তমলুক লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী দেবাংশু ভট্টাচার্য। ছবি: সংগৃহীত।
তমলুক লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী দেবাংশু ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে আজ অভিযোগ জানাল বিজেপি। কিছু দিন আগে বসিরহাটের বিজেপি প্রার্থী তথা সন্দেশখালির নির্যাতিতা রেখা পাত্রর স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের তথ্য সমাজমাধ্যমে প্রকাশ করেছিলেন দেবাংশু। তাতে তিনি দেখাতে চেয়েছিলেন, রেখা পাত্রও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের উপভোক্তা। ঘটনা হল, ওই কার্ডে রেখা পাত্রের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের বৃত্তান্তও ছিল।
নির্বাচন কমিশনে চিঠি দিয়ে বিজেপির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অরুণ সিং ও হরদীপ পুরীর বক্তব্য, যে তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে তা কোনও ব্যক্তির একান্ত ব্যক্তিগত। প্রকল্পের জন্য সরকারের কাছে ওই তথ্য দিয়েছিলেন রেখা পাত্র। রাজ্য সরকার ছাড়া কারও কাছে ওই তথ্য থাকা সম্ভব নয়। রাজ্যের তৃণমূল সরকার সেই গোপন তথ্য রাজনৈতিক কারণে ফাঁস করেছে। বিজেপির অভিযোগ, বাংলার সমস্ত উপভোক্তার ব্যক্তিগত তথ্য এভাবেই রাজ্য সরকারের থেকে তৃণমূলের কাছে চলে গিয়েছে বলে তাঁরা আশঙ্কা করছেন।
আবার রাজ্যে সমান স্তরে লড়াইয়ের আশ্বাস চেয়ে এবং আগামী ৬২ দিন কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলির তদন্ত বন্ধ রাখার অনুরোধ নিয়ে আজই বিকেলে তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েনের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল কমিশনের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চের সঙ্গে বৈঠক করে। সেই প্রতিনিধি দলে উপস্থিত দোলা সেন, পুরীর অভিযোগের উত্তরে বলেছেন, ‘চোরের মায়ের বড় গলা!’
কমিশনের কাছে তৃণমূলের মূল দাবি, ভোটের ফলাফল পর্যন্ত কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলির তৎপরতা বন্ধ রাখতে হবে, বিরোধী দলগুলির জন্য সমান স্তরের লড়াইযের ময়দান প্রস্তুত করতে হবে। কমিশনে তাঁরা জানিয়েছেন, নির্বাচন কমিশনকে শুধুমাত্র নিরপেক্ষ হলেই চলবে না, কমিশন যে নিরপেক্ষ ভাবে কাজ করছে, তা যেন সাধারণ জনগণের বোধগম্য হয়। প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার নির্বাচন কমিশনে স্মারকলিপি জমা দেয় তৃণমূল। তার পর আজ সেই বিষয়গুলি নিয়েই আলোচনা হয় কমিশনের ফুল বেঞ্চের সঙ্গে। তৃণমূলের দাবি রবিবার রামলীলার সভায় তুলে ধরেছেন বিরোধী দলের নেতারা।
আজ দোলা সেন বলেন, “ইডির উদ্ধার করা টাকা কী ভাবে ব্যবহার করা হবে, তা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদী কথা বলেছেন কৃষ্ণনগরের প্রার্থীর সঙ্গে। এটা অবশ্যই নির্বাচনী বিধিভঙ্গ। তিনি কালো টাকা ফেরত এনে দেশের মানুষের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ১৫ লক্ষ টাকা করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কৃষ্ণনগরের বিজেপি প্রার্থীকে প্রধানমন্ত্রী মোদী যা বলেছেন, সেটাও জুমলা। কারণ, ইডির তদন্তগুলি বিচারাধীন। সেই মামলা কবে মিটবে, তা অজানা। মামলা হলেও হয়ত ২০ বছর লাগবে। তত দিন মোদীবাবু কোথায় থাকবেন! আবার মামলায় যে ইডি জিতবে এমন কোনও নিশ্চয়তাও নেই।” এই প্রতিশ্রুতি দিয়ে সাধারণ মানুষকে প্রধানমন্ত্রী বিভ্রান্ত করছেন বলে অভিযোগ তৃণমূলের।