মনোজ টিগ্গা। — ফাইল চিত্র।
‘‘লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি এ রাজ্যে ২৫টির বেশি আসনে জয়ী হলে ২০২৬ সাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে না। তার আগেই বিজেপি আন্দোলন করে ফেলে দেবে রাজ্যের তৃণমূল সরকারকে’’— মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া পরের দিন, শনিবার আলিপুরদুয়ারের গেরুয়া শিবিরের প্রার্থী তথা রাজ্য বিধানসভায় বিজেপির মুখ্য সচেতক মনোজ টিগ্গার এমন মন্তব্য ঘিরে ছড়াল বিতর্ক। টিগ্গার এই মন্তব্যের বিরুদ্ধে কড়া আক্রমণ শানিয়েছে তৃণমূল।
এমন মন্তব্যের ঠিক পরেই, শনিবার টিগ্গাকে আলিপুরদুয়ার শহরের একটি চায়ের দোকানে আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলালের সঙ্গে আড্ডা দিতে দেখা যায়। বিজেপির টিকিটে জয়ী সুমন কয়েক মাস আগেই তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। চায়ের আড্ডায় এ দিন সুমনের কাছেও নিজের পক্ষে ভোট চান টিগ্গা।
আলিপুরদুয়ার কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী হিসেবে শুক্রবারই মনোনয়নপত্র জমা দেন টিগ্গা। এ দিন সকালে বৃষ্টির মধ্যেই নিজের বিধানসভা এলাকা মাদারিহাটের বীরপাড়ায় প্রচার চালান। দুপুরে যান বিজেপির আলিপুরদুয়ার জেলা পার্টি অফিসে। সেখানেই টিগ্গা বলেন, “লোকসভা নির্বাচনে এ রাজ্যে আমাদের দল ২৫-২৬টা আসনে জয়ী হলে পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল সরকার ২০২৬ সাল পর্যন্ত টিকবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন রয়েছে। কারণ, লোকসভা নির্বাচনে এ রাজ্যে ২৬টা আসনে বিজেপি জয়ী হওয়া মানে, বাংলার মানুষের তৃণমূলের বিপক্ষে রায় দেওয়া। এ রাজ্যে বিজেপি ২৫টার উপরে আসন পেলেই মানুষ বাংলার তৃণমূল সরকারকে ফেলে দেবেন। সে জন্য ২০২৬ সাল পর্যন্ত অপেক্ষা হবে না। সে ক্ষেত্রে মানুষের রায়কে হাতিয়ার করে বিজেপি আন্দোলন করবে।”
তৃণমূল নেতা তথা শিলিগুড়ি পুরসভার মেয়র গৌতম দেব পাল্টা বলেন, “আলিপুরদুয়ারের মনোজ টিগ্গা আসলে সংবিধানের নিয়ম জানেন না। সে জন্যই এমন অবাস্তব কথা বলছেন। আসলে এ বারের নির্বাচনে অনেক ভোটে হারবেন বুঝেই তাঁর মুখে এমন কথা শোনা যাচ্ছে।”
বিজেপির জেলা পার্টি অফিসে বসে এমন বক্তব্যের পরেই আলিপুরদুয়ার শহরে একটি চায়ের দোকানে যান টিগ্গা। আগেই সেই দোকানে ছিলেন বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়া আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলাল। পাশাপাশি বসে দু’জনকে আড্ডা দিতেও দেখা যায়। দুই প্রতিপক্ষের কাদের কেমন প্রচার চলছে তা নিয়েও আলোচনা হয়। পরে টিগ্গা বলেন, “এক জন প্রার্থী হিসেবে সবার থেকে ভোট চাওয়ার অধিকার আমার রয়েছে। সুমনদার থেকেও ভোট চেয়েছি। আমি আশাবাদী, সুমনদা আমাকে ভোট দেবেন।” সম্প্রীতির বার্তা দিয়ে সুমন কাঞ্জিলাল বলেন, “মানুষ নিজে বিচার করে কাকে ভোট দেবেন বা দেবেন-না সেটা ঠিক করবেন। নির্বাচনের মুখেও দলমত নির্বিশেষে এক সঙ্গে বসে সকলের গল্প করা বা আড্ডা দেওয়াটাও কিন্তু গণতন্ত্রের পক্ষে একটা ভাল দিক। যেটা আলিপুরদুয়ারে বজায় রয়েছে।”