(বাঁ দিকে) তৃণমূল বিধায়ক গৌতম চৌধুরী। ভাইরাল ভিডিয়ো থেকে নেওয়া দৃশ্য (ডান দিকে)।
ভোট না দিলে বহুতল বাড়ির জলের লাইন কেটে দেওয়া হবে। ভোটারদের উদ্দেশে নাকি সেই ‘হুমকি’ দিয়েছেন হাওড়া উত্তর কেন্দ্রের তৃণমূল বিধায়ক গৌতম চৌধুরী। এমনই একটি ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়েছে সমাজমাধ্যমে (ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন)। গৌতমের নিজের দাবি, এমন কিছু তিনি বলেননি। এটা বিজেপির ‘কারসাজি’। অন্য দিকে, বিজেপি জানাচ্ছে, সংশ্লিষ্ট বিষয়টি নিয়ে তারা নির্বাচনে কমিশনে অভিযোগ করছে।
উত্তর হাওড়ার সালকিয়া অঞ্চলে অবাঙালি অধ্যুষিত বহুতল বাড়িগুলির বাসিন্দাদের মধ্যে বিজেপির প্রভাব রয়েছে। হাওড়া পুরসভা কিংবা বিধানসভা নির্বাচনের ভোটের ফলাফলেও তা প্রতিফলিত হয়েছে। গত লোকসভা নির্বাচনেও হাওড়া উত্তর বিধানসভা এলাকায় প্রায় পাঁচ হাজার ভোটে এগিয়েছিল বিজেপি। তাই এ বার ওই ভোটকে নিজেদের দিকে টানতে তৎপর তৃণমূল। লোকসভা ভোটে ঢালাও প্রচার করছে তৃণমূল। মাঠে নেমেছেন হাওড়া উত্তর কেন্দ্রের বিধায়ক গৌতম স্বয়ং।
রবিবার গোলাবাড়ি থানার কাছে একটি আবাসনের কাছে তিনি ভোটের প্রচারে গিয়েছিলেন। ওই আবাসনের ভোটার সংখ্যা প্রায় ন’শো। বিজেপির অভিযোগ, সেখানে বিধায়ক ভোটারদের হুমকি দিয়েছেন। ছড়িয়ে পড়া ভিডিয়োয় (যার সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন) এক জনকে বলতে শোনা যায় ওই আবাসনের বাসিন্দারা যেন ভোটের দিন বাড়ি থেকে না বার হন। আর যদি বারই হন, তা হলে তিনি বুঝে নেবেন কাকে ভোট দিয়েছেন ভোটারেরা। তার পর ওই বক্তাকে বলতে শোনা যায়, ‘‘যদি বিজেপিকে ভোট দেওয়া হয় তা হলে জলের লাইন কেটে দেওয়া হবে।’’ বিজেপির দাবি, এই হুমকি দিয়েছেন গৌতম স্বয়ং। বিজেপির রাজ্য সম্পাদক উমেশ রাই বলেন, ‘‘যেখানে নির্বাচন কমিশন কোটি কোটি টাকা খরচ করছে নির্বাচনের জন্য, মানুষকে নির্ভয়ে ভোট দিতে আবেদন করছে, সেখানে এক জন জনপ্রতিনিধি কী ভাবে মানুষকে ভোট না দিতে বলেন? তিনি কী ভাবে বলতে পারেন যে, টিএমসিকে ভোট না দিলে জলের লাইন কেটে দেওয়া হবে?’’ তিনি জানান, এ নিয়ে বিজেপি নির্বাচন কমিশন এবং পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করছে।
অন্য দিকে, গৌতম স্বীকার করেছেন যে সংশ্লিষ্ট জায়গায় তিনি ভোটের প্রচারে গিয়েছিলেন। কিন্তু এমন কোনও হুমকি দেওয়ার কথা তিনি অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘পাঁচ বছর প্রত্যেক দিন, চব্বিশ ঘণ্টা আমি মানুষের পাশে থাকি। আমরা জল দিই, রাস্তা তৈরি করি। মানুষকে নিরাপত্তা দিই।’’ পর ক্ষণেই গৌতমের সংযোজন, ‘‘তা হলে মানুষ কেন আমাদের ভোট দেবেন না? আর সব ভোটারের ভোট দেওয়ার অধিকার আছে।’’