—প্রতীকী চিত্র।
সামনে ওজনদার সব রাজনৈতিক দল। তাদের সবার পিছনে যাঁরা, দৃশ্যত তাঁরা গুনতির মধ্যেও নেই। তবু, লড়াইয়ের ময়দানে জীবন কাটানো মানুষগুলি লোকসভা ভোটেও বিনা লড়াইয়ে এতটুকু মাটি ছাড়তে রাজি নন। কর্মজীবনে হাতে ধরেছেন অত্যাধুনিক অস্ত্র। এ বার দলীয় পতাকা হাতে তুলে লোকসভা ভোটের ময়দানে নেমেছেন প্রাক্তন সেনাকর্মীরা।
দলের নাম ‘ভারতীয় জওয়ান কিষাণ পার্টি’। মুম্বই থেকে মুর্শিদাবাদ, তেলঙ্গানা থেকে বসিরহাট— সারা দেশে ১২১টি কেন্দ্রে তাদের প্রার্থীরা ভোটে লড়তে নেমেছেন। দলের জাতীয় সভাপতি অঙ্কুশ নারায়ণ নিজেই জানাচ্ছেন, শূন্য থেকে শুরু করেছেন তাঁরা। এই ভোটে তৃতীয়-চতুর্থের উপরে যে উঠতে পারবেন না, সে কথাও জানেন। তবুও ২০২৯ সালে দেশ জুড়ে তাঁদের উত্থান হবে, এই লক্ষ্যেই ২০২৪ থেকে পথ চলা শুরু করেছে ভারতীয় জওয়ান কিষাণ পার্টি। ২০২২ সালে রেজিস্ট্রেশন পেয়েছে মূলত মহারাষ্ট্র-কেন্দ্রিক এই দলটি। শর্ত হল, কেউ ভোটে প্রার্থী হতে চাইলে তাঁকে প্রাক্তন সেনাকর্মী হতে হবে।
এ বারের লোকসভা ভোটে রাজ্যের বসিরহাট ও মুর্শিদাবাদে প্রার্থী দিয়েছে দলটি। মুর্শিদাবাদে ভোট হয়ে গিয়েছে। বসিরহাটে ভোট আজ, শনিবার। দলীয় প্রতীক হিরে চিহ্ন নিয়ে সেখানকার প্রার্থী ইমরান আলি সর্দার বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে তাঁর দলের বিশেষত্ব বোঝানোর চেষ্টা করেছেন। ইমরানের প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট, তাঁর কন্যা মনিরা পরভিন। মেয়েকে নিয়েই ইমরান ভোটের প্রচারে গিয়েছেন সন্দেশখালিতে। তাঁর কথায়, ‘‘চাকরিজীবনে দেশের জন্য এক ধরনের কাজ করেছি। এখন অন্য ধরনের কাজ দেশের জন্যই করব। অন্যান্য দল পরীক্ষিত। মানুষের তো উন্নতি হয়নি। সন্দেশখালির মানুষ বিভ্রান্ত, কার হাত ধরবেন তা নিয়ে। আমরা আমাদের কথা বলার চেষ্টা করেছি। বাধাও পেয়েছি অন্য দলের থেকে। তবু লড়ছি।’’
বলিউডের চিত্র পরিচালক রাজকুমার সন্তোষী ২৬ বছর আগে প্রাক্তন সেনাকর্মীদের
লড়াইয়ের একটি গল্প সামনে রেখে ‘চায়না গেট’ নামে একটি ছবি করেছিলেন। তাতে দেখানো হয়েছিল, মিশন ব্যর্থ হওয়ার কারণে কোর্ট মার্শাল হওয়া কয়েক জন প্রাক্তন সেনাকর্মী এক ডাকাতের হাত থেকে একটি গ্রামের বাসিন্দাদের শেষ পর্যন্ত মুক্তি দিতে পেরেছিলেন।
সেই ছবির প্রসঙ্গ টেনে অঙ্কুশ জানাচ্ছেন, সীমান্তে চাকরি করতে গিয়ে সেনাকর্মীদের মধ্যে দেশের জন্য কিছু করার সাহস আর জেদ তৈরি হয়। সেই সাহস আর জেদ সম্বল করেই তাঁরা প্রথম লোকসভা নির্বাচন লড়তে নেমেছেন। অঙ্কুশ নিজে লড়ছেন পুণের সিরুর থেকে।
এমন ধরনের দল তৈরির কারণ কী? অঙ্কুশের কথায়, ‘‘কংগ্রেস, বিজেপি বা আঞ্চলিক দলগুলি যেখানে যখন শাসন করেছে, মানুষের সার্বিক উন্নতি হয়নি। শুধু দুর্নীতি হয়েছে। এক জন সেনার ভাবমূর্তি পরিষ্কার। তাই তাঁকে মানুষ বিশ্বাস করেন, করছেনও। সেই জন্যই মহারাষ্ট্রে ইতিমধ্যে মানুষ আমাদের পাশে দাঁড়িয়ে ভোটের খরচ জুগিয়েছেন।’’ যদিও অন্য রাজ্যে প্রার্থীরা নিজেদের খরচ নিজেরাই জুটিয়েছেন বলে জানান অঙ্কুশ। তিনি আরও জানান, চলতি বছরে মহারাষ্ট্র ও হরিয়ানায় বিধানসভা নির্বাচনেও তাঁদের দল অংশ নেবে।