—প্রতীকী ছবি।
পঞ্জাবে ভাল ফলের আশা আগেই ছেড়েছে বিজেপি। এ বার ষষ্ঠ দফার পরে হরিয়ানা ও দিল্লিতে দল বড় সংখ্যক আসন হারাতে চলেছে বলে মনে করছেন বিজেপি নেতৃত্ব।
উত্তর-পশ্চিম ভারতের তিন রাজ্য পঞ্জাব (১৩), দিল্লি (৭) ও হরিয়ানা (১০) মিলিয়ে মোট ৩০টি আসন রয়েছে। গত বার বিজেপি দিল্লি ও হরিয়ানায় সব ক’টি আসন জিতেছিল। আর পঞ্জাবে বিজেপি তথা এনডিএ জোট জেতে ৪টি আসনে। সব মিলিয়ে ৩০টির মধ্যে ২১টি আসন জিতে নিতে সক্ষম হয়েছিল গেরুয়া শিবির। পঞ্জাবে শেষ দফায় ভোট। দলের অনুমান, এ যাত্রায় তিন রাজ্য মিলিয়ে খুব বেশি হলে ৯-১০টি আসন দল পেতে চলেছে। দিল্লিতে অরবিন্দ কেজরীওয়ালের প্রতি সহানুভূতি ঝড় ও অন্য দিকে হরিয়ানায় দলের অন্তর্কলহ, কৃষক বিক্ষোভ, জাঠ সমাজের ক্ষোভ দুই রাজ্যে ফল খারাপ হওয়ার অন্যতম কারণ হিসাবে মনে করছেন বিজেপি নেতারা।
অন্য দিকে পঞ্জাবে জোট সঙ্গী শিরোমণি অকালি দলের সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদ হওয়ায় এ যাত্রায় একলা চলো নীতি নিয়ে এগোচ্ছে বিজেপি। ওই রাজ্যে প্রাক্তন কংগ্রেস নেতা অমরেন্দ্র সিংহ ও সুনীল জাখরকে যথাক্রমে শিখ ও হিন্দু সমাজের মুখ হিসাবে তুলে ধরে বিজেপি নির্বাচনে নামলেও, দল ওই রাজ্যে আদৌ খাতা খুলতে পারবে কি না তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। যার অন্যতম কারণ হল সদ্য ওই রাজ্যে ক্ষমতায় আসা আপের জনপ্রিয়তায় ভাঙন ধরাতে বিজেপির ব্যর্থতা। আপের এক নেতার কথায়, ‘‘বিধানসভায় দলের পক্ষে যে সমর্থন ছিল সেই ভোটব্যাঙ্ক অটুট রয়েছে। উপরন্তু জামিনে ছাড়া পেয়ে কেজরীওয়াল পঞ্জাবে প্রচারে যাওয়ায় দলের ফল আরও ভাল হওয়ার আশা করা হচ্ছে।” আপের বিশ্লেষণ, ওই তিন রাজ্যে ইন্ডিয়া অন্তত ২০টি আসন জিততে চলেছে এ বারে।
যদিও ঘরোয়া আলোচনায় বিনোদ তাউড়ের মতো বিজেপি নেতারা দাবি করছেন, ষষ্ঠ দফা ভোটের পরে বিজেপি ৩০০-র গণ্ডি ছাড়িয়ে এখন ৩৫০ আসন ছোঁয়ার লক্ষ্যে এগোচ্ছে। দলের বক্তব্য, উত্তরপ্রদেশ ও বিহারে কম ভোট পড়া প্রথমে দলকে চিন্তায় রেখেছিল। পরে দেখা যায়, এ বারের নির্বাচনে গোড়া থেকে যে কম ভোট পড়ছিল সেটিই প্রবণতা হয়ে দাঁড়িয়েছে দু’ই রাজ্যে। দলের নেতাদের দাবি, প্রথম পাঁচ দফা ভোটের বিশ্লেষণ করে জানা যাচ্ছে, ওই দু’রাজ্যে যারা ভোট দিতে পথে নামছেন তাঁদের অধিকাংশ গেরুয়া শিবিরের ভোটার। ফলে দু’রাজ্যে আশানুরূপ ফলের সম্ভাবনা দেখছে বিজেপি।
যদিও বিহারে নীতীশ কুমারের দলবদলু ভাবমূর্তি নিয়ে প্রশ্নের মুখে এনডিএ। তেমনই উত্তরপ্রদেশে দলের নেতাদের হাতেই বিজেপি অন্তর্ঘাতের শিকার বলে বিরোধীদের একাংশ দাবি করে সরব রয়েছেন। মহারাষ্ট্রে শিবসেনা ও এনসিপি ভেঙে বেরিয়ে বিজেপির হাত ধরায় রাজ্যের বড় অংশের মানুষ একনাথ শিন্দে ও অজিত পওয়ারের উপরে ক্ষুব্ধ। উল্টে সহানুভূতি ভোটের হাওয়া রয়েছে ইন্ডিয়ার পক্ষে। তেমনই কর্নাটকে এ বারে কংগ্রেস যে ভাল ফল করতে চলেছে সে বিষয়ে নিশ্চিত অধিকাংশ বিশেষজ্ঞ। যদিও বিজেপির অমিত শাহের দাবি, “পাঁচ দফা ভোটেই ৩০০ আসনের গণ্ডি ছাপিয়ে গিয়েছে বিজেপি।”
কংগ্রেসের পাল্টা দাবি, বিজেপি যা-ই দাবি করুক, এ বারে আমজনতা তাঁদের প্রত্যাখান করায় মোদী-শাহের ক্ষমতায় ফেরা অসম্ভব। আজ বিহারের বক্তিয়ারপুরে একটি জনসভায় কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বলেন, গোটা বিহার ও উত্তরপ্রদেশ জুড়ে ইন্ডিয়া জোটের ঝড় চলছে। আগামী ৪ জুন কেন্দ্রে ইন্ডিয়া জোট সরকার গড়তে চলেছে। রাহুলের দাবি, “আমার থেকে লিখিত গ্যারান্টি নিয়ে নিন, নরেন্দ্র মোদী আর প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন না।”