—প্রতীকী ছবি।
লোকসভা ভোটের প্রথম দফায় বাংলার তিন কেন্দ্রে নির্বাচন শেষে তৃণমূল কংগ্রেস যতই বিজয় মিছিল বার করুক, নিজেদের গড় বাঁচাতে আত্মবিশ্বাসী পদ্ম শিবির। প্রথম দফার তিনটির পাশাপাশি, দ্বিতীয় দফায় আরও অন্তত দু’টি আসন জেতার বিষয়ে নিঃসংশয় বিজেপি। তবে রায়গঞ্জ নিয়ে কিছু সমীকরণ মাথায় রাখা হচ্ছে বলে বিজেপি সূত্রে খবর।
রাজ্য বিজেপি সূত্রের খবর, জেলা ভিত্তিক দলীয় রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রথম দফায় ভোট হওয়া কোচবিহারের ক্ষেত্রে জয়ের যা ব্যবধান আশা করা হচ্ছে, সেটা গত বারের তুলনায় খুব একটা হেরফের হবে না। পদ্ম শিবিরের দাবি, আলিপুরদুয়ারে জয়ের ব্যবধান তিন লক্ষ ছাপিয়ে যেতে পারে। তবে জলপাইগুড়িতে ব্যবধান কমতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
গত লোকসভায় চতুর্মুখী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রায়গঞ্জ থেকে জিতেছিলেন বিজেপির দেবশ্রী চৌধুরী। কিন্তু রাজনৈতিক শিবিরের একাংশের মতে, পাঁচ বছরের মধ্যে পরিস্থিতির এমন বদল ঘটেছে যে, ওই আসনে প্রার্থী বদলাতে হয়েছে বিজেপিকে। সূত্রের দাবি, দেবশ্রী নিজেই ওই আসন থেকে লড়তে চাননি। এই আবহে বিজেপি নেতৃত্বের একাংশ স্বীকার করছেন, রায়গঞ্জে তৃণমূল এবং কংগ্রেস-বাম জোটের প্রার্থীর মধ্যে সংখ্যালঘু ভোট ভাগ হলে, সেই সুযোগ তাঁরা পেতে পারেন। দলের এক রাজ্য নেতাও বলছেন, “কংগ্রেস-বাম জোটের প্রার্থী আলি ইমরান রামজ ভাল ভোট পেলে আমাদের সুযোগ থাকবে।”
দ্বিতীয় দফায় আগামী ২৬ এপ্রিল রায়গঞ্জ ছাড়াও দার্জিলিং এবং বালুরঘাট আসনে নির্বাচন রয়েছে। রায়গঞ্জে ‘কাঁটা’ থাকলেও বালুরঘাট থেকে বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা বিদায়ী সাংসদ সুকান্ত মজুমদারকে লক্ষাধিক ভোটে জেতাতে সেখানে ঘাঁটি গেড়েছেন দলের উত্তরবঙ্গের পোড় খাওয়া নেতারা। ঘটনা হল, ২০২১-এর বিধানসভা ভোটের নিরিখে এই লোকসভা এলাকায় তৃণমূলের থেকে প্রায় ৮৯ হাজার ভোটে পিছিয়ে রয়েছে বিজেপি। যদিও, বিজেপি নেতৃত্বের তরফে দাবি করা হচ্ছে, এর প্রভাব লোকসভা ভোটে পড়বে না।
দার্জিলিঙে তৃণমূল ও কংগ্রেস প্রার্থীদের পাশাপাশি বিজেপি বিধায়ক বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মা নির্দল হয়ে ভোট ময়দানে নেমেছেন। যদিও, বিজেপির এক রাজ্য নেতার দাবি, এই সবের প্রভাব লোকসভা ভোটে পড়বে না। দার্জিলিঙে একপেশে নির্বাচন হবে। তবে, কিছুটা হলেও সমতল নিয়ে ভাবতে হচ্ছে। গত লোকসভা নির্বাচনে শিলিগুড়ি, ফাঁসিদেওয়া ও মাটিগাড়া-নকশালবাড়ি এলাকা থেকে বিপুল ব্যবধানে এগিয়ে ছিল বিজেপি। ওই ব্যবধান এই বারে না-ও থাকতে পারে বলে স্বীকার করছেন বিজেপি নেতৃত্বের একাংশ। তাঁদেরই এক জন এর কারণ ব্যাখ্যা করে বলছেন, “তৃণমূল এই বারে অনেক বেশি সংগঠিত। তবে ব্যবধান কমলেও বিজেপি-ই জিতবে।”
রাজ্য বিজেপির প্রধান মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “তৃণমূল বলেছিল ‘খেলা হবে’। আর উত্তরবঙ্গে আমাদের কর্মীরা আওয়াজ তুলেছিলেন, ‘পালিশ’ হবে। প্রথম দফা নির্বাচনে তা স্পষ্ট।”