—প্রতীকী ছবি।
রাজ্য সরকারের ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ প্রকল্প নিয়ে শুধু ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ, বিরোধিতা নয়। এ বারে তার পাল্টা দিতে 'লাডলি বহেনা যোজনা' নিয়ে আসরে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিজেপি। বিজেপি শাসিত একাধিক রাজ্যে ওই প্রকল্প চলছে। বিজেপির দাবি, ওই প্রকল্পে মাসে তিন হাজার টাকা করে দেওয়া হবে মহিলাদের। মঙ্গলবার শিলিগুড়িতে বিজেপির উত্তরবঙ্গের জ়োনের বৈঠক হয়। যেখানে দলের রাজ্যের সহ পর্যবেক্ষক আশা লাকড়া, সাধারণ সম্পাদক অমিতাভ চক্রবর্তী উপস্থিত ছিলেন। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, যেখান থেকে এমনই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, আগামী ১৭ এবং ১৮ ফেব্রুয়ারি দিল্লিতে বৈঠক রয়েছে বিজেপির। যেখানে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব থাকবেন। সেখানে দলের উত্তরবঙ্গ জ়োনের নেতারা উপস্থিত থাকবেন। সে বৈঠক থেকেও লোকসভা ভোটের মুখে তৃণমূলকে টেক্কা দিতে কোন পথে এগোতে হবে, তা নিয়ে আলোচনা হবে।
বিজেপির শিলিগুড়ি ক্লাস্টার ইনচার্জের দায়িত্বে রয়েছেন বিজেপির কোচবিহার দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক নিখিলরঞ্জন দে। তিনি দিল্লির বৈঠকেও যোগ দেবেন। তিনি বলেন, "তৃণমূল যে প্রকল্প ঘোষণা করছে, তা এমন কিছু নয়। আমরা সরকারে এলে তার তিন গুণ টাকা দেওয়া হবে। এ রাজ্যের সরকার মহিলাদের এক হাজার টাকা করে দেবে বলে এ বারে বাজেটে ঘোষণা করেছে। দেশের যে রাজ্যগুলি বিজেপিশাসিত, সেখানে 'লাডলি বহেনা যোজনা' আগে থেকেই চালু রয়েছে। আমরা সে সব কথা মানুষের কাছে তুলে ধরব।"
সামনেই লোকসভা নির্বাচন। তার আগে এ বারের রাজ্য বাজেটে ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ প্রকল্পে মহিলাদের ভাতা দ্বিগুণ করার কথা ঘোষণা করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যারা পাঁচশো টাকা পেতেন, তাঁরা এ বার থেকে হাজার টাকা পাবেন। তফসিলি জাতি, উপজাতিদের জন্য ওই প্রকল্পে আরও দুশো টাকা বেশি বরাদ্দ রয়েছে। এমনিতেই রাজ্যে ‘কন্যাশ্রী’-‘রূপশ্রী’র মতো প্রকল্প চলছে। যে প্রকল্পগুলির মধ্য দিয়ে স্কুলের পড়াশোনা থেকে বিয়ে পর্যন্ত টাকা দেওয়া হয় মেয়েদের। বিয়ের পরে আবার রয়েছে ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’। অর্থাৎ, সরকারি অনুদান ঘরে ঘরে মহিলাদের হাতে পৌঁছে দেওয়ার কাজ করছে তৃণমূল সরকার। রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি প্রথমে সরকারি ওই অনুদান নিয়ে রাজ্য সরকারকে কটাক্ষ করতে শুরু করে। অনুদানের বদলে, কর্মসংস্থানের দাবি করা হয়। কিন্তু দল সূত্রের দাবি, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বিজেপি নেতৃত্ব বুঝতে পেরেছেন শুধু কর্মসংস্থানের দাবি তুলে মহিলা ভোটারদের কাছে টানা সম্ভব নয়। অনুদানের জন্যেই বহু মহিলা ভোটার রাজ্য সরকারের পক্ষ নিচ্ছেন। এই অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতেই এ বারে বিজেপ শাসিত রাজ্যের প্রকল্পকে হাতিয়ার করে প্রচার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিজেপি নেতৃত্ব।
তৃণমূলের কোচবিহার জেলা চেয়ারম্যান গিরীন্দ্রনাথ বর্মণ অবশ্য বলেন, "মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মহিলা থেকে সাধারণ মানুষের জন্য যত সামাজিক প্রকল্প ঘোষণা করেছেন, তা কোথাও নেই। বিজেপি যতই প্রচার করুক, লাভ হবে না।"