—প্রতীকী চিত্র।
পরপর দু’দিন বিজেপির দুই সভা থেকে সন্দেশখালি-কাণ্ডে তৃণমূলকে নিশানা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রবিবার জামুড়িয়ায় এক কর্মিসভায় আসানসোলের তৃণমূল সাংসদ শত্রুঘ্ন সিন্হা প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে পাল্টা প্রশ্ন ছোড়েন: ‘‘মণিপুরের ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী লজ্জা পান?’’ এ দিনই অন্ডালে দলের প্রচারে এসে সন্দেশখালির ঘটনা নিয়ে তৃণমূলকে আক্রমণ করেন শালতোড়ার বিজেপি বিধায়ক চন্দনা বাউরি।
এ দিন ইসিএলের কুনুস্তোরিয়া এরিয়ার টেগর গেস্ট হাউসে ওই কর্মিসভায় শত্রুঘ্নের বক্তৃতার আগাগোড়া ছিল প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা। তিনি বলেন, ‘‘সন্দেশখালিতে যে অভিযোগ উঠেছে, তা সত্যি হলেও, তার দায় মুখ্যমন্ত্রীর উপরে চাপিয়ে প্রধানমন্ত্রী যে ভাবে সমালোচনা করেছেন, তা সমর্থনযোগ্য নয়।’’ এর পরেই মণিপুরের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী বলছেন সন্দেশখালি-কাণ্ড মুখ্যমন্ত্রীর লজ্জা। মণিপুরের ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী লজ্জা পান? একের পর এক মহিলা নির্যাতিত হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী সেখানে যান না। কোনও কথাও বলেন না।’’
হাথরস-কাণ্ডের উল্লেখ করে তৃণমূল সাংসদকে বলতে শোনা যায়, হাথরসে ধর্ষণে অভিযুক্ত ‘চরম অত্যাচারী’ বিজেপি বিধায়ক জেল খাটছেন। দু’দিন আগে উত্তরপ্রদেশে দুই মহিলা ‘গণধর্ষণের’ শিকার হয়ে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছেন বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী ‘লজ্জা’ পান কি না, তা-ও জানতে চান শত্রুঘ্ন।
সন্দেশখালির পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে দাবি করে তৃণমূলের সাংসদ বলেন, ‘‘পুলিশ গ্রেফতার করেছে। আদালতের নজরদারিতে সব চলছে। সত্য পরে বোঝা যাবে। এই অবস্থায় রাজনীতির রং মিশিয়ে দিতে চাইছেন প্রধানমন্ত্রী।’’ সঙ্গে যোগ করেন: ‘‘ওই ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রীকে যে ভাবে প্রধানমন্ত্রী কটাক্ষ করেছেন, তা মহিলারা মেনে নেবেন না।’’
আসানসোল কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী হিসেবে নাম ঘোষণার এক দিনের মধ্যেই লড়াই থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন পবন সিংহ। এ প্রসঙ্গে শত্রুঘ্নের প্রতিক্রিয়া, ‘‘পবন ভাল ছেলে। বিজেপির প্রার্থী হিসেবে ওর নাম ঘোষণা এবং তার পরেই প্রত্যাহার, এ সব পুরোটাই ওদের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার।’’ বিজেপিকে কার্যত চ্যালেঞ্জ ছুড়ে বলেন, ‘‘যেখান থেকে, যাঁকে খুশি এনে দাঁড় করানো হোক, প্রার্থী পরিবর্তন করা হোক, কোনও প্রভাব পড়বে না। বিজেপি সারা দেশে দেড়শো থেকে ১৭৫-এর বেশি আসনে জিততে পারবে না।’’
অন্য দিকে, এ দিন বাঁকুড়ার শালতোড়ার বিজেপি বিধায়ক চন্দনা বাউরি দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে অন্ডালে বাড়ি বাড়ি প্রচার করেন। কেন্দ্রের প্রকল্পের সুযোগ মিলছে কি না, জানতে চান। বিলি করেন প্রচারপত্র। চন্দনার অভিযোগ, ‘‘সন্দেশখালির ঘটনার দায় মুখ্যমন্ত্রী এড়িয়ে যেতে পারেন না। দীর্ঘদিন অভিযুক্তদের আড়াল করে রাখার চেষ্টা করে মুখ্যমন্ত্রী নিজের দোষ কবুল করে নিয়েছেন।"