই ছাড়া বাকি সব ক’টি বিধানসভাই কংগ্রেসের তুলনায় প্রাপ্ত ভোটের নিরিখে অনেকটা এগিয়ে সিপিএম। তা সত্ত্বেও এই আসনটি কংগ্রেসকে ছেড়ে দেওয়ায় ‘ক্ষুব্ধ’ সিপিএম নেতাদের একাংশ।
সূর্যকান্ত বলেন, “বীরভূম আসনে আমরা লড়তে চাই। এতে কোনও সন্দেহ নেই। কংগ্রেসের নেতারাও জানেন, জেলার দু’টি আসনের মধ্যে বীরভূম আসনই আমাদের কাছে অগ্রগণ্য ছিল। কিন্তু কংগ্রেস প্রথমেই তালিকায় এই আসন দিয়েছ। ওঁরাও জোর করছিলেন এই আসনের জন্য। এই একটা আসনের জন্য তো আর জোট ভেঙে যেতে পারে না। আমাদের লড়াই বিজেপি আর তৃণমূলের বিরুদ্ধে। তাই বীরভূমে কংগ্রেস প্রার্থী দিলেও জেলার দু’টি আসনেই আমরা সমান ভাবে লড়ব।”
একই সঙ্গে এ দিন কেন্দ্রীয় এজেন্সির ব্যবহার নিয়েও সরব হন সূর্যকান্ত। তিনি বলেন, “যে ভাবে বিজেপি কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলিকে ব্যবহার করছে, তা মেনে নেওয়া যায় না। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী বিজেপি বিরোধী জোটে আছেন, সে জন্যই এই পদক্ষেপ।” যদিও বোলপুরে রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহের বাড়িতে ইডির তল্লাশি প্রসঙ্গে সূর্যকান্ত বলেন, “এগুলির মধ্য দিয়ে তৃণমূল আর বিজেপির দর কষাকষি চলছে। রাজ্যে কাকে কতগুলি আসন ছাড়বে তা ঠিক করতেই চাপ দেওয়া হচ্ছে। ধরতে হলে মাথা ধরতে হবে। কিন্তু সেখানে তো এজেন্সিদের হাত যায় না।”
এই প্রসঙ্গে তৃণমূলের জেলা সহ সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, “সূর্যকান্ত মিশ্র দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতি করছেন। উনি খুব ভাল করেই জানেন গোটা দেশে এখন কী ধরণের রাজনীতি চলছে। উনি হয়তো সেটা স্বীকার করতে চাইছেন না।” বিজেপির বীরভূম সাংগঠনিক জেলার সহ সভাপতি বাবন দাস বলেন, “সিপিএমের কথায় তো আর এজেন্সি চলবে না। শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলা আদালতের তত্ত্বাবধানে চলছে, এখানে এজেন্সি কী ভাবে কাজ করবে, তা আদালতই ঠিক করছে৷ তৃণমূলের সবাই জেলে চলে গেলেও সিপিএম যে তিমিরে আছে, সেই তিমিরেই থাকবে।”
কংগ্রেসের জেলা কার্যকরী সভাপতি চঞ্চল চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বীরভূম লোকসভা আসনের জন্য আমরা দাবি জানিয়ে ছিলাম। তবে কে কোন আসন পাবে, তা উপর তলা থেকে ঠিক করা হয়েছে। এখন বীরভূম আসন কংগ্রেসকে দেওয়া হয়েছে, সেখানে বামেদের সমর্থন নিয়ে আমরা লড়াই করব। অন্য দিকে, বোলপুর লোকসভা কেন্দ্রে বাম প্রার্থীকে জেতানোর জন্য আমাদের কর্মীরা সব রকম চেষ্টা করবেন।’’