বসিরহাটের বিজেপি প্রার্থী রেখা পাত্র। — ফাইল চিত্র।
তৃণমূলের তরফে জানানো হয়েছিল, তিনি স্বাস্থ্য সাথী-সহ রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের উপভোক্তা। সেই সমস্ত নথি সমাজমাধ্যমে পোস্টও করা হয়েছিল। পাশাপাশি, সন্দেশখালির তৃণমূল বিধায়ক সুকুমার মাহাতো বিষয়টি নিয়ে কটাক্ষ করেছিলেন বসিরহাটের বিজেপি প্রার্থী রেখা পাত্রকে। এ বার তা নিয়ে পাল্টা প্রতিক্রিয়া জানালেন রেখা। প্রশ্ন তুললেন, স্বাস্থ্য সাথী কার্ড দিয়েছে বলেই কি সবাইকে তৃণমূল করতে হবে? একই সঙ্গে বিজেপি বিষয়টি জানিয়েছে নির্বাচন কমিশনকে। পাশাপাশি, তমলুকের তৃণমূল প্রার্থী দেবাংশু ভট্টাচার্যের নামে রেখার আইনজীবী তফসিলি কমিশন এবং মহিলা কমিশনেও লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
বুধবার দিনভর সন্দেশখালিতে প্রচার করেন রেখা। তার পর তিনি গিয়েছিলেন কল্যাণীতে। সেখানকার এমসে ভর্তি ছিলেন তাঁর কন্যা। সেখানে গিয়ে রেখাও অসুস্থ হয়ে পড়েন। বুধবার রাতেই তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয় এমস থেকে। এমস সূত্রে খবর, রেখার শরীরে জলের ঘাটতির কারণে তাঁর ‘ডিহাইড্রেশন’ হয়ে গিয়েছিল। চিকিৎসকেরা রেখাকে সাত দিন ‘বেড রেস্ট’ নেওয়ার পরামর্শ দেন। রেখার সেই অসুস্থতা নিয়ে মুখ খোলেন স্থানীয় বিধায়ক সুকুমার। তিনি বলেন, ‘‘শুনেছি, রেখা পাত্র অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। মাননীয় মুখ্যমন্ত্রীর স্বাস্থ্য সাথী কার্ড রেখা পাত্রের আছে। শুধু তাই নয়, রেখা পাত্র লক্ষ্মীর ভান্ডারও পান। আমাদের দিদির সব প্রকল্প রেখা পাত্র পান। যাঁরা দিদির বিরোধিতা করছেন, তাঁরা একটু ভেবে দেখুন, দিদির স্বাস্থ্য সাথীর কার্ডেই কিন্তু রেখা পাত্রের চিকিৎসা হতে পারে।’’
সুকুমারকে পাল্টা জবাব দিয়েছেন রেখাও। সন্দেশখালির আন্দোলনের ‘মুখ’ পাল্টা বলেন, ‘‘তৃণমূল কি বলতে চাইছে যে, সরকারি সুবিধা নিতে গেলে তৃণমূল করতে হবে?’’ এর পরেই সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর প্রসঙ্গ টেনে এনে রেখা বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী যে সুযোগ-সুবিধাগুলো দেন পশ্চিমবাংলায়, তিনি কিন্তু এক বারও বলেননি যে, এই সুযোগ-সুবিধাগুলো পেতে গেলে বিজেপি করো। আর করোনা টিকা, যেটা নরেন্দ্র মোদী দিয়েছেন, যেটা নিয়ে বেঁচে আছেন তৃণমূলের নেতারা। এক বারও নরেন্দ্র মোদী বলেননি যে, আমি টিকা দিয়ে ওদের বাঁচিয়ে রেখেছি।’’ একই সঙ্গে বসিরহাটের বিজেপি প্রার্থী অভিযোগ করেন, ‘‘দিদির ভাইপো স্বাস্থ্য সাথীতে চিকিৎসা করান না। চিকিৎসা করাতে যান আমেরিকায়।’’
সরকারি উপভোক্তা হিসাবে রেখার যাবতীয় তথ্য বৃহস্পতিবার তৃণমূল সমাজমাধ্যমে দিয়েছে বলে অভিযোগ করে বিজেপি। তমলুকের তৃণমূল প্রার্থী দেবাংশু ভট্টাচার্যও একই তথ্য নিজের সমাজমাধ্যমে তুলে ধরে লেখেন, ‘‘বিজেপি প্রার্থী রেখা পাত্রও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নের স্বাদ পেয়েছেন।’’
এর বিরুদ্ধে তফসিলি কমিশন এবং মহিলা কমিশনে দেবাংশুর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন রেখার আইনজীবী। তাঁর দাবি, দেবাংশুর পোস্টে শালীনতা লঙ্ঘিত হয়েছে। এ ছাড়াও দেবাংশুর পোস্টে রেখার গোপনীয়তার মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন হয়েছে বলেও দাবি করেছেন তাঁর আইনজীবী। আইনজীবী তাঁর মক্কেল রেখার তফসিলি এবং মহিলা পরিচয়ের কথাও চিঠিতে উল্লেখ করেছেন।