—প্রতীকী চিত্র।
আলাপ-আলোচনা এখনও চলছে। ফলে, উলুবেড়িয়া লোকসভা কেন্দ্রে বাম-কংগ্রেসের মধ্যে কাদের প্রার্থীর ভাগ্যে শিকে ছিঁড়বে তা এখনও ঘোষণা হয়নি। এই পরিস্থিতিতে দু’পক্ষের নিচুতলার কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে যেমন বিভ্রান্তি বাড়ছে, তেমনই অধৈর্যও হয়ে পড়ছেন তাঁরা। তৃণমূল ও বিজেপি— দু’দলই তাদের প্রার্থী ঘোষণা করে প্রচারে নেমে পড়েছে। কিন্তু বাম-কংগ্রেস কর্মীরা কার্যত হাত গুটিয়ে বসে আছেন। আইএসএফ জানিয়েছে, এখন উলুবেড়িয়া আসন নিয়ে তাদের সঙ্গে বামেদের এখন আর কোনও আলোচনা চলছে না।
যদিও জেলায় সিপিএম নেতৃত্বের একটা বড় অংশ দাবি করছেন, কোনও সমস্যা নেই। উলুবেড়িয়ায় দলের সব স্তরের কর্মীদের নির্বাচন সংক্রান্ত প্রাথমিক কাজ গুছিয়ে রাখতে বলা হয়েছে। প্রার্থী বাম-কংগ্রেস বা আইএসএফ— যাদেরই হোক না কেন, তাঁকে জেতানোর জন্য সবাইকে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। এ বিষয়ে কোনও বিভ্রান্তির অবকাশ নেই।
কংগ্রেসের জেলা নেতাদের একটা বড় অংশের আবার দাবি, উলুবেড়িয়া আসনে তাঁরাই প্রার্থী দিচ্ছেন। তাঁদের বক্তব্য, জোটের কাছে কংগ্রেস মোট ১৫টি আসন দাবি করেছে। তার মধ্যে আটটিতে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়েছে। বাকি আসনগুলিতেও দলের প্রার্থীদের নাম শীঘ্রই ঘোষণা করা হবে। তার মধ্যে উলুবেড়িয়া আছে।
জেলা কংগ্রেসের এক নেতা বলেন, ‘‘আইএসএফ আমাদের পাওয়া তিনটি আসনে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে। তারা সেই তিনটি আসনে প্রার্থী প্রত্যাহার না করলে আইএসএফের সঙ্গে সমঝোতার কোনও প্রশ্নই নেই বলে দলের রাজ্য নেতারা আমাদের জানিয়ে দিয়েছেন।’’ উলুবেড়িয়া আসনটি কংগ্রেসকে ছাড়া হচ্ছে কি না, এ নিয়ে জেলা সিপিএম নেতারা মুখ খুলতে চাননি। আইএসএফ আলাদা করে প্রার্থী দেবে কি না, সে ব্যাপারেও কোনও উত্তর দেননি ওই দলের নেতারা।
দাবিমতো কংগ্রেসই যদি এই আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে তা হলে বাম শরিক ফরওয়ার্ড ব্লককে তারা কতটা পাশে পাবে, তা নিয়েও সংশয় দেখা দিয়েছে। কারণ, ফরওয়ার্ড ব্লকের এক জেলা নেতা জানিয়েছেন, তাঁদের দল এই মুহূর্তে আইএসএফ এবং কংগ্রেসের থেকে সমদূরত্ব বজায় রাখার কথা বলছে। ওই নেতার কথায়, ‘‘দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সাবেক বামফ্রন্টে যারা ছিল, তাদের নিয়েই জোট থাকুক। তার বাইরে কোনও জোটে তারা শামিল হবে না।’’ হাওড়া সদরের সিপিএম প্রার্থী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে তাঁরা এই নীতির উপরে ভিত্তি করেই প্রচার করছেন বলে ফরওয়ার্ড ব্লকের এই নেতা জানান।
এই পরিস্থিতিতে উলুবেড়িয়ায় তৃণমূল এবং বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক কর্মীদের এখনও মাঠে-ময়দানে দেখা যাচ্ছে না। গ্রামীণ জেলা তৃণমূল সভাপতি অরুণাভ সেন বলেন, ‘‘তৃণমূল ও বিজেপি বিরোধীতার নাম করে বাম, কংগ্রেস ও আইএসএফ তলে তলে বিজেপিকে মদত দিয়ে কী ভাবে তৃণমূলকে বিপাকে ফেলা যায়, সেই চেষ্টা করছে। তাই তাদের প্রার্থী ঘোষণায় দেরি হচ্ছে। তবে, এ ভাবে তৃণমূলকে বিপাকে ফেলা যাবে না।’’ উলুবেড়িয়ায় বিজেপি প্রার্থী তথা দলের গ্রামীণ জেলা সভাপতি অরুণ উদয় পাল চৌধুরী বলেন, ‘‘এখানে বাম-কংগ্রেস অপ্রাসঙ্গিক।’’