গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
লোকসভা ভোটের প্রচারে নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহের স্লোগান ছিল: ‘অব কি বার ৪০০ পার’! আর ঝাড়খণ্ডের বিজেপি নেতৃত্বের কণ্ঠে ধ্বনিত হয়েছিল: ‘ইস বার পুরা চৌদহ পার’! অর্থাৎ, এ বার ১৪টা সব ক’টা। কিন্তু জয়রথ থামল আটে। এনডিএ জোট পেল নটি আসন। ‘ইন্ডিয়া’ পাঁচ। তিনটি আসনে ইতিমধ্যে জয়ী ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা। কংগ্রেস বিজয়ী ঘোষণা হয়েছে একটিতে। এনডিএ জোটে থাকা আজসু পেয়েছে একটি আসন।
২০১৯ সালে লোকসভা ভোটে ঝাড়খণ্ডের ১৪টি আসনের মধ্যে ১১টিতে জয়ী হয়েছিল বিজেপি। জোটসঙ্গী আজসু-কে ধরলে মোট ১২টি আসন। বিপরীতে কংগ্রেস এবং ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা (জেএমএম) পেয়েছিল একটি করে আসন। মহাজোটের তৃতীয় শরিক আরজেডি ছিল ‘শূন্য’। তার পাঁচ বছর আগে ২০১৪ সালের ভোটে বিজেপি পেয়েছিল ১২টি আসন। অর্থাৎ, পাঁচ বছরের পদ্মের ‘লোকসান’ ছিল একটি লোকসভা আসন। এ বার মোদী-শাহ ঝাড়খণ্ড বিজেপি নেতৃত্বকে পুরো ১৪ লোকসভা আসনেরই লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিয়েছিলেন।
কিন্তু বিজেপিও জানত, লক্ষ্য আর লক্ষ্যপূরণের মধ্যে ব্যবধান রয়েছে। ঝাড়খণ্ডে পদ্মের ‘কাঁটা’ ছিল পাঁচটি তফসিলি জনজাতি সংরক্ষিত আসন। ইডি হানায় ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা (জেএমএম)-র নেতৃত্ব ‘ত্রস্ত’ হলেও ওই পাঁচটি আসনে হেমন্ত সোরেনের দলের প্রভাব প্রশ্নাতীত। বিজেপিকে ঠেকাতে ঝাঁপিয়েছিল ‘ইন্ডিয়া’-সঙ্গী কংগ্রেস। বস্তুত, ঝাড়খণ্ড রাজ্য তৈরি ইস্তক প্রত্যেক লোকসভা ভোটে ওই রাজ্যে বিজেপি ভাল ফল করলেও এ পর্যন্ত ১৪-তে ১৪ হয়নি তাদের। গত দুই লোকসভা ভোটে ‘মোদী হাওয়া’তেও নয়।
ঝাড়খণ্ডের ১৪টি লোকসভা আসনের মধ্যে তফসিলি উপজাতি সংরক্ষিত পাঁচটি আসন হল সিংভূম, খুঁটি, লোহারদাগা, দুমকা এবং রাজমহল। প্রথম তিনটি লোকসভা আসনে চতুর্থ দফায় ভোটগ্রহণ হয়েছিল। শেষ দু’টি আসনে নির্বাচন হয়েছিল সপ্তম দফায়। গত লোকসভা ভোটে ওই পাঁচটি আসনের তিনটিতে জিতেছিল বিজেপি। একটি কংগ্রেস। বাকি একটি পেয়েছিল জেএমএম। এই লোকসভা ভোটে পাঁচ আসনের তিনটিতে প্রার্থী দিয়েছিল জেএমএম। দু’টিতে কংগ্রেস। বিজেপির কাছে শেষ পর্যন্ত কাঁটা হল ওই পাঁচ কেন্দ্রই।
ঝাড়খণ্ডে পালামৌ একমাত্র ‘এসসি’ আসন। বাকি আটটি আসন সাধারণ। ওই ন’টি আসনে প্রচার-প্রভাবে গোড়া থেকেই এগিয়ে ছিল বিজেপি। বাকি খুঁটি, সিংভূম, লোহারদাগা, রাজমহল এবং দুমকায় লড়াই ‘হাড্ডাহাড্ডি’ হবে বলেই ধরে নেওয়া হয়েছিল। হলও তাই। আসলে আদিবাসী ভোট যার, আসন তার— এই পাঁচ আসনে এটাই সরল হিসাব। কিন্তু ভোট কাটাকাটির জায়গায় অঙ্ক ততটাই কঠিন! ঝাড়খণ্ডে আদিবাসী ভোট রয়েছে প্রায় ২৬.২ শতাংশ। অন্য দিকে, পাঁচ ‘এসটি’ আসনে জেএমএম কিংবা কংগ্রেস যে একচেটিয়া ভাবে এগিয়েছিল, তেমনটাও নয়।
২০০০ সালে ঝাড়খণ্ড রাজ্য গঠনের আগে থেকেই ছোটনাগপুর, সিংভূম ও সাঁওতাল পরগনা এলাকায় আরএসএসের শাখা ‘অখিল ভারতীয় বনবাসী কল্যাণ আশ্রম’ কাজ করেছে। আদিবাসীদের মধ্যে তাদের প্রভাব যথেষ্ট। আবার বিহার ভাগ করে আদিবাসীদের জন্য পৃথক রাজ্যের দাবিতে বিজেপিও ছিল শিবু সোরেনের জেএমএমের মতোই সরব।
দুমকা আসনটি এক সময়ে ঝাড়খণ্ড রাজনীতির অন্যতম চরিত্র শিবু সোরেনের ‘ঘাঁটি’। ৮০ বছরের শিবু এ বারের ভোটযুদ্ধে অংশ নেননি। ঝাড়খণ্ডের তিন বারের মুখ্যমন্ত্রী তথা জেএমএমের সভাপতি বর্তমানে রাজ্যসভার সাংসদ। দুমকায় এ বার জেএমএম প্রার্থী করেছে নলিন সোরেনকে। নলিন চেয়েছিলেন দুমকা আসনটি জিতে শিবুকে ‘গুরুদক্ষিণা’ দিতে। অন্য দিকে, বিজেপি তুরুপের তাস করেছিল শিবুরই বৌমা সীতা সোরেনকে। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে শিবু বিজেপির প্রার্থী সুনীল সোরেনের কাছে পরাজিত হন। ওই কেন্দ্র ফিরে পেতে জেএমএম যতটাই মরিয়া ছিল, জয়ের আসন টিকিয়ে রাখতে ততটাই তৎপর ছিল বিজেপি। চলতি বছরের মার্চে আচমকাই দলের সমস্ত পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন জেএমএম বিধায়ক তথা রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের ভ্রাতৃবধূ সীতা। দুমকা জেলার জামা কেন্দ্রের তিন বারের বিধায়ক সীতা জেএমএম প্রতিষ্ঠাতা শিবুর জ্যেষ্ঠপুত্র প্রয়াত দুর্গা সোরেনের স্ত্রী। দলত্যাগের আগে জেএমএম শীর্ষ নেতৃত্বকে লেখা চিঠিতে সীতা অভিযোগ করেছিলেন, স্বামীর মৃত্যুর পর থেকে তিনি এবং তাঁর পরিবারের সঙ্গে ‘অন্যায়’ করা হয়েছে। ঘটনাক্রমে সীতাকে তাঁরই শ্বশুরের ‘গড়ে’ প্রার্থী করেছিল বিজেপি। শেষমেশ দুমকায় জিতলেন জেএমএমের নলিন।
’১৯-র লোকসভা ভোটে রাজমহল কেন্দ্রে জয়ী হয়েছিলেন জেএমএম প্রার্থী বিজয়কুমার হাঁসদা। এ বারও তিনিই প্রার্থী ছিলেন। বিজেপি টিকিট দিয়েছিল ঝাড়খণ্ড বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি তলা মারান্ডিকে। এ বারেও জয়ী হলেন জেমএমএমের বিজয়।
সিংভূম ‘এসটি’ আসনটিতে গত বার জিতেছিলেন কংগ্রেসের গীতা কোড়া। এ বার তিনি ছিলেন পদ্মের প্রার্থী। গীতার স্বামী প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী আদিবাসী হো সম্প্রদায়ের নেতা মধু কোড়া চার হাজার কোটি টাকার কয়লা কেলেঙ্কারিতে জেলে। মূলত হো সম্প্রদায়ের ভোটেই গত বার জয়ী হয়েছিলেন গীতা। এ বার সেই অঙ্কেই তাঁকে প্রার্থী করেছিল বিজেপি। তবে গীতাকে দলে টানতে মোদী-শাহের দল ইডি-সিবিআইয়ের ‘জুজু’ দেখিয়েছে বলে অভিযোগ করেছিল কংগ্রেস। গীতার বিরুদ্ধে ‘ইন্ডিয়া’র তরফে জেএমএম প্রার্থী করেছিল জবা মাঝিকে। জবার স্বামী দেবেন্দ্র মাঝি জল-জঙ্গলের অধিকার আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়ে মাফিয়াদের হাতে খুন হয়েছিলেন। ভোটে জবার মূলধন ছিল আদিবাসী আবেগ। গীতার পক্ষে অর্থবল এবং আগে ভোটে লড়ার অভিজ্ঞতা। ভোটে শেষ হাসি হাসলেন জবা-ই। প্রায় ১ লক্ষ ৬৪ হাজার ভোটে জয়ী তিনি।
খুঁটিতেও এ বার জোরদার লড়াইয়ের আভাস ছিল। কুড়মি মাহাতোদের রোষে পড়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা অর্জুন মুন্ডা হেরে যেতে পারেন, এমন হাওয়া ছিলই। হলও তাই। তফসিলি উপজাতির তালিকায় ঠাঁই পাওয়ার দাবিতে মাহাতোরা দীর্ঘ দিন ধরে আন্দোলন করছেন। তাই ‘চাপে’ ছিলেন ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এবং বিদায়ী কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অর্জুন। গত লোকসভা ভোটেও অর্জুন কান ঘেঁষে জয় পেয়েছিলেন। কংগ্রেসের কালীচরণ মুন্ডাকে পরাজিত করেছিলেন মাত্র ১,৪৪৫টি ভোটে। পাঁচ বছর পর ভোটযুদ্ধে অর্জুন-কালী মুখোমুখি হয়েছিলেন আবার। এ বার জয় পেলেন কালী। তা-ও পাঁচ লক্ষের বেশি ভোটে।
লোহারদাগা বিজেপির জেতা আসন। গত বার কংগ্রেস প্রার্থী সুখদেও ভগতকে হারিয়েছিলেন পদ্মপ্রার্থী সুদর্শন ভগত। তবে এ বার বিদায়ী সাংসদ সুদর্শনকে প্রার্থী না করে লোহারডগা থেকে বিজেপি টিকিট দিয়েছিল দলের এসটি মোর্চার প্রধান সমীর ওরাওঁকে। সুখদেওয়ের সামনে ছিল প্রতিশোধ নেওয়ার সুযোগ। শেষ পর্যন্ত লাখ খানেক ভোটে জয়ী হয়েছেন সুখদেও।
জমি কেলেঙ্কারি মামলায় এখন জেলবন্দি জেএমএমের কার্যনিবাহী সভাপতি হেমন্ত। গত ৩১ জানুয়ারি জেলে যাওয়ার আগে মুখ্যমন্ত্রিত্ব ত্যাগ করেছিলেন তিনি। হেমন্তের কারাবাস, শিবুর বার্ধক্যজনিত অসুস্থতা অবশ্য জেএমএমকে টাল খাওয়াতে পারেনি। অন্তত ভোটপ্রচারে। ঝাড়খন্ডের রাজনীতি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল অনেকেরই বক্তব্য, ‘লড়াই’ শিবু-হেমন্তের দলের ডিএনএতে আছে। বোকারোর অতিথি নিবাসে ২০০৯ সালে শিবুর বড় ছেলে, জামা-র বিধায়ক দুর্গা সোরেন যখন ঘুমের মধ্যেই মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়ে মারা যান, তখন তাঁর বয়স মাত্র ৪০ বছর। শিবুর উত্তরাধিকার ও দলের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব তুলে নিয়েছিলেন মেজো ছেলে হেমন্ত। পাঁচ বছর আগে ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির কাছে চূড়ান্ত পর্যুদস্ত হওয়ার মাত্র ন’মাসের মধ্যে জেএমএম ঝাড়খণ্ডের বিধানসভা নির্বাচনে জয়ী হয়ে সরকার গঠন করেছিল হেমন্তের নেতৃত্বে। এমন ওঠাপড়া লেগেই থাকে জেএমএমের মধ্যে। কিন্তু হেমন্তের জেলবন্দি থাকা, বৃদ্ধ শিবুর অসুস্থতার মধ্যে খানিক ফাটল ধরেছে দলে। কুর্সি সামলাচ্ছেন বৃদ্ধ চম্পাই সোরেন। লোকসভা ভোটে জেএমএমের প্রচারের ‘মুখ’ ছিলেন হেমন্ত-জায়া কল্পনা।
গোড্ডা লোকসভা কেন্দ্রে প্রথমে কংগ্রেস প্রার্থী করেছিল দীপিকা পাণ্ডেকে। কিন্তু শেষ মুহূর্তে তাঁর নাম সরিয়ে ‘হাত’ শিবির টিকিট দিয়েছিল প্রদীপ যাদবকে। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন তিন বারের সাংসদ তথা মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে অভিযোগের কারণে ‘খ্যাত’ বিজেপির নিশিকান্ত দুবে। তিনি এক লক্ষের বেশি ভোটে জয়ী হয়েছেন।
ধানবাদ কেন্দ্রে ২০১৯ সালে কংগ্রেস প্রার্থী করেছিল প্রাক্তন ক্রিকেটার কীর্তি আজাদকে। বিজেপির পশুনাথ হেরে যান। কীর্তি এই লোকসভা ভোটে তৃণমূলের প্রার্থী। বাংলার বর্ধমান-দুর্গাপুর আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। ধানবাদে লড়াই ছিল বিজেপির দুলু মাহাতো এবং কংগ্রেসের অনুপমা সিংহের। দুলুও জয়ী হয়েছেন বিপুল ভোটে।
চাতরায় বিজেপির প্রার্থী ছিলেন কালীচরণ সিংহ জয়ী হয়েছেন। কংগ্রেস প্রার্থী কেএন ত্রিপাঠীকে ৫০ হাজারের বেশি ভোটে পরাজিত করেছেন তিনি। জামশেদপুরে দু’বারের সাংসদ বিদ্যুৎবরণ মাহাতোকে আবার টিকিট দিয়েছিল বিজেপি। বিদ্যুতের বিরুদ্ধে জেএমএম টিকিট দিয়েছিল সমীরকুমার মোহান্তিকে। বিজেপি প্রার্থী জয়ী হয়েছেন দেড় লক্ষেরও বেশি ভোটে। রাঁচী বিজেপির জেতা আসন। ওই কেন্দ্রে এ বার পদ্মপ্রার্থী ছিলেন সঞ্জয় শেঠ। আর ‘ইন্ডিয়া’র তরফে কংগ্রেস প্রার্থী করেছিল যশস্বিনী সহায়কে। হাড্ডাহাড্ডি লড়াই শেষে রাঁচীতেও জয়ী হল বিজেপি।
পলামু লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপির প্রার্থী বিষ্ণুদয়াল রাম ওই কেন্দ্রেরই বিদায়ী সাংসদ। প্রাক্তন সেনা অফিসার এই বিজেপি প্রার্থীর লড়াই মূলত থিল বিএসপির কামেশ্বর বৈঠা এবং আরজেডি প্রার্থী মমতা ভুঁইয়ার বিরুদ্ধে। ২ লক্ষ ৮৮ হাজার ভোটে জয়ী হয়েছেন বিষ্ণুদয়াল।
গিরিডি লোকসভা আসনে লড়াই ছিল মূলত জেএমএম এবং আজসু-র। গত লোকসভা ভোটে আজসু-র চন্দ্রপ্রকাশ চৌধুরী ওই আসনে জয়ী হয়েছিলেন। এ বারেও আজসু-র প্রার্থী ছিলেন চন্দ্রপ্রকাশই। জেএমএমের টিকিটে লড়েছেন মথুরাপ্রসাদ মাহাতো। শেষমেশ প্রায় সাড়ে চার লক্ষ ভোটে জয় হাসিল করে হ্যাটট্রিক করলেন চন্দ্রপ্রকাশ।
হজারিবাগ কেন্দ্রে গত লোকসভা ভোটে জয়ী হয়েছিল বিজেপি। এ বারের ভোটে হাজারিবাগ সদরের বিধায়ক মণীশ জায়সওয়ালকে টিকিট দিয়েছিল বিজেপি। তাঁর বিরুদ্ধে কংগ্রেসের প্রার্থী ছিলেন জয়প্রকাশ ভাই পটেল। বিজেপির টিকিটে বিধায়ক হওয়া জয়প্রকাশ গত মার্চ মাসেই যোগ দিয়েছিলেন কংগ্রেসে। শেষ হাসি হেসেছেন মণীশই।
কোডারমায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অন্নপূর্ণা দেবীকে টিকিট দিয়েছিল বিজেপি। সিপিআইএমএল প্রার্থী করেছিল বিনোদ সিংহকে। জেএমএমের বিদ্রোহী নেতা জয়প্রকাশ বর্মা লড়েছিলেন ‘নির্দল’ হিসাবে। জয়ী হয়েছেন অন্নপূর্ণা।