অমিত শাহ। ছবি: ফেসবুক।
অমিত শাহ রানাঘাটের প্রার্থী জগন্নাথের হয়ে ভোটের আবেদন জানালেন রানাঘাটবাসীকে। এর পরেই শাহের হাতে উপহার তুলে দেন রাজ্য বিজেপির নেতা-কর্মীরা। ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি দিয়ে শেষ হয় সভা।
শাহ বলেন, ‘‘কাশ্মীর আমাদের কি না বলুন? কংগ্রেস নেতা খড়্গে বলেন, কাশ্মীর আর বাংলার যুবকদের কি লেনদেন? আপনি জানেন না, আমার রানাঘাটের যুবকেরা কাশ্মীরের জন্য প্রাণ দিতে পারেন। মোদীজি ৩৭০ ধারা প্রত্যাহার করে দেশ থেকে সন্ত্রাসবাদ ঘুচিয়ে দিয়েছেন।’’
শাহ বলেন, ‘‘এই যে বিস্ফোরণ হচ্ছে, সকলকে ভয় দেখানোর জন্য করাচ্ছেন মমতা। রানাঘাটবাসীকে বলছি, কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করেছি আমরা। ভয় পাবেন না।’’
শাহ জানান, দুর্নীতিতে ‘এক নম্বরে মমতার সরকার’। শিক্ষক, পুরনিয়োগ থেকে রেশন, কয়লা— সব ক্ষেত্রেই দুর্নীতি করেছে মমতার সরকার।
শাহ বলেন, ‘‘মমতার মন্ত্রীর ঘর থেকে ৫০ কোটি টাকা মিলেছে। এই সভায় কেউ দেখেছেন? এই টাকা কার? এই টাকা রানাঘাটের গরিব যুবকদের। এই মমতা এবং তৃণমূল এই কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি করছে। যাঁরা দুর্নীতি করেছেন, তাঁদের জেলে পাঠাবে বিজেপি।’’
শাহ বলেন, ‘‘মমতা এক জন মহিলা মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর উপস্থিতিতে মহিলাদের শোষণ করা হয়েছে ধর্মের ভিত্তিতে। করেছেন ওঁর নেতারা। ওঁর লজ্জা করা উচিত। সিবিআই তদন্ত করছে। বাংলার মা, বোনদের চিন্তার দরকার নেই। আমরা সন্দেশখালির অপরাধীদের উল্টো ঝোলাব।’’
শাহ বলেন, ‘‘ভোটের জন্য সিএএ করতে দিচ্ছেন না মমতা। বিরোধিতা করছেন। আমি বলতে চাই, এত বছরে বাংলাকে বরবাদ করেছেন। কাটমানি আটকানো উচিত কি না, আপনারা বলুন? অনুপ্রবেশ, বিস্ফোরক, সন্দেশখালির মতো ঘটনা কি আটকানো উচিত কি না!’’
শাহের প্রশ্ন, ‘‘সিএএ এই দেশে আসা উচিত কি না! বহু মানুষ আজ নাগরিকত্ব পাননি। অনুপ্রবেশকারীদের ঠাঁই দিচ্ছে মমতার সরকার। কিন্তু মতুয়াদের নাগরিকত্বের বিরোধিতা করছে। আমরা সকলকে নাগরিকত্ব দেব।’’
শাহ বলেন, ‘‘১২ কোটি ঘরে শৌচালয় বানানো হয়েছে। তা-ও মোদী করেছেন। ৪ কোটি ঘর করেছেন। ১০ কোটির বেশি গ্যাসের সংযোগ দিয়েছেন। ১৪ কোটি লোককে কলের জল দিয়েছে মোদী।’’
অমিত বলেন, ‘‘আজ বলতে চাই, মোদীজি ১০ বছরে ৮০ কোটি গরিবের জন্য অনেক কাজ করেছেন। প্রতি মাসে যে ৫ কেজি চাল আসে, তা মোদী দেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নন।’’
অমিত বলেন, ‘‘রামমন্দির আগেই হওয়া উচিত ছিল কি না! এই কংগ্রেস, তৃণমূল, কমিউনিস্টেরা আটকে রেখেছিল এত বছর। দ্বিতীয় বার আপনারা প্রধানমন্ত্রী করেছেন। মামলা জিতে, ভূমিপুজো করে রামমন্দির করেছেন মোদী।’’
এর পর একে একে মঞ্চে উপস্থিত বিজেপি নেতা-কর্মীদের নাম নেন শাহ। উপস্থিত সকলকে নমস্কার জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘আপনাদের উৎসাহের জন্য প্রণাম জানাই। এখানে এক ইঞ্চিও জায়গা রাখেননি। জগন্নাথজিকে জয়ী করানোর জন্য সকলে এসেছেন। জগন্নাথকে কমল চিহ্নে দেওয়া প্রতি ভোট নরেন্দ্র মোদীকে প্রধানমন্ত্রী করব। জগন্নাথকে দেওয়া ভোট মতুয়াদের নাগরিকত্ব দেবে।’’
নদিয়াবাসীর পক্ষ থেকে অমিত শাহকে স্বাগত জানালেন দলীয় কর্মীরা। তার পরেই মঞ্চে উঠলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘আমার সঙ্গে বলুন, ‘ভারত মাতার জয়’। ‘জয় শ্রীরাম’।’’
রানাঘাটের মাজদিয়া রেল বাজার হাই স্কুলের মাঠে সভা বিজেপির। সেখানে বক্তৃতা করলেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। রানাঘাটে তৃণমূলের প্রার্থী বিজেপি ছেড়ে আসা মুকুটমণি অধিকারী। বক্তৃতায় তাঁকে বার বার কটাক্ষ করলেন সুকান্ত। জানালেন, এই ভোট হচ্ছে প্রধানমন্ত্রীকে সামনে রেখে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন।