বোলপুরের পর মুরারই, থানায় নালিশ দু’পক্ষের
Lok Sabha Election 2024

ভোটের খরচ নিয়ে ফের দ্বন্দ্ব বিজেপিতে

বিজেপি সূত্রে দাবি, ১৩ মে ভোট মিটতেই জেলার বিভিন্ন প্রান্তে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক অশান্তি। কোথাও বিজেপি এজেন্টকে মারধর, তো কোথাও বিজেপি এজেন্টের বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ সামনে এসেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মুরারই শেষ আপডেট: ২৯ মে ২০২৪ ০৮:২০
Share:

মুরারই থানায় অভিযোগ জানাতে আসছেন সুজিত দাস। —নিজস্ব চিত্র।

বোলপুরের পর মুরারই। ভোটের খরচ নিয়ে বীরভূমে ফের প্রকাশ্যে এল বিজেপির দলীয় কোন্দল। মঙ্গলবার মুরারইয়ে দলীয় কার্যালয়ে মুরারইয়ের ৫ নম্বর মণ্ডলের সহ সভাপতি গোরাচাঁদ কোনাইকে মারধরের অভিযোগ ওঠে বিজেপির বীরভূম সাংগঠনিক জেলা পর্যবেক্ষক সুজিত দাসের বিরুদ্ধে। দু’পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ জানিয়েছে। ঘটনায় কটাক্ষ করেছে তৃণমূল।

Advertisement

বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন গণনার জন্য দলীয় কর্মীদের নিয়ে বৈঠকের আয়োজন করেছিলেন বিজেপি নেতৃত্ব। সূত্রের দাবি, বৈঠক শেষে গোরাচাঁদ প্রশ্ন করেন পর্যবেক্ষক ও নেতৃত্বকে বুথ খরচ বাবদ ১৫ হাজার টাকা দল থেকে দেওয়া হলেও সেই খরচ কেন পাওয়া যায়নি? তিনি দাবি করেন, ভোটের জন্য খরচ করা টাকা পাওনাদারেরা চাইছে। টাকা দিতে হবে বলেও দাবি করেন গোরাচাঁদ।

গোরাচাঁদের অভিযোগ, ‘‘এই প্রশ্ন করার সঙ্গে সঙ্গেই মুরারইয়ের দলীয় কার্যালয়ে পর্যবেক্ষক সুজিত দাস চড়াও হন। আমার মুখে ও বুকে চড় ও ঘুষি মারতে শুরু করেন। দলের অন্য সদস্যরা আমাকে দলীয় কার্যালয় থেকে বাইরে নিয়ে আসেন।’’ গোরাচাঁদের দাবি, ‘‘সুজিত দাস ও আনন্দ হালদার ছাড়াও কয়েকজন আমার উপর হামলা চালান।’’ বিষয়টি নিয়ে মুরারই থানায় অভিযোগ জানিয়েছেন গোরাচাঁদ।

Advertisement

সুজিতের পাল্টা দাবি, ‘‘গোরাচাঁদ মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন। বৈঠকে গালিগালাজ করায় দলীয় কর্মীরা তাঁকে কার্যালয় থেকে বাইরে করে দেন। তাঁকে কোনও রকম আঘাত করা হয়নি।’’ গালিগালাজ করার জন্য মুরারই থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে বলেও দাবি সুজিতের। তিনি বলেন, ‘‘গোরাচাঁদকে ভোট খরচের জন্য দশ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছিল। সেই নথি আছে প্রয়োজনে জনসমক্ষে নিয়ে আসা হবে। তার পরেও টাকার জন্য মিথ্যা অভিযোগ করেছেন তিনি।”

ভোটের খরচ নিয়ে বিজেপিতে কোন্দল প্রকাশ্যে এসেছে ভোট শেষ হতেই। রবিবার বোলপুর কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী পিয়া সাহা এবং বিজেপি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সন্ন্যাসীচরণ মণ্ডলের বিরুদ্ধে আর্থিক তছরুপের অভিযোগ তুলে ক্ষোভ উগরে দেন দলেরই কর্মীদের একাংশ। রবিবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটে বোলপুর রামকৃষ্ণ রোড এলাকায় থাকা বিজেপির অস্থায়ী দলীয় কার্যালয়ে সবার সামনেই। এ দিন ফের মুরারইয়ের ঘটনা সামনে আসতে নির্বাচনের ফল বেরোনোর আগে অস্বস্তিতে জেলা বিজেপি।

বিজেপি সূত্রে দাবি, ১৩ মে ভোট মিটতেই জেলার বিভিন্ন প্রান্তে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক অশান্তি। কোথাও বিজেপি এজেন্টকে মারধর, তো কোথাও বিজেপি এজেন্টের বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ সামনে এসেছে। কিন্তু, দলের একটা বড় অংশের নেতাদের আক্রান্তদের পাশে থাকতেও দেখা যায়নি বলে অভিযোগ। ক’দিন আগে বিজেপির হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে বুথের কর্মীদের ভোটের খরচের টাকা নেতৃত্ব দেননি বলে অভিযোগ তোলেন দলের কর্মীদের একাংশ। এ নিয়ে বিজেপির বীরভূম সাংগঠনিক জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহা বলেন, “বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে বলতে পারব।’’

এই ঘটনায় বিজেপিকে কটাক্ষ করেছে তৃণমূল। দলের মুরারই ১ ব্লক সভাপতি বিনয় ঘোষ বলেন, “পরিযায়ী দলের গোষ্ঠী কোন্দল সবে শুরু। ভোটের ফলের পরে নিজেরাই টাকার ভাগ ও হারার দায় একে অপরকে দিয়ে কোন্দল করবে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement