—প্রতীকী চিত্র।
ভোটের মুখে মেদিনীপুরে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের (আরএসএস) নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক হল বিজেপি নেতৃত্বের। গেরুয়া শিবির সূত্রে খবর, দিন দুই আগে শহরের একটি জায়গায় এই রুদ্ধদ্বার বৈঠক হয়েছে। সেখামে ছিলেন সঙ্ঘের ক্ষেত্র প্রচারক জলধর মাহাতো প্রমুখ।
জলধর এক সময়ে সঙ্ঘের প্রান্ত প্রচারক ছিলেন। প্রান্ত প্রচারক হিসেবে এক সময়ে উত্তরবঙ্গে, এক সময়ে দক্ষিণবঙ্গে কাজও করেছেন। ওই সূত্রে খবর, বৈঠকে জেলা বিজেপি নেতৃত্বকে জরুরি কয়েকটি বার্তা দিয়েছেন আরএসএস নেতৃত্ব। গেরুয়া শিবির সূত্রের দাবি, এটি সমন্বয় বৈঠক। তবে এ নিয়ে আরএসএস বা বিজেপি নেতৃত্বের কেউই কিছু বলতে নারাজ। জেলার এক আরএসএস নেতা বলেন, ‘‘সাংগঠনিক ব্যাপারে কিছু বলব না।’’ জেলা বিজেপির এক নেতাও বলছেন, ‘‘দলের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কিছু বলব না।’’
জানা গিয়েছে, ওই বৈঠকে ছিলেন মেদিনীপুরের বিজেপি প্রার্থী অগ্নিমিত্রা পালও। আর জলধরের পাশাপাশি বৈঠকে ছিলেন আরএসএসের জেলা কার্যবাহ সমীরণ মজুমদার প্রমুখ। ছিলেন বিজেপির রাজ্য সহ-সভাপতি তথা আরএসএসের প্রাক্তন জেলা কার্যবাহ শমিত দাশ, জেলা বিজেপির সভাপতি সুদাম পণ্ডিত, জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক শুভজিৎ রায় প্রমুখ। ঘন্টা খানেকের বৈঠকে বিধানসভা এলাকা ধরে ধরে সাংগঠনিক কাজকর্মের পর্যালোচনা হয়েছে। ভোটের প্রচার কী ভাবে চলছে, আগামী দিনে কী ভাবে প্রচার চালানো যেতে পারে, সে সব নিয়েও আলোচনা হয়েছে। বিজেপির এক নেতাকে ‘সতর্ক’ করে তাঁর দায়িত্বের কথা মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে। দলের অন্দরে অনুযোগ, ওই নেতা নিজেকে একটি জায়গায় সীমাবদ্ধ রাখছেন। অথচ তাঁর কার্যক্ষেত্র
আরও বড়।
মেদিনীপুর আসন বিজেপিই জিতবে, আশাবাদী সঙ্ঘের নেতৃত্ব। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এমন এক আরএসএস নেতার কথায়, ‘‘মেদিনীপুর বিজেপির জেতা আসন। এ বারও এক লক্ষের বেশি লিড হবে এখানে।’’ নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক বিজেপির এক নেতা জুড়ছেন, ‘‘প্রচারে অনেক কিছুই হবে। দেখতে পাবেন, কী কী হয়! হাতে কিছুটা সময় রয়েছে তো!’’ সূত্রের খবর, বিজেপি নেতা-কর্মীরা যেমন প্রচার চালাচ্ছেন, চালাবেন। পাশাপাশি, সঙ্ঘের সদস্যরাও প্রচারে নামছেন। বৈঠকে সঙ্ঘের বিভাগ প্রচারকদের পাশাপাশি ছিলেন সঙ্ঘের তরফে বিভিন্ন বিধানসভার ‘পালক’ হিসেবে যাঁরা দায়িত্ব পেয়েছেন, তাঁরাও। বিজেপি নেতা-কর্মীরা জনসংযোগ করবেন। সঙ্ঘের সদস্যরা জনসম্পর্ক করবেন। সঙ্ঘ-বিজেপি সমন্বয় রেখেই মানুষের
কাছে পৌঁছবে।
কয়েক বছরে জেলায় আরএসএসের শাখা বেড়েছে। শাখায় নতুন ভর্তি বেড়েছে। অযোধ্যায় রামমন্দিরের উদ্বোধন ঘিরে উন্মাদনা জেলায় ছড়িয়ে দিতে তৎপর ছিল সঙ্ঘ পরিবারও। তারপর ধুমধাম করে রামনবমীও পালন হয়েছে। লোকসভা ভোট পর্যন্ত এই উন্মাদনা জিইয়ে রাখতে তৎপর গেরুয়া শিবির। মার্চের গোড়ায় পশ্চিম মেদিনীপুরে এসে তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও কেশিয়াড়ির মতো এলাকায় সঙ্ঘের সংগঠন বৃদ্ধি নিয়ে সর্ক করে গিয়েছেন। মমতার নির্দেশ ছিল, কেশিয়াড়ির মতো এলাকায় দলের নেতাদের জনসংযোগ আরও বাড়াতে হবে।
তৃণমূলের জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা বলেন, ‘‘আরএসএস-বিজেপি হিন্দুত্বের জিগির তুলে সাম্প্রদায়িক মেরুকরণের চেষ্টা করছে। তবে এ সব করেও বিজেপির লাভ হবে না। মেদিনীপুরে তৃণমূল জিতবে।’’