(বাঁ দিক থেকে) অর্জুন সিংহ এবং পুত্র পবন সিংহ। —ফাইল চিত্র।
কয়েক দিন আগে তাঁর বাড়ির সামনে আচমকাই একের পর এক সিসি ক্যামেরা লাগিয়েছে প্রশাসন। ব্যারাকপুরের বিজেপি প্রার্থীর অভিযোগ, সব মিলিয়ে মোট ৮২টি সিসি ক্যামেরা দিয়ে তাঁর বাড়ির উপর নজরদারি করছে রাজ্য সরকার। এমনকি, কে বা কারা তাঁর বাড়িতে আসছেন, কারা বাড়ি থেকে বেরোচ্ছেন, সে সব দেখে ওই ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করছে পুলিশ।
ইতিমধ্যে ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ক্ষুণ্ণ হচ্ছে বলে অভিযোগ করে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা করেছেন তৃণমূল থেকে সদ্য বিজেপিতে ফিরে আসা অর্জুন। ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থীর দায়ের করা মামলার শুনানি হতে পারে আগামী মঙ্গলবার। অর্জুন-পুত্র ভাটপাড়ার বিধায়ক পবন সিংহের দাবি, শুধু যে সিসি ক্যামেরা দিয়ে তাঁদের পরিবারের সবার উপর নজরদারি করা হচ্ছে তা-ই নয়, তাঁদের কথাবার্তাও আড়ি পেতে শোনা হচ্ছে। ওই বিজেপি বিধায়ক বলেন, ‘‘ভিডিয়ো এবং অডিয়ো— দুই ‘ট্যাপিং’ করা হচ্ছে।’’ তাঁর অভিযোগ, তাঁর বাবা তৃণমূল থেকে বিজেপিতে আসার পরই নজরদারির কড়াকড়ি শুরু হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘গোপনীয়তা ভেঙে বেআইনি ভাবে পুলিশ নজরদারি চালাচ্ছে।’’ যদিও পুলিশ প্রশাসনের তরফে এ নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। অন্য দিকে, ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী পার্থ ভৌমিক এ নিয়ে কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছেন অর্জুনকে। তাঁর দাবি, যে সিসি ক্যামেরাগুলোর কথা বলা হচ্ছে, তা অনেক দিন আগের থেকেই লাগানো ছিল। তাঁর কথায়, ‘‘রাস্তায় তো ক্যামেরা (সিসি) লাগানো থাকে। তাতে ওঁর অসুবিধা কোথায় ? ‘মজদুর ভবনে’ (অর্জুনের বাড়ির নাম) কি শুধু ক্রিমিনালরাই যাতায়াত করে? তার জন্য অসুবিধা হচ্ছে?’’
২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন অর্জুন। বিজেপি লোকসভার টিকিট দেয়। ব্যারাকপুর কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়ে সংসদে যান অর্জুন। কিন্তু ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে তৃণমূলের বিপুল ভাবে জয়ের পর আবার পুরনো দলে ফেরেন ব্যারাকপুরের সাংসদ। গত ১০ মার্চ ব্রিগেডে তৃণমূল লোকসভার প্রার্থিতালিকা ঘোষণার পর আবার ‘বিদ্রোহ’ করেন ব্যারাকপুরের অর্জুন। তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বকে নিশানা করে তাঁর অভিযোগ, লোকসভা ভোটে টিকিট দেওয়ার কথা বলে তাঁকে তৃণমূলে নিয়ে আসা হয়েছিল। টিকিট-না দিয়ে তাঁর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে ঘাসফুল শিবির। তার পর গত ১৫ মার্চ আবার বিজেপিতে যোগ দেন তিনি। দিল্লিতে অর্জুনের সঙ্গে বিজেপিতে যোগ দেন তৃণমূলের টিকিটে জয়ী সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারীও।