অরবিন্দ কেজরীওয়াল। —ফাইল চিত্র।
দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী তথা আপ নেতা অরবিন্দ কেজরীওয়ালের ‘বেফাঁস’ মন্তব্যের জেরে ক্ষোভ প্রকাশ করল বাংলাদেশের আওয়ামী লিগ সরকার। আজ এক সাক্ষাৎকারে নরেন্দ্র মোদীর তৃতীয় দফার সম্ভাবনা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে কেজরীওয়াল বলেছেন, “ওরা সংবিধান বদলে দেবে এবং দেশ স্বৈরতন্ত্রের দিকে এগোবে। হয় কোনও নির্বাচন হবে না, অথবা হলে হবে রাশিয়ার মতো, যেখানে পুতিন দেশের সব বিরোধীদের হয় জেলে ঢুকিয়েছেন অথবা হত্যা করেছেন। বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সবাইকে জেলে পুরে বিপুল ব্যবধানে জিতেছেন।”
বাংলাদেশের সাম্প্রতিক জাতীয় নির্বাচনের প্রতি ভারতীয় রাজনীতিকের এই মন্তব্যে স্বাভাবিক ভাবেই ক্ষোভ সে দেশের শাসক আওয়ামী লিগের অন্দরে। প্রধানমন্ত্রীর সহায়ক পদে রয়েছেন বিপ্লব বড়ুয়া। তাঁর প্রতিক্রিয়া, “এই মন্তব্য অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক, অপ্রত্যাশিত এবং অনভিপ্রেত। মনে হয়, বাংলাদেশের রাজনৈতিক ঘটনাবলীর পূর্বাপর সম্পর্কে অরবিন্দ কেজরীওয়ালের কাছে সম্যক তথ্য ছিল না। আমাদের জাতীয় নির্বাচনে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের ইচ্ছারই প্রতিফলন ঘটেছে। গণতান্ত্রিক এবং সাংবিধানিক কাঠামোর মধ্যেই সবাই রায় দিয়েছেন।” তাঁর কথায়, “নিজের দেশে ভোটের মুখে রাজনৈতিক কারণে বা কৌশলের অঙ্গ হিসাবে তাঁকে অনেক কিছুই হয়তো বলতে হচ্ছে। কিন্তু তা অসত্য এবং বাস্তব বিবর্জিত।”
পাশাপাশি আওয়ামী লিগের যুগ্ম সচিব মাহবাবুল হক হানিফের কথায়, “দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অত্যন্ত জনপ্রিয় নেতা। কিন্তু এ ক্ষেত্রে মনে হয়, তিনি না জেনেই তাঁর সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্য করেছেন। কারণ জামাত এবং বিএনপি জোটের যারা নির্বাচনটিকেই বানচাল করতে চেয়েছিল, তাদের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। গণতন্ত্রের সবচেয়ে বড় প্রকাশ ভোটে। জামাত বিএনপি গোষ্ঠীর দাবি ছিল, নির্বাচনের আগেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করতে হবে। এর পর সেই দাবিতে আন্দোলনের নামে হিংসা শুরু করে তারা। রাস্তায় যানবাহনে আগুন লাগায়। গত বছরের ২৬ অক্টোবর প্রকাশ্যে পুলিশকে হত্যা করে। প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা করে। পুলিশ হাসপাতালে ঢুকে ৮টি গাড়ি জ্বালিয়ে দেয়। এই সব ঘটনায় যাঁরা জড়িত ছিলেন, তাঁদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা হয় এবং তার পর আইন মাফিক গ্রেফতার করা হয়। রাজনীতিবিদরা আইনের চেয়ে বড় নন।”