প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। — ফাইল চিত্র।
বিজেপির ‘আমার বুথ শক্তিশালী বুথ’ কর্মসূচিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বুধবার বাংলার বুথ স্তরের দলীয় কর্মীদের সঙ্গে কথোপকথন করছিলেন। একের পর এক কর্মীর কাছ থেকে কখনও শুনছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ, কখনও দুর্নীতির নমুনা। কাউকে লড়াইয়ের জন্য বাহবা দিচ্ছিলেন তিনি, কাউকে আবার আরও নিবিড় প্রচারের পরামর্শ দিচ্ছিলেন। কিন্তু হঠাৎই ছন্দপতন হল দক্ষিণ মালদহের এক বিজেপি কর্মীর প্রশ্নে। সরাসরি প্রধানমন্ত্রীকে তিনি প্রশ্ন করলেন, আবাস যোজনা, একশো দিনের কাজ নিয়ে তৃণমূল প্রচার করছে কেন্দ্র তাদের টাকা আটকে দিচ্ছে। মানুষ সেটা বিশ্বাসও করছেন। এর পাল্টা প্রচার কী হতে পারে?
লোকসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে বেশ কয়েক মাস আগে থেকে প্রধানমন্ত্রী ‘আমার বুথ, শক্তিশালী বুথ’ কর্মসূচি শুরু করেছেন। প্রতিটি রাজ্যের বুথ স্তরের কর্মীদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী ভার্চুয়াল মাধ্যমে বার্তালাপ করছেন। সেই কর্মসূচিতে এ দিন প্রশ্ন করার সুযোগ পান মালদহ দক্ষিণ লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত ইংরেজবাজার বিধানসভার এক বুথ সভাপতি শুভঙ্কর সাহা। তিনি প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, “তৃণমূল যে দুর্নীতি করছে, মানুষ সেটা জানে। কিন্তু তৃণমূল প্রচার করছে, কেন্দ্র আবাস যোজনার টাকা আটকে রেখেছে। এই প্রচার মানুষের মনে গেঁথে গিয়েছে। এর পাল্টা প্রচার কী হতে পারে?” উত্তরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আপনারা মানুষের বাড়ি বাড়ি যান। প্রচার করুন, তৃণমূল কেন্দ্রের টাকা আত্মসাৎ করেছে। হিসেব দিতে পারছে না বলে কেন্দ্র টাকা দিতে পারছে না।” এর পরেই দ্রুত প্রসঙ্গান্তরে চলে যান প্রধানমন্ত্রী।
কর্মসূচিতে এ দিন আগাগোড়া তৃণমূলের ‘সন্ত্রাস’ নিয়ে সরব ছিলেন প্রধানমন্ত্রী। দলীয় কর্মীরা যে ভাবে এই ‘সন্ত্রাসে’র মধ্যে দাঁড়িয়ে দলকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, তার জন্য তিনি অভিবাদনও জানিয়েছেন। কর্মীদের প্রশ্ন করেছেন, ‘সন্ত্রাস’ প্রতিহত করে প্রচার ঠিক মতো হচ্ছে কি না। মালদহ উত্তর লোকসভা কেন্দ্রের এক মহিলা কর্মী প্রধানমন্ত্রীকে জানান, ‘সন্ত্রাস’ রুখতে তাঁরা দলবদ্ধ ভাবে প্রচারে বেরোচ্ছেন। কর্মীদের কাছে শুধু তৃণমূল নয়, দেশের সব বিরোধী রাজনৈতিক দলের দুর্নীতি নিয়ে সরব হয়েছেন মোদী। সেই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, এই দুর্নীতির বিরুদ্ধেই তাঁর লড়াই। কোচবিহারের রাসলীলা ময়দানে আজ, বৃহস্পতিবারই নির্বাচনী সমাবেশ করতে আসার কথা প্রধানমন্ত্রীর। সেই প্রচার কর্মসূচির কথা বলতে গিয়েই এ দিন রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘প্রধানমন্ত্রী বুথ স্তর থেকে প্রার্থী পর্যন্ত সকলের সঙ্গেই কথা বলছেন। সাধারণ মানুষ ও নেতা-কর্মী, সকলের সঙ্গে কথা বলবেন প্রধানমন্ত্রী।’’