প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি: পিটিআই।
রাজস্থান হোক বা তামিলনাড়ু, কর্নাটক হোক বা মহারাষ্ট্র— নরেন্দ্র মোদী যেখানেই যে দিন প্রচারে যাচ্ছেন, সে দিন সকালে কংগ্রেস প্রধানমন্ত্রীকে সেই রাজ্য নিয়ে প্রশ্ন করছে। মোদী বৃহস্পতিবার কোচবিহারে জনসভা করতে যাওয়ার আগে ঠিক একই ভাবে কংগ্রেস একগুচ্ছ প্রশ্ন তুলতে চলেছে।
সূত্রের খবর, তৃণমূলের সঙ্গে সমন্বয় রেখেই কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্বের তরফে নরেন্দ্র মোদীকে প্রশ্ন করা হবে। পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূলের আসন সমঝোতা না হলেও মোদীকে নিশানা করার ক্ষেত্রে আপাতত সমন্বয় রেখেই এগোচ্ছে দুই দল। ফলে তৃণমূল যে সব বিষয়ে বৃহস্পতিবার মোদীকে নিশানা করতে চলছে, কার্যত একই সুরে কংগ্রেসও মোদীকে প্রশ্ন করবে।
কংগ্রেস সূত্রের খবর, নরেন্দ্র মোদী বৃহস্পতিবার কোচবিহারে জনসভা করতে যাওয়ার আগে কংগ্রেস মূলত চারটি প্রশ্ন ছুড়বে। এক, পশ্চিমবঙ্গে ১০০ দিনের কাজ ও প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার টাকা আটকে রেখে কেন আমজনতাকে বঞ্চিত করা হচ্ছে? দুই, প্রধানমন্ত্রী ২০২১-এ বিধানসভা নির্বাচনের সময় পশ্চিমবঙ্গে গিয়েছিলেন। এখন লোকসভা ভোটের সময়ে ঘন ঘন প্রচারে যাচ্ছেন। মাঝের তিন বছর তিনি কেন বাংলায় যাননি? তিন, শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে যে সব দুর্নীতির মামলা ছিল, বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরেই তার তদন্ত গুটিয়ে গেল কেন? চার, কলকাতা হাই কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি, বর্তমানে বিজেপি প্রার্থী অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে মহাত্মা গান্ধী ও নাথুরাম গডসের মধ্যে বেছে নিতে বলা হলে তিনি বলেছিলেন, এ নিয়ে ভাবতে হবে। এ নিয়ে নরেন্দ্র মোদীর কী বক্তব্য?
প্রসঙ্গত, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আজই বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী বাংলায় আসার আগে যেন ১০০ দিনের কাজ ও আবাস যোজনা নিয়ে শ্বেতপত্র সঙ্গে নিয়ে যান। কংগ্রেসও বৃহস্পতিবার একই বিষয়ে প্রশ্ন তুলবে।
কংগ্রেস সূত্রের অবশ্য দাবি, রাহুল গান্ধী ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রার সময়ও রাজ্যের বকেয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। কারণ, সাধারণ মানুষ তাঁর কাছে এ নিয়ে সমস্যার কথা জানিয়ে স্মারকলিপি দিয়েছিলেন। এর ফলে কংগ্রেস, তৃণমূলের সুর মিলে গেলেও কংগ্রেস নেতৃত্বের দাবি, তৃণমূলের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গে আসন সমঝোতা না হলেও তৃণমূল ‘ইন্ডিয়া’ মঞ্চের শরিক। যার প্রমাণ হল, গত রবিবার দিল্লিতে রামলীলা ময়দানে ‘ইন্ডিয়া’র জনসভায় তৃণমূল হাজির থেকেছে।
কংগ্রেস সূত্রের খবর, যে সব রাজ্যে ‘ইন্ডিয়া’র শরিক দলগুলির সঙ্গে কংগ্রেসের আসন সমঝোতা হয়েছে, সেখানে রাজ্য স্তরে যৌথ প্রচার হবে। পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে তৃণমূলের বদলে ‘ইন্ডিয়া’র অন্য শরিক বামেদের সঙ্গে কংগ্রেসের আসন সমঝোতা হয়েছে। ফলে রাজ্য স্তরে প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব ও বাম নেতৃত্ব যৌথ প্রচার করবেন। স্বাভাবিক নিয়মেই সেই প্রচারে বিজেপির পাশাপাশি তৃণমূলকেও নিশানা করা হচ্ছে।
কিন্তু বাংলায় প্রচারে কংগ্রেসের শীর্ষ নেতারা যোগ দেবেন কি না, তা নিয়ে এখনও ধোঁয়াশা রয়েছে। কারণ, পশ্চিমবঙ্গে প্রচারে গিয়ে কংগ্রেসের জাতীয় নেতারা তৃণমূলকে আক্রমণ করলে ‘ইন্ডিয়া’য় ফের সমস্যা তৈরি হবে। আবার আক্রমণ না করলেও কংগ্রেসের রণকৌশল নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হতে পারে।