— প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
মধ্যপ্রদেশের ইনদওর লোকসভা কেন্দ্রে কংগ্রেস প্রার্থী আচমকাই তুলে নিয়েছিলেন মনোনয়নপত্র। সেখানেই শেষ নয়। ‘কাটা ঘায়ে নুনের ছিটে’ দিয়ে যোগ দিয়েছিলেন বিজেপিতে। সেই বদলাই এখন ইনদওরে নিতে চলেছে কংগ্রেস। প্রার্থী নেই তো কী! বিজেপিকে ‘শিক্ষা’ দিতে নোটায় ভোট দেওয়ার জন্য প্রচার চালাচ্ছে কংগ্রেস। বিজেপির দাবি, ভোটারদের এ ভাবে প্ররোচনা দেওয়া ‘অপরাধ’।
১৯৮৯ সাল থেকেই মধ্যপ্রদেশের ইনদওর লোকসভা কেন্দ্রে জিততে পারেনি কংগ্রেস। তবে এই প্রথম সেখানে তারা কোনও প্রার্থীও দিতে পারল না। অন্য দিকে, বিদায়ী সাংসদ শঙ্কর লালওয়ানিকেই আবার প্রার্থী করেছে বিজেপি। অক্ষয়কান্তি বামকে প্রার্থী করেছিল কংগ্রেস। মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন প্রার্থিপদ প্রত্যাহার করে নেন শঙ্কর। তার পর যোগ দেন বিজেপিতে। কংগ্রেস ওই আসনে নতুন প্রার্থী দেওয়ার চেষ্টা করে। মধ্যপ্রদেশ হাই কোর্টে তা নিয়ে পিটিশনও জমা পড়ে। কিন্তু হাই কোর্ট তা বাতিল করে দেয়। অগত্যা এখন নোটাকেই নিজেদের ‘প্রার্থী’ করে নিয়েছে কংগ্রেস। ‘নোটা’র হয়েই সারছে প্রচার।
সোমবার, চতুর্থ দফায় ভোট ইনদওরে। বিজেপি ছাড়াও ওই আসনে আরও ১৩টি জন প্রার্থী রয়েছেন। রাজ্য কংগ্রেস সভাপতি জিতু পাটওয়ারি জানিয়েছেন, কোনও প্রার্থীকেই সমর্থন করবে না তাঁর দল। বদলে জনগণকে নোটায় ভোট দেওয়ার ডাক দিয়েছেন তাঁরা। এক্স (সাবেক টুইটার)-এ আর এক কংগ্রেস নেতা তথা প্রাক্তন সাংসদ সজ্জন বর্মা লিখেছেন, ‘‘ইনদওরের মানুষের কাছে আবেদন করছি, কিছু লোক আমাদের প্রার্থীকে চুরি করেছেন। তাঁরা আপনাদের ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করেছেন। ওঁদের শিক্ষা দিতে চাইলে নোটায় ভোট দিন। গণতন্ত্রকে রক্ষা করুন।’’ মধ্যপ্রদেশের প্রবীণ কংগ্রেস নেত্রী শোভা ওঝা জানিয়েছেন, গত বিধানসভা এবং পুর নির্বাচনে ইনদওরবাসী বিজেপিকে জিতিয়েছিল। এ বার নোটায় ভোট দিয়ে বিজেপিকে শিক্ষা দেওয়া উচিত।
মধ্যপ্রদেশের বিজেপি সভাপতি ভিডি শর্মা জানিয়েছেন, মানুষকে নোটায় ভোট দিতে বলা গণতন্ত্রে ‘অপরাধ’। ইনদওর থেকে আট বার জিতেছিলেন বিজেপি নেত্রী সুমিত্রা মহাজন। স্পিকার হয়েছিলেন। সুমিত্রাও মনে করেন, কংগ্রেস প্রার্থী শেষ মুহূর্তে মনোনয়ন তুলে নিয়ে ঠিক করেননি। তাঁর কথায়, ‘‘প্রধান বিরোধী দলের প্রার্থী মনোনয়ন তুলে নেওয়ায় বেশ অবাকই হয়েছি। এ রকম হওয়া উচিত ছিল না। এ রকম করার দরকারও ছিল না। কারণ, ইনদওরে বিজেপিই জিতবে।’’ তিনি এ-ও জানিয়েছেন, অনেকেই তাঁকে ফোন করে জানিয়েছেন, তাঁরা নোটায় ভোট দিতে পারেন। কারণ, বিজেপি যা করেছে, তাতে তারা রেগে গিয়েছেন। সুমিত্রার কথায়, ‘‘আমি বলতে চাই, কংগ্রেসের ওই প্রার্থীর মনোনয়ন তুলে নেওয়ার বিষয়ে বিজেপির কোনও ভূমিকা নেই। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে এখনও বিজেপি নিজের নীতিতে অটল। তাই আপনারা নোটায় ভোট দেবেন না। বিজেপিকে ভোট দিন।’’
২০১৩ সালে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ইভিএমে নোটা বোতাম যোগ করা হয়েছিল। নির্বাচনে কোনও কেন্দ্রে কোনও প্রার্থীকেই পছন্দ না হলে নোটায় ভোট দিতে পারেন ভোটাররা। গত মাসেই নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশিকা দিয়েছে সু্প্রিম কোর্ট। তাতে জানানো হয়েছে, কোনও কেন্দ্রে নোটায় বেশি ভোট পড়লে সেই কেন্দ্রের ভোট বাতিল করা হবে। একটি পিটিশনের পরিপ্রেক্ষিতে এই কথা জানিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট।