—প্রতীকী ছবি।
দার্জিলিঙের সঙ্গে এ বার লাদাখ। সম্প্রতি সেখানে পরিবেশপ্রেমী, শিক্ষাবিদ সোনম ওয়াংচুক অনশনে বসেছিলেন। লাদাখের দাবিদাওয়া নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনিই লাদাখের জন্য ষষ্ঠ তফসিলের দাবি তুলেছেন। সেই সূত্র ধরেই দার্জিলিঙের জন্যেও ষষ্ঠ তফসিলের দাবি তোলা হচ্ছে ভোটে। সোনম ওয়াংচুকের বক্তব্য ভিডিয়ো করে লাদাখ এবং দার্জিলিঙের দাবিকে এক পঙক্তিতে বসিয়ে কংগ্রেস প্রার্থী মুনীশ তামাংয়ের প্রচারে ব্যবহার শুরু হল। হামরো পার্টির সভাপতি অজয় এডওএয়ার্ড সেই প্রচার শুরু করেছেন। একসময় জিএনএলএফে থাকাকালীনও একাধিকবার অজয় সুবাস ঘিসিংয়ের পথে হেঁটে ষষ্ঠ তফসিলের দাবি তুলতেন।
ওয়াংচুকের অনশনে কিছুদিন আগেই উপস্থিত হয়েছিলেন অজয় এবং মুনীশ। পরিবেশকে সামনে রেখে এই আন্দোলনকে দার্জিলিং থেকে গিয়ে অজয়েরা সমর্থন করেছিলেন। সেখান থেকে দিল্লি গিয়ে দু’জন কংগ্রেস শিবিরে যোগ দেন। অজয় ‘ইন্ডিয়া’ জোটে নাম লেখান। মুনীশ গোর্খা পরিসঙ্ঘ ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দিয়ে প্রার্থী হন। অজয় বলেছেন, ‘‘দার্জিলিং এবং লাদাখের দাবি একই। দুই জায়গাতেই সরকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। কোথাও কাজ হয়নি। তাই লাদাখের পাশাপাশি দার্জিলিঙের ষষ্ঠ তফসিলের দাবিতে কংগ্রেসকে আমরা ভোট দিতে বলছি।’’
হামরো পার্টির তরফে যে ভিডিয়ো ছাড়া হয়েছে তাতে ওয়াংচুককে বলে শোনা যায়, ২০১৯ সালে সরকার লাদাখের জন্য প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। ২০২৪ সালের ভোট এসে গেল। অথচ দাবিপূরণ হল না। তাই বুঝেশুনে প্রতিটি ভোট দিতে হবে। এই সূত্র ধরে কংগ্রেস প্রার্থীও বলেছেন, ‘‘গত ১৫ বছরে পাহাড়ে শুধুমাত্র প্রতিশ্রুতি আর আশ্বাস দিয়ে গিয়েছে বিজেপি। ষষ্ঠ তফসিল, স্থায়ী সমাধান তো দূরের কথা, ১১ জনজাতির দাবি মেটেনি। কংগ্রেস সরকার এলে লাদাখ তো বটেই, দার্জিলিং নিয়েও কাজ হবে। কারণ, আজ অবধি পাহাড়ে যা হয়েছে তা সবই কংগ্রেসের আমলে হয়েছে।’’
দলীয় সূত্রের খবর, পাহাড়ের ষষ্ঠ তফসিলের দাবি এবং একে ঘিরে সরকারি প্রক্রিয়া এখন ঠান্ডা ঘরে। সুবাস ঘিসিংয়ের তোলা এই দাবি সরকার মেনে নিয়ে জনজাতিদের তফসিলি স্বীকৃতি থেকে নানা সরকারি সুযোগ-সুবিধা আসতে পারে। তেমনিই, এলাকাটি আলাদা ভাবে সরকারি খাতায় চিহ্নিত হত। তবে ২০১১ সালের পর জিটিএ হতেই এই দাবি পিছিয়ে গিয়েছে। নতুনভাবে পাহাড়ের স্থায়ী রাজনৈতির সমাধান, কেন্দ্র শাসিত অঞ্চল থেকে আলাদা রাজ্য সব দাবি সামনে এসেছে। গত তিনটি লোকসভা ভোটে বিজেপি পাহাড়ের দাবি নিয়ে একাধিক আশ্বাস দিলেও কিছু করেনি বলে কংগ্রেসের অভিযোগ।
এই অবস্থায় প্রচার শেষের ২৪ ঘণ্টা আগে শিলিগুড়িতে সিপিএম, কংগ্রেস, হামরো পার্টির নেতারা এক যোগে প্রার্থীকে সামনে রেখে মিছিল করেছেন। অশোক ভট্টাচার্য, শঙ্কর মালাকার, অজয় এডওয়ার্ডেরা একসঙ্গে মিছিলের নেতৃত্ব দেন।