—প্রতীকী চিত্র।
বোমা ও আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার এখন নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে ডোমকল মহকুমা জুড়ে। পঞ্চায়েত ভোট মিটে গিয়েছে। সামনে লোকসভা ভোট। এই সময় এমন ঘটনায় রীতিমতো উদ্বিগ্ন ডোমকল।
রবিবার রাতে রানিনগর ও ডোমকল থানা এলাকা থেকে উদ্ধার হয়েছে প্রায় ২০টি বোমা। আর এই ঘনঘন বোমা উদ্ধার নিয়ে সিঁদুরে মেঘ দেখছেন ডোমকলের সাধারণ মানুষ। তাঁদের দাবি, লোকসভা নির্বাচন আসার আগেই যে ভাবে বোমা মজুত হচ্ছে, তাতে ডোমকল জুড়ে নির্বাচনের সময় কী পরিস্থিতি তৈরি হবে তা নিয়েই কপালে ভাঁজ পড়ছে সকলের। যদিও পুলিশ প্রশাসনের তরফে বার বারই দাবি করা হচ্ছে, বিশেষ তল্লাশি অভিযান চলার ফলেই এ ভাবে উদ্ধার হচ্ছে আগ্নেয়াস্ত্র ও বোমা। যদিও রাজনৈতিক মহল থেকে সাধারণ মানুষের দাবি, পুলিশ জোরদার তল্লাশি চালাচ্ছে সেটা ঠিক, কিন্তু বোমা যে ভাবে মজুত হচ্ছে তাতে ডোমকল বারুদের স্তূপে পরিণত হচ্ছে। কেন তা হচ্ছে, তার মূল খুঁজে বার করতে হবে পুলিশকে।
এমনিতেই ডোমকলের ডাকনাম এখন 'বোমকল' হয়ে দাঁড়িয়েছে। গোটা রাজ্যেই বোমা তৈরি এবং বোমায় খুনের ঘটনায় এগিয়ে রয়েছে এই মহকুমা। কেবল তাই নয়, বোমা তৈরি করতে গিয়েও একাধিক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে এখানে। কিন্তু তারপরেও বোমা নিয়ে কারবার যে বন্ধ হয়নি তা একাধিক বোমা উদ্ধারের ঘটনা থেকেই পরিষ্কার। যদিও সাধারণ মানুষের একাংশের দাবি, আগের থেকে বোমার ব্যবহার অনেকটাই কমেছে। তুলনায় বেড়েছে আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার। কারণ বোমা তৈরি করতে গেলে জীবনের ঝুঁকি থাকে, আর বোমা বহন করার ক্ষেত্রে যে সমস্যা থাকে তা আগ্নেয়াস্ত্রের ক্ষেত্রে থাকে না। কিন্তু এত বোমা এবং আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হওয়ার ফলে প্রশ্ন উঠছে রাজনৈতিক মহলে। বিরোধীদের দাবি, তা হলে কি এতদিন পুলিশ কর্তারা নাকে তেল দিয়ে ঘুমাচ্ছিলেন? সত্যি সত্যি শাসকের তাঁবেদারি না করে যদি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করে তা হলে ডোমকলের মুক্তি মিলবে আগামী দিনে। না হলে ডোমকল ফিরবে পুরানো চেহারায়।
কিছুদিন আগে সীমান্তের জলঙ্গি ও ডোমকল এর কাটাকোপরা এলাকা থেকে উদ্ধার হয়েছিল আগ্নেয়াস্ত্র। তার দিন কয়েক পরেই ডোমকলের তুলসীপুর এলাকা থেকে উদ্ধার হয়েছে তাজা সকেট বোমা। আর রবিবার রাতে রানিনগরের ডেপুটি পাড়া এলাকা থেকে পাঁচটি বোমা এবং ডোমকলের শ্রীকৃষ্ণপুর এলাকা থেকে পনেরোটি বোমা উদ্ধার করেছে পুলিশ। সোমবার বম্ব স্কোয়ার্ডের কর্মীরা এসে নিষ্ক্রিয় করে সেই বোমা। সিপিএমের ডোমকল এরিয়া কমিটির সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, "শাসক দল খুব ভাল করে বুঝে গিয়েছে আগ্নেয়াস্ত্র, বোমা ছাড়া কোনও ভাবেই ভোটে লড়া করা যাবে না। তার জন্য যা যা করার সেটা তারা এখন থেকে করছে। অন্য দিকে ডোমকলের বিধায়ক তৃণমূলের জাফিকুল ইসলামের দাবি, ‘‘বোমা-বন্দুকের রাজনীতিতে পারদর্শী সিপিএম। ফলে তাদের আমলের ডোমকলের সংস্কৃতিকে ফেরানোর চেষ্টা করছে তারা। তৃণমূল সরকার কখনওই এমন পরিস্থিতি তৈরি হতে দেবে না।’’