আরাবুল ইসলাম। —ফাইল চিত্র।
ভাঙড় ২ ব্লক তৃণমূলের আহ্বায়ক (কনভেনর) পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হল তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলামকে।
এক সময়ে ভাঙড়ের দাপুটে নেতা আরাবুল বর্তমানে জেলবন্দি। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে আরবুলকে ছাড়াই লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছে তৃণমূল। আহ্বায়ক পদ থেকে আরাবুলকে সরিয়ে দলের সংগঠন থেকে তাঁকে ছেঁটে ফেলার বার্তা দেওয়া হল বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। ইতিমধ্যে ভাঙড়ে দলের বিভিন্ন কর্মী বৈঠকে আরাবুল ইসলাম যে আর ব্লক তৃণমূলের আহ্বায়ক নেই, সে কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। ভাঙড় ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি পদে অবশ্য থাকছেন আরাবুল।
আইএসএফ কর্মী মহিউদ্দিন মোল্লার খুনের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৮ ফেব্রুয়ারি উত্তর কাশীপুর থানার পুলিশ আরাবুলকে গ্রেফতার করে। তারপর থেকে ভাঙড়, পোলেরহাট থানা এলাকায় বিভিন্ন গন্ডগোলের মামলায়ও নাম জড়ানো হয় আরাবুলের। তৃণমূল সূত্রের খবর, আরাবুলের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ক্ষেত্রে তোলাবাজি সহ নানা অভিযোগ রয়েছে। যে কারণে তাঁকে দলের সাংগঠনিক পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। আপাতত তিনি ভাঙড় ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি পদে থাকছেন। জেল থেকে ফিরে আসার পরে তিনি যদি নিজেকে ‘সংশোধন’ না করেন, দলের নিয়ন্ত্রণে না থাকেন, তা হলে পরবর্তী সময়ে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির পদ থেকেও তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হতে পারে।
তৃণমূলের জন্মলগ্ন থেকে আরাবুল দলের সঙ্গে আছেন। ২০০৬ সালে তিনি ভাঙড় বিধানসভা কেন্দ্র থেকে জিতে বিধায়ক হন। তারপর থেকে কখনও পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, কখনও সহ সভাপতি হয়েছেন। ২০১৮ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে গ্রেফতার হয়েছিলেন আরাবুল। ওই সময়ে জেলে থেকেই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জয়ী হয়ে পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি হন। ২০২৩ পঞ্চায়েত নির্বাচনে জয়ী হয়ে সভাপতি হন।
আরাবুল জেলে যাওয়ার পরে এখন ভাঙড়ের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন দলের পর্যবেক্ষক সওকাত মোল্লা। আইএসএফ ‘গড়’-এ তৃণমূল কর্মীদের মনোবল চাঙ্গা করতে এবং হারানো জমি ফিরে পেতে মিটিং, মিছিল, কর্মী বৈঠকের উপরে জোর দিচ্ছেন। আরাবুল অনুগামী থেকে শুরু করে তাঁর বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর সব নেতাকে ইতিমধ্যে প্রায় এক ছাতার নীচে নিয়ে চলে এসেছেন বলে মনে করছে দলের একটি সূত্র।
দিন কয়েক আগে আরাবুলের আইনজীবী দাবি করেছিলেন, আরাবুলকে ফাঁসানোর জন্য চক্রান্ত করছেন সওকাত। ওই ঘটনার পর থেকে আরাবুল পুত্র জেলা পরিষদ সদস্য হাকিমুল ইসলামকেও দলের বিভিন্ন মিটিং-মিছিলে ডাকা হচ্ছে না বলে তৃণমূল সূত্রে জানানো হয়েছে।
যদিও অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন হাকিমুল। তিনি বলেন, “আমি ও আমার বাবা দলের অনুগত সৈনিক। দলের জন্য আমরা সব কিছু করতে পারি।” সওকাত বলেন, “দলের নির্দেশে আপাতত আরাবুল ইসলামকে ভাঙড় ২ ব্লক তৃণমূলের আহ্বায়ক পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। আপাতত তিনি ভাঙড় ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি থাকছেন।”