রাজীব কুমার এবং বিবেক সহায়। —ফাইল চিত্র।
লোকসভা নির্বাচনের আগে রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমারকে দায়িত্ব থেকে সরানোর নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি রাজ্য সরকারের কাছে বিকল্প তিনটি নাম চেয়েছিল নির্বাচন কমিশন। সোমবার বিকেল ৫টার মধ্যে সেই প্রস্তাব জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল কমিশনের তরফে। সেই সময়সীমা মেনেই রাজীবের জায়গায় ডিজি পদে তিনটি নাম জমা দেওয়া হয়েছে রাজ্যের তরফে। সেই তালিকার প্রথম নাম বিবেক সহায়কে রাজ্যের পরবর্তী ডিজির দায়িত্ব দিল কমিশন।
২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনের সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নন্দীগ্রামে ভোটপ্রচারে গিয়ে আহত হয়েছিলেন। সে সময় তাঁর প্রধান নিরাপত্তা উপদেষ্টা ছিলেন ১৯৮৮ ব্যাচের আইপিএস অফিসার বিবেক। গত নভেম্বরে তাঁকে ডিজি (হোমগার্ড) পদে নিয়োগ করা হয়েছিল। প্রসঙ্গত, রাজ্য পুলিশের পরবর্তী ডিজি হিসাবে সরকারের তরফে বিবেকের পাশাপাশি আরও দুই সিনিয়র আইপিএস অফিসার, সঞ্জয় মুখোপাধ্যায় এবং রাজেশ কুমারের নাম পাঠানো হয়েছিল কমিশনে। সঞ্জয় এখন রাজ্য দমকল বিভাগের ডিজি। রাজেশ রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের প্রধান।
প্রসঙ্গত, শনিবার লোকসভা ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণার পাশাপাশি দেশ জুড়ে আদর্শ নির্বাচনী আচরণবিধি জারি করার কথা জানিয়েছিলেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার, আইএএস আধিকারিক রাজীব কুমার। তার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই পদক্ষেপ করা হল আইপিএস আধিকারিক রাজীব কুমারের বিরুদ্ধে। পাশাপাশি, গুজরাত, উত্তরপ্রদেশ, বিহার, ঝাড়খণ্ড, হিমাচল প্রদেশ, উত্তরাখণ্ডের স্বরাষ্ট্রসচিবকেও অপসারণের নির্দেশ দিয়েছে কমিশন। সরানো হয়েছে মিজোরাম, হিমাচল প্রদেশের জেনারেল অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ডিপার্টমেন্টের সচিবকেও।
রাজীবকে সোমবার ফেরত পাঠানো হয়েছে রাজ্যের ইলেকট্রনিক্স ও তথ্যপ্রযুক্তি দফতরের অতিরিক্ত মুখ্য সচিব পদে। প্রসঙ্গত,২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগেও রাজীবকে তদানীন্তন পদ থেকে সরানো হয়েছিল। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোট ঘোষণার পর রাজীবকে ডেপুটেশনে দিল্লি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। পরবর্তী কালে রাজীব দীর্ঘ দিন ছিলেন কেন্দ্রীয় তথ্য প্রযুক্তি দফতরের সচিব।
কয়েক মাস আগে রাজ্য পুলিশের ডিজি পদে মনোজ মালবীয়র মেয়াদ শেষ হয়।তার পর গত ডিসেম্বরে রাজ্য পুলিশের নয়া ডিরেক্টর জেনারেল (ডিজি) হিসাবে নিয়োগ করা হয় রাজীবকে। রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। কলকাতার প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার রাজীবকে নিয়ে বিতর্ক কম হয়নি অতীতে। তাঁকে রাজ্য পুলিশের সর্বোচ্চ পদে নিয়োগ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তখন ঠিক হয়েছিল, আপাতত তিনি ভারপ্রাপ্ত ডিজি হিসেবেই কাজ করবেন।