—প্রতীকী চিত্র।
সিউড়ি: কর্মীরা কাজ করতে ইচ্ছুক, প্রচারে ঝাঁপিয়ে পড়তে আগ্রহী। কিন্তু, বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী ঘোষণা হল না এখনও। ফলে হতোদ্যম বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা। চাপা অসন্তোষও রয়েছে। তাঁদের প্রশ্ন, হল কী কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের? কেন বীরভূমে এখনও প্রার্থী ঘোষণা করা গেল না? এই প্রশ্নের উত্তর নেই জেলা বিজেপি নেতৃত্বের কাছেও।
দলের অন্দরের খবর, কে প্রার্থী, কবে ঘোষিত হবে তাঁর নাম— এই প্রশ্নে নেতাদের জর্জরিত হতে হচ্ছে। কিন্তু, সদুত্তর দিতে পারছেন না তাঁরাও। দলের এক জেলা নেতা বলছেন, ‘‘প্রশ্ন তো করবেই কর্মীরা। কারণ, বোলপুর কেন্দ্রে দল প্রার্থী ঘোষণা করেছে। সিদ্ধান্ত ঝুলে রয়েছে বীরভূম কেন্দ্রে। কে প্রার্থী হচ্ছেন, এটা জানা না গেলে তো প্রচারই সম্ভব নয়!’’ এই নিয়ে বিজেপিকে কটাক্ষ করছে তৃণমূল এবং সিপিএম। তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘নিশ্চিত হার জেনেই হয়তো প্রার্থী খুঁজে পাচ্ছে না বিজেপি।’’ সিপিএমের জেলা সম্পাদক গৌতম ঘোষ বলেন, ‘‘দলীয় কোন্দল এড়াতে হয়তো কোনও হেভিওয়েট প্রার্থী খুঁজছে তারা। সেটা ঠিক করতে না পারায় প্রার্থী ঘোষণায় বিলম্ব হচ্ছে।’’
যদিও বিজেপির বীরভূম সংগঠনিক জেলার সভাপতি ধ্রুব সাহার পাল্টা বক্তব্য, ‘‘অন্য রাজনৈতিক দলগুলিকে আমাদের চিন্তা করতে হবে না। তারা নিজেদের কথা ভাবুক। দু-এক দিনেই প্রার্থী ঘোষণা হবে। তিনি আমাদের রাজ্যের বাসিন্দাই হবেন।’’ যদিও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলের একাধিক নেতার বক্তব্য, বীরভূম কেন্দ্রে মোট ৭টি বিধানসভা এলাকা, ৩৯টি মণ্ডল রয়েছে। ১৩ মে নির্বাচন। হাতে ৪৫ দিন। যাঁকেই প্রার্থী করা হোক, তাঁকে মনোনয়ন এবং অন্যান্য কাজে আরও কয়েক দিন ব্যস্ত থাকতে হবে। ফলে হাতে সময় বিশেষ থাকছে না। প্রার্থী প্রতিটি মণ্ডলে এক দিন করে সময় দিতে পারবেন কি না, সেটাই চিন্তার। এক বিজেপি নেতার কথায়, ‘‘জেলার কেউ প্রার্থী হলে ততটা সমস্যা নয়। কিন্তু, বাইরে থেকে কাউকে প্রার্থী করলে তো তাঁকে দলের নেতা-কর্মীদের এবং এলাকা চিনতেই সময় লেগে যাবে।’’
এ রাজ্যের ৪২টি আসনের ৩৮টির নাম ঘোষণা হয়েছে। যে চারটি কেন্দ্র বাকি, তার একটি বীরভূম। প্রার্থী নিয়ে এমন ‘রহস্যে’ বিরক্ত মণ্ডল, শক্তিকেন্দ্র এবং বুথস্তরের কর্মীদের বড় অংশ। তাঁদের অনেকের কথায়, ‘‘বোলপুরের প্রার্থী পিয়া সাহা প্রায় এক মাস ধরে প্রচার করছেন। তৃণমূলের শতাব্দী রায় এলাকা চষে ফেলছেন। বাম-কংগ্রেস জোটের প্রার্থীও প্রচার করছেন। আর আমরা কেবল দেওয়ালে চুন দিয়ে পদ্ম এঁকে বসে আছি।’’ বিজেপি সূত্রে খবর, একাধিক নাম চর্চায় রয়েছে এই কেন্দ্রের ক্ষেত্রে। সদ্য প্রাক্তন এক আইপিএস অফিসারের নামও শোনা যাচ্ছে। কিন্তু, শেষ পর্যন্ত দলের সিলমোহর কার নামে পড়বে, বীরভূমের বিজেপি কর্মীদের কাছে তা এখনও ‘রহস্য’।