মুকুটমনি অধিকারী। —ফাইল চিত্র।
গত পঞ্চায়েত ভোটের আগেই তৃণমূল থেকে বহিষ্কৃতদের ফেরানো হয়েছে। তাঁর শিবিরের লোকেদের ফেরানোর পাশাপাশি রানাঘাট ১ ব্লকে তাপস ঘোষকে নির্দিষ্ট দায়িত্ব দিয়ে সক্রিয় ভাবে প্রচারের কাজেও লাগানো হচ্ছে। কিন্তু এর পরেও রানাঘাটে ১ ব্লকে তৃণমূলের দুই যুযুধান গোষ্ঠীর মধ্যে দূরত্ব কতটা কমবে, তারা এক সঙ্গে প্রচার নামবে কি না তা নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে।
রানাঘাট ১ ব্লকে তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল দীর্ঘদিনের। পঞ্চায়েত ভোটের আগেই ব্লক সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল তাপসকে। তাঁর বিরোধী শিবিরের শেফালী বিশ্বাসকে সভাপতি করা হয়। তবে লোকসভা এগিয়ে আসতেই শেফালীকে সরিয়ে তাপস ঘোষের ঘনিষ্ঠ তাপস বিশ্বাসকে ব্লক সভাপতি করা হয়েছে।
পঞ্চায়েত ভোটে তাপস ঘোষই শুধু নন, তাঁর শিবিরের বহু জনকেই টিকিট দেওয়া হয়নি। এঁদের অনেকে নির্দল প্রার্থী হয়ে দাঁড়ান। জেতেনও অনেকে। সেই সময় তাঁদের বহিষ্কার করা হয়েছিল। কিন্তু আবার এঁদের ফেরানো হয়েছে, যা নিয়ে দলের একাংশের অসন্তোষ ছিল।
দুই শিবিরের ব্যবধান কমাতে ইতিমধ্যে বৈঠকে বসেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। এই ব্লকের মধ্যেই রয়েছে রানাঘাট উত্তর-পশ্চিম এবং রানাঘাট দক্ষিণ বিধানসভার অংশ। সাংগঠনিক ভাবেও এই ব্লকের অবস্থান গুরুত্বপূর্ণ। পাশেই শান্তিপুর ব্লক। রয়েছে বীরনগর, তাহেরপুর, রানাঘাট শহর। দলের একাংশ গত বিধানসভা ভোটের সময় তাপস শিবিরের বিরুদ্ধে অন্তর্ঘাতের অভিযোগ তুলেছিল। কার্যত তার জেরেই পঞ্চায়েত ভোটের আগে তাঁর ডানা ছাঁটা হয়।
তার পরেও নির্দল প্রার্থী হিসাবে জিতে তাপস-অমুগামীরা শুধু যে সাংগঠনিক শক্তির পরিচয় দিয়েছেন, তা-ই নয়। তাপসকে ছাড়া এই ব্লকে দলের পক্ষে ভোট করানো কঠিন বলেও দাবি একটি অংশের। তবে এর পরেও দলের দুই শিবির হাতে হাত মিলিয়ে প্রচার করছেন এমন ছবি এখনও বিশেষ দেখা যায়নি। পঞ্চায়েত ভোটে একে অপরের বিরুদ্ধে লড়ার পর এখন তাঁরা কতটা একজোট হবেন তা নিয়েও অনেকের সংশয় আছে।
তবে রানাঘাট দক্ষিণের বিজেপি বিধায়ক মুকুটমণি অধিকারীর দলবদল করে রানাঘাট কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী হওয়াটাও এই জট খুলতে সাহায্য করবে বলে অনেকের ধারণা। কেননা তিনি এখনও তৃণমূলের কোনও শিবিরের লোক বলে পরিচিত নন। ফলে দলীয় প্রার্থী হিসাবে তাঁকে জেতাতে মাঠে নামতে কোনও পক্ষেরই সমস্যা হওয়ার কথা নয়। বরং নিজেদের ক্ষমতা প্রমাণ করার জন্য দুই শিবিরই নিজের নিজের এলাকা থেকে ‘লিড’ দেওয়ার চেষ্টা করতে পারে বলে তৃণমূল নেতৃত্ব মনে করছেন।
তৃণমূলের রানাঘাট সংগঠনিক জেলা সভাপতি দেবাশীষ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, "সবাইকে নির্দিষ্ট দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। দলের জয়ের জন্য সবাই কাজ করছেন। ভাল ফল
নিয়ে আশাবাদী।"