—প্রতীকী চিত্র।
সকাল থেকে ‘যুদ্ধ’ শুরু। নির্বাচন কমিশনের খতিয়ান অনুযায়ী, ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্রের ১৫৯১টি ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের মধ্যে ৫৫৪টি বুথই স্পর্শকাতর। রবিবার থেকেই কেন্দ্রীয় বাহিনীর দখলে রয়েছে সব ক’টি ভোটগ্রহণ কেন্দ্র। সাড়ে তিন হাজার পুলিশকর্মীকে মোতায়েন করা হয়েছে এই লোকসভা কেন্দ্রে শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য। প্রায় সাড়ে সাত হাজার ভোটকর্মী রবিবারই পৌঁছে গিয়েছেন নিজেদের বুথে।
এ বারের নির্বাচনে ব্যারাকপুর কেন্দ্র পাখির চোখ রাজ্য ও কেন্দ্রের শাসকদলের। সাংসদ বনাম মন্ত্রীর লড়াই সেখানে। মহাভারতে যিনিই পার্থ, তিনিই অর্জুন। এখানে অবশ্য পার্থ ভৌমিক ও অর্জুন সিংহ কিছু দিন আগেও তৃণমূলে সতীর্থ ছিলেন। অর্জুন বিজেপিতে যোগদানের পরে এখন তাঁরা সম্মুখসমরে। তাঁদের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে রয়েছেন বাম প্রার্থী দেবদূত ঘোষ।
ভোট প্রচারে বিজ্ঞাপনের ছড়াছড়ি। গান বেঁধে, লিফলেট বিলি করে, মোবাইলের কলার টিউনে, এমনকি, ফোন করে প্রার্থীর খুঁটিনাটি থেকে বিরোধী দলের প্রার্থীকে রীতিমতো ‘হত্যাকারী’ আখ্যা দিয়েও রবিবার রাত পর্যন্ত প্রচার চলেছে। ব্যারাকপুর লোকসভায় ১৪ জন প্রার্থীর মধ্যে সাধারণ মানুষ নিয়মিত চাক্ষুষ করেছে তৃণমূল, বিজেপি এবং সিপিএম প্রার্থীকে। প্রচার থেকে ফলাফলের জয়ের পথে তাঁরাই এগিয়ে থাকছেন বাকিদের তুলনায়।
লোকসভা ভোট এ বার সকাল থেকেই টানটান উত্তেজনায় কাটাবে ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চল। প্রকৃতি বিরূপ না হলে বেলা গড়ানোর আগেই অধিকাংশ ভোট পড়বে বলে আশা রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের। টিটাগড়, ব্যারাকপুরের কিছু অংশ, জগদ্দল, ভাটপাড়া, আমডাঙা ও বীজপুরের বেশ কিছু বুথে বাড়তি সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে নজরদারির জন্য। এমনিতেই সব বুথে ওয়েব ক্যামেরা থাকছে। উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসক শরদকুমার দ্বিবেদী বলেন, ‘‘সুষ্ঠু ভাবে ভোট করতে যাবতীয় প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। বুথের বাইরেও পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। প্রতিটি বুথে ওয়েব কাস্টিং ক্যামেরা থাকছে। আশা করছি ভোটগ্রহণ পর্ব নির্বিঘ্নে শেষ করতে পারব।’’
ব্যারাকপুর লোকসভায় এ বার মোট ভোটার ১৫ লক্ষ ৮ হাজার ৭২৮ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৭ লক্ষ ৬৯ হাজার ১৭৮ জন, মহিলা ভোটার ৭ লক্ষ ৩৯ হাজার ৫০৫ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটারের সংখ্যা ৪৫। প্রত্যেকেই যাতে ভোট দেন, তার জন্য প্রশাসনের তরফেও প্রচার করা হয়েছে। ব্যারাকপুরের নগরপাল অলোক রাজোরিয়া বলেন, ‘‘ব্যারাকপুরে ভোট মানেই প্রতিটি বুথ স্পর্শকাতর। তবে ব্যারাকপুর কমিশনারেট শান্তিপূর্ণ ভোট করানোর জন্য প্রস্তুত। কেন্দ্রীয় বাহিনী এবং ৩৫০০ জন রাজ্য পুলিশ মোতায়েন হয়েছে। ১৬৪টি কুইক রেসপন্স টিম রাখা হয়েছে। ১৩টি হেভি রেডিয়ো ফ্লাইং স্কোয়াড নজরদারিতে থাকছে। কোনও রকম অবাঞ্ছিত পরিস্থিতি যাতে তৈরি না হয়, তা খেয়াল রাখা হচ্ছে। বিশেষ কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে।’’ নগরপালের আশ্বাস, ‘‘প্রত্যেকে নিজের ভোট নিজে দিতে যাবেন। কোনও রকম সমস্যা হলে জানাবেন। পুলিশ অবশ্যই যথাযথ পদক্ষেপ করবে।’’