বিদায়ী সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী জন বার্লা। — ফাইল চিত্র।
আলিপুরদুয়ার কেন্দ্রে বিজেপির প্রার্থী হতে না পেরে শুভেন্দু অধিকারী এবং মনোজ টিগ্গাকে দায়ী করলেন বিদায়ী সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী জন বার্লা। তাঁর অভিযোগ, আগামী দিনে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হতে চেয়ে ঘুঁটি সাজাচ্ছেন রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা বিজেপির শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর কথায়, ‘‘মনোজ টিগ্গার কথার উপর বিশ্বাস করে শুভেন্দু আমায় বললেন, ‘তোমার সংগঠন ভেঙে গিয়েছে’।’’ তার পরেই বার্লার প্রশ্ন, ‘‘শুভেন্দু অধিকারী এ কথা কী করে বলেন?’’ মনোজের হয়ে প্রচার করতে পারবেন না বলেও জানিয়েছেন তিনি।
শুভেন্দু এ প্রসঙ্গে মুখ খোলেননি। তবে দলে বিরোধী নেতার ‘ঘনিষ্ঠ’ এক নেতার বক্তব্য, ‘‘বিজেপিতে কারও একার ইচ্ছায় বা কথায় প্রার্থী ঠিক হয় না। প্রার্থী বাছাইয়ের নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া আছে। এত দিন আলিপুরদুয়ারে দলের সাংসদ থেকে ওঁর (বার্লার) সেটা জানা উচিত।’’
প্রথম পর্বে বিজেপি যে ক’জন দলীয় প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে, বার্লা তাঁদের মধ্যে নেই। তিনি এ দিন দাবি করেন, এ পর্যন্ত তাঁর টিকিট না পাওয়ার পিছনে ‘‘শুভেন্দু আর মনোজ টিগ্গাই মূল ‘কালপ্রিট’। শুভেন্দু মুখ্যমন্ত্রী হতে চান। সে জন্য চান, ওঁর হাতে বেশি সাংসদ এবং বিধায়ক থাকুন। যাতে দর কষাকষি (বার্গেন) করতে সুবিধা হয়।”
চা বলয় প্রধান আলিপুরদুয়ার লোকসভা কেন্দ্রের বিভিন্ন বাগান এলাকায় ‘ভারতীয় টি ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন’ বা ‘বিটিডব্লিউইউ’-এর একটা বড় প্রভাব রয়েছে বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের ধারণা। বিজেপি দাবি করে, সংগঠনটি তাদের প্রভাবে চলে। সে সংগঠনের চেয়ারম্যান বার্লা-ই। জলপাইগুড়ির বানারহাটে সে সংগঠনের নেতাদের নিয়ে এ দিন একটি বৈঠক করেন বার্লা। বৈঠক শেষে তাঁর অভিযোগ, ‘‘মনোজ টিগ্গা ছল করে ও আমায় বদনাম করে টিকিট নিয়েছেন। মানুষ সেটা মানছেন না। আদিবাসীরাও মানছেন না। উনি বিটিডব্লিউইউ-ও ভাঙার চেষ্টা করেছেন। ভাঙতে পারেননি। অথচ, মনোজের কথায় ভরসা করে শুভেন্দু অধিকারী আমায় বললেন, ‘তোমার সংগঠন ভেঙে গিয়েছে’।’’ শুভেন্দুকে বার্লার চ্যালেঞ্জ, ‘‘এখানে এসে দেখুন, কার সংগঠন রয়েছে। মনোজ টিগ্গার, না আমার?’’ মনোজ পাল্টা বলেন, “উনি (বার্লা) প্রার্থী হননি বলেই এমন বলছেন। আর কেউ কাউকে কালপ্রিট বললেই তিনি যে কালপ্রিট হয়ে যান না, সেটাও যিনি এমন অভিযোগ করছেন, তাঁকে মনে রাখতে হবে।”
এ বার কি তবে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নির্দেশ এলেও মনোজের হয়ে প্রচার করবেন না? বার্লা বলেন, ‘‘ওর হয়ে প্রচার করতে পারব না।’’ দল ছাড়া বা বদলের কথা ভাবছেন? গত বার প্রায় আড়াই লক্ষ ভোটে জেতা সাংসদের জবাব, ‘‘এখনও সেটা ভাবিনি।’’