Abhishek Banerjee on Sandeshkhali Video

সন্দেশখালি-ভিডিয়োকাণ্ডে আক্রমণে শাসক তৃণমূল, সরব হচ্ছেন অভিষেক, ‘যাচাই’ করবেন শুভেন্দু

ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন। তবে ভিডিয়োটি প্রকাশ্যে আসার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ময়দানে নেমেছে তৃণমূল। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও জানিয়েছেন, তিনি সাংবাদিক বৈঠক করবেন।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ মে ২০২৪ ১৪:১১
Share:

প্রসঙ্গ সন্দেশখালির ভাইরাল ভিডিয়ো, কী বললেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং শুভেন্দু অধিকারী। গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।

যে সন্দেশখালিকে ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের ‘নন্দীগ্রাম’ বলে ভাবতে শুরু করেছিল বিজেপি, সেই সন্দেশখালির সত্যতা এবং সততা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছে গোপন ক্যামেরায় তোলা একটি ভাইরাল ভিডিয়ো! যেখানে বলা হচ্ছে সন্দেশখালির ঘটনা গোটাটাই ‘সাজানো’ এবং এর নেপথ্যে বড় ভূমিকা রয়েছে বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর। ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন। তবে শনিবার সকালে ওই ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ময়দানে নেমে পড়েছে তৃণমূল। দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে অভিষেক শনিবারই সন্দেশখালি নিয়ে একটি সাংবাদিক বৈঠক করতে চলেছেন বিকেল ৫টার সময়। সেই বৈঠকে সন্দেশখালির ঘটনার নেপথ্যে বিজেপির ভূমিকা নিয়ে বিস্তারিত কথা বলবেন অভিষেক।

Advertisement

তৃণমূল সূত্রে খবর, বৈঠকে অভিষেক বিজেপিকে বিঁধবেন ‘বাংলার সম্মান’ নিয়ে। সন্দেশখালির ‘মিথ্যা ঘটনা’ সাজিয়ে বিজেপি যে শুধু রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলকেই নয়, গোটা দেশের সামনে বাংলাকে অসম্মানিত করেছে, সে কথাই বোঝাবেন অভিষেক। তৃণমূল সূত্রে এ-ও জানা গিয়েছে যে, বাংলার মহিলাদের নিরাপত্তা নিয়ে যে ভাবে দেশের সামনে অসত্য তথ্য তুলে ধরা হয়েছে বিজেপির তরফে, যে ভাবে জাতীয় মহিলা কমিশন থেকে শুরু করে জাতীয় আদিবাসী অধিকার কমিশন সন্দেশখালি নিয়ে একের পর এক ‘ভুয়ো তথ্য’ ভিত্তিক রিপোর্ট রাষ্ট্রপতির কাছে জমা দিয়েছেন, সে ব্যাপারেও উল্লেখ থাকবে ওই সাংবাদিক বৈঠকে।

লোকসভা ভোটের প্রচারে বাংলায় এসে প্রথম দিন থেকেই সন্দেশখালি নিয়ে বাংলার রাজ্য সরকার এবং শাসকদল তৃণমূলকে আক্রমণ শানিয়েছেন দিল্লি থেকে আসা শীর্ষ বিজেপি নেতারা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ থেকে শুরু করে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডা, উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ, সকলেই তাঁদের প্রচার সভায় বাংলার সরকারবিরোধী ‘ইস্যু’ হিসাবে তুলে ধরেছেন সন্দেশখালির ঘটনা এবং বাংলায় মহিলাদের নিরাপত্তার প্রসঙ্গ। অথচ শনিবার ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে ‘বিজেপির মণ্ডল সভাপতি’ পরিচয় দেওয়া গঙ্গাধর কয়াল নামে এক ব্যক্তি বলছেন, সন্দেশখালির পুরো ঘটনাটিই সাজানো হয়েছিল এলাকার তৃণমূলের নেতাদের গ্রেফতার করানোর জন্য। এ ব্যাপারে ‘টাকা মোবাইল দিয়ে সাহায্য’ও করেছিলেন বিরোধী দলনেতা তথা বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু।

Advertisement

শনিবার সকালে ওই ভিডিয়ো ভাইরাল হওয়ার পরই সমাজমাধ্যমে আক্রমণ শানাতে শুরু করে তৃণমূল। দলের অফিশিয়াল এক্স হ্যান্ডল থেকে একটি পোস্ট করে তারা লেখে, ‘‘দেখা যাচ্ছে বাংলাকে অসম্মানিত করার জন্য চেষ্টার কোনও কসুরই রাখেনি বিজেপি। গণধর্ষণের অভিযোগ থেকে শুরু করে অস্ত্র বাজেয়াপ্ত— সমস্ত কিছুই সাজিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। এই বাংলা-বিরোধীদের ক্ষমা করবেন না বাংলার মা-বোনেরা। এর প্রতিশোধ নেবেন তাঁরা।’’

পরে অভিষেকও একটি পোস্টে লেখেন, ‘‘গোপন ক্যামেরায় তোলা সন্দেশখালির ভিডিয়ো দেখে আমি স্তম্ভিত। বাংলার প্রতিটি মানুষের দেখা উচিত, এই বাংলা-বিরোধী বিজেপি কী ভাবে তাদের রাজনৈতিক ফয়দা তোলার জন্য বাংলাকে অসম্মানিত করেছে। একেই বলে ক্ষমতার অপব্যবহার, লজ্জা!’’

পরে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও একটি এক্স পোস্টে লেখেন, ‘‘বিজেপির মনে বাংলা-বিরোধী মনোভাব আর বাংলার প্রতি ঘৃণা কতটা গভীর, তা এই ষড়যন্ত্রে স্পষ্ট। ভারতের ইতিহাসে আগে কখনও দিল্লির শাসকদল এ ভাবে আমাদের রাজ্যকে অসম্মানিত করার চেষ্টা করেনি। কিন্তু এর পর বাংলা এর জবাব দিতে যে ভাবে জাগবে, তা ইতিহাস তৈরি করবে।’’

তবে শাসকদল যা-ই বলুক, তাঁর নামে অভিযোগ প্রসঙ্গে মুখ খোলেননি শুভেন্দু। এ ব্যাপারে বিরোধী দলনেতার প্রতিক্রিয়া চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘‘আমি পুরোটা যাচাই করে দেখে সবটা বলব। তৃণমূল গলা নকলও করতে পারে। ওদের বিশ্বাস নেই।’’ পরে অবশ্য বিজেপির তরফে জানানো হয়, তারা বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ অভিষেকের সভার আধ ঘণ্টা আগেই এ নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement