শুভেন্দু অধিকারী। —ফাইল চিত্র।
তাঁর মুখে নিজের পুরনো দলের সমালোচনা শোনা যায় আকছার। কখনও কখনও সেই আক্রমণ মাত্রা ছাড়ায়। সেই শুভেন্দু অধিকারীর মুখে ভরা ভোট মরসুমে শোনা গেল তৃণমূলের প্রশংসা!
সম্ভবত এটাই প্রথম বার।
কাঁথি টাউন হলে বুধবার বিজেপির দলীয় বৈঠকে হাজির ছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু। সেখানেই মঞ্চে তিনি বলেন,‘‘আমি সব বিষয়ে তৃণমূলের বিরোধিতা করলেও বিরোধী দল হিসেবে ২০০১ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত তারা যে ধৈর্য রেখেছিল সেটা প্রশংসনীয়। কখনও কংগ্রেসের সাহায্য নিয়েছে। কখনও এনডিএতে ঢুকেছে, বেরিয়েছে। এসইউসি-র সঙ্গে জোট করেছে। আবার কখনও সিদ্দিকুল্লার সাহায্য নিয়েছে।’’
শুধু তৃণমূল নয়, এ দিন শুভেন্দুর মুখে ছিল বামেদের নীতির প্রশংসাও। বলেছেন, ‘‘আমি বামেদের সব সময় নিন্দা করি। তবে তাদের পঞ্চায়েত ব্যবস্থাকে সমর্থন করি। ভূমি রাজস্ব ব্যবস্থাকে সমর্থন করি। তবে এখনকার বামেদের নয়। কারণ, এরা ভোট কেটে চোরেদের জেতায়।’’
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করাচ্ছেন, বিজেপি রাজ্যে প্রধান বিরোধী দল। ফলে, ভোটের মুখে দলের নেতা-কর্মীদের চাঙ্গা করতে পুরনো কথা উত্থাপন করেছেন শুভেন্দু। বোঝাতে চেয়েছেন, সবুরে মেওয়া ফলে। এ দিন বৈঠকে উপস্থিত পূর্ব মেদিনীপুরে বিজেপির ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের জনপ্রতিনিধিদের উদ্দেশে শুভেন্দুর বার্তা, ‘‘আপনাদের অনেক ত্যাগ করতে হবে। কৃচ্ছ্রসাধন করতে হবে। সংযম পালন করতে হবে। সকলে সব কিছু না-ও পেতে পারেন। হয়তো গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান কিংবা বিরোধী দলনেতা নির্বাচন করা আমাদের ক্ষেত্রে ১০০% সঠিক হয়নি। তবু আমাদের রাজ্যে বিজেপি সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। দলকে ক্ষমতায় আনতে হবে। এটাই হবে আমাদের একমাত্র লক্ষ্য।’’
কাঁথি লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত ৬৫০ জন বিজেপির গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য, ৯৬ জন পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য, ৫ জন জেলা পরিষদ সদস্যকে নিয়ে এ দিন বৈঠক করেছেন বিরোধীদল নেতা। সেখানে তিনি আরও বলেছেন, ‘‘আসন্ন লোকসভা ভোটে যদি রাজ্যে বিজেপি ৩৫ আসন জিততে পারে তবে আগামী ২০২৬ সালে নয়, এ বছরই বিধানসভা ভোট হবে।’’
শুভেন্দুর এই প্রশংসাকে বিঁধতে ছাড়ছে না তৃণমূল। কাঁথি সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল সভাপতি পীযূষকান্তি পণ্ডার মন্তব্য, ‘‘সিবিআই আর ইডির হাত থেকে বাঁচতে বিরোধী দলনেতাকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে গালিগালাজ করতে হয়। কিন্তু তিনিও জানেন, তৃণমূলের মতো রাজনৈতিক দল ভারতবর্ষে নেই, যারা বহু ঘাত প্রতিঘাতের মধ্যে দিয়ে ক্ষমতায় এসেছে।’’