—প্রতীকী চিত্র।
সরকারি ভাবে ঘোষণা না হলেও, আসানসোল কেন্দ্রে বিদায়ী সাংসদকেই ফের প্রার্থী করার কথা প্রাথমিক ভাবে জানিয়ে দিয়েছে তৃণমূল। শনিবার প্রার্থী ঘোষণা করে দেয় বিজেপিও। যদিও রবিবার সেই প্রার্থী সরে দাঁড়ানোর কথা জানিয়েছেন। প্রার্থী নিয়ে দুই দলে যখন তৎপরতা রয়েছে, বাম-কংগ্রেসের মধ্যে তা এখনও দেখা যায়নি এই কেন্দ্রে। দুই দলের নেতৃত্ব সূত্রে খবর, প্রাথমিক ভাবে আসন সমঝোতার কথা রয়েছে। তবে আসানসোলে তাদের মধ্যে কোন দল প্রার্থী দেবে, তা নিশ্চিত নয়। আসানসোল কেন্দ্রের জন্য প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ শুরু হয়েছে বলে দাবি দু’দলেরই জেলা নেতৃত্বের। নিজেদের প্রার্থী চেয়ে দু’পক্ষই জোরালো দাবি তুলবেন, সে কথা জানিয়ে দিয়েছেন দু’দলের জেলার নেতারাই।
শত্রুঘ্ন সিনহাকেই ফের আসানসোলে প্রার্থী করার কথা ভেবেছেন দলীয় নেতৃত্ব, দাবি তৃণমূল সূত্রের। কেন্দ্র জুড়ে ইতিমধ্যে প্রস্তুতিতেও নেমে পড়েছে তৃণমূল। শনিবার প্রার্থী হিসেবে পবন সিংহের নাম ঘোষণার পরে বিজেপি কর্মীরাও প্রচার শুরু করেছিলেন। তবে রবিবার পবন প্রার্থী হতে চান না জানানোয় কিছুটা বিব্রত তাঁরা। এই পরিস্থিতিতে, প্রার্থী নিয়ে ভাবনাচিন্তাও তাঁরাও শুরু করেছেন বলে কংগ্রেস নেতৃত্বের দাবি। দলের জেলা সভাপতি দেবেশ চক্রবর্তীর কথায়, ‘‘আসানসোল কেন্দ্রে আমরাই প্রার্থী দিতে চাই। সে কথা উচ্চ নেতৃত্বকে জানিয়েছি। সম্ভাব্য তিন জনের নামের তালিকা জমা দেওয়া হবে।’’ তাঁর দাবি, বুথ স্তরে কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম নিয়ে আলোচনা চলছে। কোর কমিটি তৈরি করে ভোটে লড়াইয়ের রূপরেখাও তৈরি করা হয়েছে। শুধু নেতৃত্বের নির্দেশের অপেক্ষা।
আসন নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনও হয়নি জানিয়ে সিপিএমের জেলা সম্পাদক গৌরাঙ্গ চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘এখানে প্রার্থী বামেরাই দেবে।’’ তাঁর আরও দাবি, অতীতে সব ক’টি ভোটের ফলে এই শিল্পাঞ্চলে কংগ্রেসের থেকে বামেদের অনেকটাই ভাল। পরিসংখ্যানের নিরিখে বামেদের এই কেন্দ্রে প্রার্থী দেওয়া উচিত। তিনি আরও মনে করছেন, গত কয়েকটি ভোটে বামেদের একাংশের ভোট বিজেপিতে গিয়েছিল। এ বার তা ফের বামেদের দিকে ফিরছে। কাকে প্রার্থী করা যাবে, সে বিষয়েও প্রাথমিক কথাবার্তা শুরু হয়েছে বলে দাবি সিপিএম সূত্রের।
২০১৪ সালের লোকসভা ভোটে আসানসোলে বাম-কংগ্রেস সমঝোতায় কংগ্রেসের হয়ে প্রার্থিপদ পেয়েছিলেন দলের তৎকালীন সর্বভারতীয় যুব নেত্রী ইন্দ্রাণী মিশ্র। তিনি এখন তৃণমূলের পুরপ্রতিনিধি। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বাম ও কংগ্রেস আলাদা প্রার্থী দেয়। সে বার সিপিএম প্রার্থী গৌরাঙ্গ চট্টোপাধ্যায় কংগ্রেস প্রার্থী বিশ্বরূপ মণ্ডলের চেয়ে প্রায় ৭০ হাজার বেশি ভোট পানন। ২০২২ সালে উপনির্বাচনেও সিপিএম প্রার্থী পার্থ মুখোপাধ্যায় কংগ্রেসের প্রসেনজিত পুইতন্ডির চেয়ে কয়েক হাজার ভোট বেশি পেয়েছিলেন।
কংগ্রেসের জেলা সভাপতি দেবেশের যদিও দাবি, সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহে তৃণমূলের একটি বড় অংশ দলের প্রতি ক্ষুব্ধ। বিকল্প হিসেবে ওই অংশের নেতা-কর্মীরা কংগ্রেসের দিকে ঝুঁকছেন। এর সঙ্গে রাহুল গান্ধীর ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’ কর্মসূচিরও প্রভাব পড়েছে। ফলে, এখন কংগ্রেস প্রার্থী দিলে সুফল ঘরে তুলতে পারবে।