কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। —ফাইল ছবি।
পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর (পিওকে) নিয়ে ‘প্রশ্ন তোলা’য় কংগ্রেসকে বিঁধলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সেই সঙ্গে তাঁর বক্তব্য, পিওকে-র প্রতিটি ইঞ্চি ভারতের। কোনও শক্তি তা ছিনিয়ে নিতে পারবে না। অন্য দিকে, পাকিস্তান সরকারের অতিরিক্ত কর এবং প্রায় ৭০ জন আন্দোলনকারী আটক হওয়ার জেরে প্রবল গোলমাল হয়েছে পিওকে-র মিরপুর জেলার ডাডিয়াল তহসিলে।
সম্প্রতি কংগ্রেস নেতা মণিশঙ্কর আইয়ারের ১৫ এপ্রিল দেওয়া সাক্ষাৎকারের ভিডিয়ো সামনে এনে আক্রমণ শুরু করেছে বিজেপি। তাতে মণিশঙ্করকে বলতে শোনা যাচ্ছে, পাকিস্তানের পরমাণু অস্ত্র আছে। তাই ভারতের উচিত পাকিস্তানকে সম্মান করা। ঝাড়খণ্ডের খুঁটিতে এক জনসভায় আজ শাহ বলেন, ‘‘পাকিস্তানের পরমাণু অস্ত্র আছে বলে তাদের সম্মান করতে বলছেন মণিশঙ্কর আইয়ার। কয়েক দিন আগে ইন্ডিয়া জোটের নেতা ফারুক আবদুল্লা বলেছেন পিওকে নিয়ে কথা বলা উচিত নয়। কারণ, পাকিস্তানের পরমাণু অস্ত্র রয়েছে। আমি কংগ্রেস ও ইন্ডিয়া জোটকে বলতে চাই পিওকে ভারতের। কোনও শক্তি তা ছিনিয়ে নিতে পারবে না।’’
লোকসভা ভোটের মরসুমে পিওকে নিয়ে সরব হয়েছেন বিজেপি তথা নরেন্দ্র মোদী সরকারের শীর্ষ নেতারা। সম্প্রতি প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ দাবি করেন, পিওকে-র বাসিন্দারাই জম্মু-কাশ্মীরের সঙ্গে সংযুক্ত হতে চাইবেন। বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করও। আজ কংগ্রেসকে খোঁচা দিয়ে শাহের বক্তব্য, ‘‘আমি জানি না কংগ্রেসের কী হয়েছে। সংসদে সর্বসম্মতিক্রমে প্রস্তাব পাশ করা হয়। সেই প্রস্তাব অনুযায়ী, পিওকে ভারতের অংশ। এখন আপনারা পরমাণু বোমার কথা বলে পিওকে-র মর্যাদা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি করছেন।’’
অন্য দিকে এ দিন পাকিস্তান সরকারের চাপানো অতিরিক্ত কর ও আন্দোলনকারীদের আটক করার প্রতিবাদে প্রবল গোলমাল হয়েছে পিওকে-র মিরপুরের একটি এলাকায়। আগামিকাল অতিরিক্ত কর ও মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে মিছিলের ডাক দিয়েছিল পিওকে-র জম্মু-কাশ্মীর জয়েন্ট আওয়ামি অ্যাকশন কমিটি। তাদের দাবি, ২ ফেব্রুয়ারি হওয়া দ্বিপাক্ষিক সমঝোতা মানছে না পাকিস্তান সরকার। আন্দোলনের মেরুদণ্ড ভাঙতে গত কাল ভোর থেকেই জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটির বিরুদ্ধে অভিযানে নামে পাক সরকার। পিওকে-র প্রশাসনিক কেন্দ্র মুজফ্ফরাবাদে কমিটির নেতা শৌকত নওয়াজ় মির-সহ বেশ কয়েক জন নেতার বাড়িতে হানা দেয় বাহিনী। দুই ছাত্র নেতা-সহ জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটির ৮ জন শীর্ষ নেতাকে আটক করা হয়। এর পরেই বিক্ষোভ শুরু হয় মিরপুরের ডাডিয়াল তহসিলে। বাহিনীকে লক্ষ্য করে পাথর ছুড়তে শুরু করেন আন্দোলনকারীরা। বিক্ষোভ সামলাতে আগেই পাক রেঞ্জার্স ও ফ্রন্টিয়ার কোরের অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করে পাক সরকার।
বিক্ষোভকারীদের দাবি, তাঁদের লক্ষ্য করে কাঁদানে গ্যাসের শেল একটি স্কুলে গিয়ে পড়ায় বেশ কয়েক জন ছাত্রী আহত হয়েছে। মোট ৭০ জন বিক্ষোভকারীকে আটক করা হয়েছে বলে জানায় সংবাদ সংস্থা। ডাডিয়ালে এখনও টহল দিচ্ছে আধাসেনা।