ভাঙচুরের পর বিজেপির কার্যালয়। —নিজস্ব চিত্র।
ভোট পরবর্তী হিংসায় উত্তপ্ত হয়ে উঠল বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর লোকসভার অন্তর্গত পাত্রসায়র থানা এলাকা। মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে দফায় দফায় ওই এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে। ওই এলাকার বিজেপির দলীয় কার্যালয় ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক বিজেপি নেতার বাড়িতেও। আর এই সব ক’টি ঘটনায় আঙুল উঠেছে তৃণমূলের দিকে। যদিও অভিযোগ নস্যাৎ করে এগুলো বিজেপির গোষ্ঠীকোন্দলের ফল বলে দাবি করেছে তৃণমূল।
নির্বাচনের অনেক আগেই অবশ্য পাত্রসায়র থানা এলাকার রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত হতে শুরু করেছিল। নির্বাচনের দিন সে ভাবে অশান্তির ঘটনা না ঘটলেও গণনার দিন বিকেল থেকে আবার উত্তেজনার পারদ চড়তে শুরু করে সেখানে। শেষ পর্যন্ত বিষ্ণুপুর লোকসভা কেন্দ্রে আবার জয় পেয়েছেন বিজেপি প্রার্থী সৌমিত্র খাঁ। তার পর রাত থেকেই আবার উত্তেজনা ছড়িয়েছে পাত্রসায়রে। অভিযোগ, বিজেপির পাত্রসায়র-২ মণ্ডলের নারায়ণপুর অঞ্চল কার্যালয়ে ভাঙচুর চালানো হয়। ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় বিজেপির কার্যালয়ের চাল। আসবাবপত্র থেকে বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম এবং বিজেপি নেতানেত্রীর ছবি ভেঙেচুরে ফেলা দেওয়া হয়েছে। তার পর পাত্রসায়র ব্লকের কাঁকরডাঙা এলাকায় বিজেপির প্রাক্তন মণ্ডল সভাপতি তথা বর্তমান বিজেপির বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সম্পাদক তমালকান্তি গুঁইয়ের বাড়িতে চলে ইটবৃষ্টি। ইটের ঘায়ে ভেঙে যায় বাড়ির অধিকাংশ জানালার কাচ। ওই ঘটনার সিসি ক্যমেরার ফুটেজ় তুলে ধরে বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, সবক’টি ঘটনার পিছনে রয়েছে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। তমালকান্তি বলেন, ‘‘তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা আমার বাড়িতে দফায় দফায় হামলা চালিয়েছে। আমার বাড়ি-সহ বিজেপির একাধিক বুথ সভাপতির বাড়িতেও ভাঙচুর করা হয়েছে। গোটা ঘটনার সিসি ক্যমেরার ফুটেজ পুলিশ এবং প্রশাসনকে দিয়েছি। আমরা প্রাণ সংশয়ের আশঙ্কা করছি।’’ সোনামুখীর বিজেপি বিধায়ক দিবাকর ঘরামির দাবি, ‘‘নির্বাচনে একদল জিতবে। অপর দল হারবে, এটাই স্বাভাবিক। আমরা বিষ্ণুপুর লোকসভায় জিতেছি। কিন্তু সারা দেশে যা হয়নি, বিষ্ণুপুর লোকসভার পাত্রসায়রে তাই হয়েছে।’’
যদিও তৃণমূলের বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার সহ সভাপতি দিব্যেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ভিত্তিহীন অভিযোগ করছে বিজেপি। তিনি বলেন, ‘‘সারা রাজ্যে বিজেপির ভরাডুবি হওয়ায় নিজেদের দলের মধ্যে গোষ্ঠীকোন্দল শুরু হয়েছে। এই ঘটনা তারই বহিঃপ্রকাশ।’’