কমল নাথ। — ফাইল চিত্র।
বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন না কমল নাথ। থাকছেন দলেই। রবিবার একটি সংবাদমাধ্যমের কাছে দাবি করলেন কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জিতেন্দ্র সিংহ। একই সুর শোনা গিয়েছে মধ্যপ্রদেশের কংগ্রেস সভাপতি জিতু পাটোয়ারির গলায়।
বিজেপিতে যোগদানের জল্পনার মাঝেই এখন দিল্লিতে রয়েছেন কমল। বিজেপির একটি সূত্র বলছে, এখনও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা হয়নি কমলের। তাঁর বিজেপিতে যোগদানের জল্পনা উড়িয়েছেন জিতু। মধ্যপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের হারের পর রাজ্য সভাপতি পদ থেকে কমলকে সরিয়ে জিতুকে বসানো হয়েছে। কংগ্রেসের একাংশ মনে করছে, সে কারণে দল ছাড়তে চাইছেন একদা গান্ধী পরিবার ঘনিষ্ঠ নেতা। যদিও জিতু জল্পনা উড়িয়ে দিয়েছেন। জানিয়েছেন, সবই ‘সংবাদমাধ্যমের অপব্যবহার’। জিতেন্দ্রের সুরেই তিনি বলেন, ‘‘কমল নাথের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে। আমি ওঁর সঙ্গে কথা বলেছি। উনি জানিয়েছেন, এ সবই জল্পনা। তিনি এক জন কংগ্রেস সদস্য এবং তা-ই থাকবেন। তাঁর শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত কংগ্রেসের মতাদর্শই মেনে চলবেন। এটা ওঁর নিজের চিন্তাভাবনা। উনি নিজেই জানিয়েছেন।’’
এ দিকে কমল রবিবারও একই কথা বলেছেন, যা তিনি শনিবার বলেছিলেন। সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে কমল বলেন, ‘‘আমি গতকালও আপনাদের বলেছি, এই ধরনের কিছু ঘটলে আপনাদেরই প্রথমে জানাব। আমি কারও সঙ্গে কোনও কথা বলিনি।’’ তবে শনিবার যে ভাবে তিনি বিজেপিতে যোগদানের জল্পনা উড়িয়েছিলেন, রবিবার ততটা কড়া হয়ে ওড়াননি। শনিবার ছেলে নকুন নাথকে নিয়ে দিল্লি পৌঁছে তিনি বলেছিলেন, ‘‘এটা নাকচ করার বিষয় নয়। আপনারা বলছেন, আপনারাই উত্তেজিত হচ্ছেন। এ পক্ষ বা ও পক্ষ, আমি উত্তেজিত হচ্ছি না। কিন্তু এ রকম কিছু হলে আমি প্রথম আপনাদেরই জানাব।’’ মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মুখে যাই বলুন, তাঁর ছেলে নকুল সমাজমাধ্যমের প্রোফাইল থেকে কংগ্রেসের পরিচয় মুখে দেওয়ার পর জল্পনা থেকেই যাচ্ছে।
কমল কেন কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যাওয়ার চেষ্টা করছেন? দলের একাংশ মনে করছেন, মধ্যপ্রদেশ থেকে কমলকে রাজ্যসভার প্রার্থী করেনি কংগ্রেস। সেই রাগেই এ সব করছেন। যদিও জিতু সেই দাবি মানেননি। তিনি জানিয়েছেন, কমল নিজেই রাজ্যসভার প্রার্থীর জন্য অশোক সিংহের নাম প্রস্তাব করেছেন। অশোক মধ্যপ্রদেশে কংগ্রেসের কোষাধ্যক্ষ। বৃহস্পতিবার মনোনয়ন পেশ করেছেন।
দলের অন্য একটি অংশ মনে করছেন, গত নভেম্বরে মধ্যপ্রদেশে বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের ভরাডুবির পর থেকে দলে কোণঠাসা হচ্ছিলেন কমল। এ রকম অভিযোগ উঠেছে। এর পর প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি পদ থেকে কমলকে সরিয়ে বসানো হয়েছিল তাঁর ‘বিরোধী’ হিসাবে পরিচিত জিতুকে। এমনকি, বিরোধী দলনেতার পদও তাঁকে দেয়নি কংগ্রেস হাইকমান্ড। এর নেপথ্যে দিগ্বিজয়ের হাত দেখেছেন কমলের অনুগামীরা। সেই আবহে কমলের ছেলে সমাজমাধ্যমে নিজের প্রোফাইল থেকে কংগ্রেসের পরিচয় মুছে দেন। এর পরেই কংগ্রেসের একটা মনে করতে শুরু করে যে, বিজেপিতে যাচ্ছেন কমল। যদিও শনিবার দিল্লি পৌঁছে রবিবার পর্যন্ত তাঁর বিজেপিতে যোগদানের খবর প্রকাশ্যে আসেনি। এর পরেই মধ্যপ্রদেশ কংগ্রেসের একটা অংশ মনে করছে, বিজেপি হয়তো ‘কাঙ্ক্ষিত’ পদ দিতে চাইছে না কমলকে। সে কারণে চলছে দর কষাকষি। অন্য দিকে, কংগ্রেসের ক্রমাগত জল্পনা উড়িয়ে কমলের জন্য দরজা দলে খোলাই রাখছে বলে মনে করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতি কমল কী করেন, সেটাই দেখার।