অধীর চৌধুরী। —ফাইল চিত্র।
এক সময় বহরমপুরকে কংগ্রেসের দুর্গ বলা হত। পর পর পাঁচ বার এই লোকসভা কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়েছেন লোকসভার কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরী। আর বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে শক্ত ঘাঁটি ছিল বহরমপুর বিধানসভা কেন্দ্র। গত লোকসভাতেও কঠিন লড়াইয়ের পড়ে বহরমপুর বিধানসভা কেন্দ্র অধীরকে জয় এনে দিয়েছিল। সে বার বহরমপুর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে ৮৯ হাজার ৬১টি ভোট লিড পেয়েছিলেন অধীর। কিন্তু একুশের নির্বাচনের পর থেকে বহরমপুরে সমান্তরাল ভাবে উঠে আসে বিজেপি এবং তৃণমূল।
একুশের বিধানসভা নির্বাচনে বহরমপুর বিধানসভা কেন্দ্রে জয়ী হন বিজেপির সুব্রত মৈত্র। সে বার দ্বিতীয় স্থানে ছিলেন তৃণমূলের প্রার্থী নাড়ুগোপাল মুখোপাধ্যায়। আর অধীর চৌধুরীর দল কংগ্রেসের প্রার্থী মনোজ চক্রবর্তী ছিলেন তৃতীয় স্থানে। বহরমপুর বিধানসভা কেন্দ্রের আওতায় থাকা ত্রিস্তর পঞ্চায়েত বা পুরসভা নির্বাচনে তৃণমূল অনেকটাই এগিয়ে রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে কংগ্রেস কী তার বহরমপুরের পুরনো গড় উদ্ধার করতে পারবে, সেই প্রশ্ন ঘোরাফেরা করছে বহরমপুরের আনাচ কানাচে।
তবে বহরমপুরের প্রাক্তন বিধায়ক কংগ্রেসের মনোজ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত, পুরসভা, বিধানসভা এবং লোকসভা ভোট যেমন আলাদা, তেমনই তার ফলাফলও আলাদা হয়। পুরসভা এবং পঞ্চায়েত ভোটকে তৃণমূলে প্রহসনে পরিণত করেছিল। আর বিধানসভা নির্বাচনে মোদী আর দিদি বিভাজনের রাজনীতি করেছিল। যার জেরে গত বিধানসভায় ফল অন্য রকম হয়েছিল।’’ এবারেও তাঁদের বিরুদ্ধে বিভাজনের রাজনীতির অভিযোগ উঠেছে। ফলে আপনারা জয়ী হবেন কী করে? মনোজ বলেন, ‘‘এ বারে মোদী আর দিদিকে বহরমপুরের লোক যোগ্য জবাব দেবেন। এ বারে অধীর চৌধুরী ‘ডবল হ্যাটট্রিক’ করে লোকসভায় জয়ী হবেন।’’
বিজেপির বহরমপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি শাখারভ সরকার বলেন, ‘‘২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূলের অত্যাচারে আমরা রাজ্য জুড়ে প্রার্থী দিতে ব্যার্থ হয়েছিলাম। আর তার পরের বছরে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যের ১৮ টি আসনে জয়ী হয়েছিলাম। ফলে পঞ্চায়েত ভোটে ফল ভাল হয়নি মানে লোকসভা পারব না এটা নয়।’’ বহরমপুর বিধানসভা কেন্দ্রের একুশের ভোটের তৃণমূলের প্রার্থী তথা বহরমপুরের পুরপ্রধান নাড়ুগোপাল মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা পুরসভা এবং ত্রিস্তর পঞ্চায়েত থেকে বাসিন্দাদের পরিষেবা দিয়ে চলেছি। সেই সঙ্গে আমাদের মানবিক মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে উন্নয়ের কর্মযজ্ঞ চলছে। এ বারে বহরমপুর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে আমরাই লিড দেব।’’
বহরমপুর পঞ্চায়েত সমিতি তৃণমূলের দখলে। এই পরিস্থিতিতে বহরমপুর কোন দলকে লিড দেয় তার উত্তর মিলবে ৪ জুন লোকসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণার দিন।