কাটোয়ায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়।
শস্যগোলা বর্ধমানে ভোটের প্রচারে এসে কার্যত কৃষকদের আবেগকে উস্কে দেওয়ার চেষ্টা করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপিকে বিঁধতে হাতিয়ার করলেন বিমা প্রকল্পকে। শুক্রবার কাটোয়ার সভা থেকে কেন্দ্রের উদ্দেশে অভিষেকের তোপ, ‘‘বর্ধমান কৃষিপ্রধান জেলা। এই জেলার জন্য আমাদের মুখে অন্ন জোটে। সেখানে কিসান বিমায় টাকা বন্ধ! আগামী দিনে এরা (বিজেপি) যদি শক্তিশালী হয়, প্রথমেই চেষ্টা করবে, কিসান ক্রেডিট কার্ড আর লক্ষ্মীর ভান্ডার কী ভাবে বন্ধ করা যায়।’’
আবাস যোজনায় গরিবদের বাড়ি তৈরির টাকা রাজ্য সরকার দেবে বলে দাবি করেছেন অভিষেক। তাঁর বক্তব্য, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার যদি বাংলায় ২৫ হাজার কোটি টাকা খরচ করে ২ কোটি ১২ লক্ষ মহিলাকে লক্ষ্মীর ভান্ডার দিতে পারেন, তবে আগামী দিনে আপনার ছাদ ও বাড়ির ব্যবস্থাও আমাদের সরকার করতে পারে।’’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘‘যদি তৃণমূলের হাত শক্ত করেন, সভামঞ্চ থেকে কথা দিচ্ছি, কারও কাছে হাত পাততে হবে না। ছ’মাসের মধ্যে আপনাদের বাড়ির টাকার ব্যবস্থা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় করে, প্রথম কিস্তিটা ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে আপনাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে চলে যাবে। দিদির গ্যারান্টি।’’ পাশাপাশি, বঞ্চনার অভিযোগ তুলে বিজেপির বিরুদ্ধে সরব হন অভিষেক। বলেন, ‘‘২০২১-এ বাংলায় হারার পরে, ২০১৭-১৮ থেকে যে আবাস প্লাসের তালিকা তৈরি হয়েছে, সেই তালিকায় যদি বিজেপি দেখাতে পারে যে, কেন্দ্র থেকে দশ পয়সা রাজ্যে পাঠানো হয়েছে, আমি রাজনীতি করব না।’’ তার পরেই, তাঁর মন্তব্য, ‘‘ফেব্রুয়ারিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৫৯ লক্ষ মানুষের (একশো দিনের কাজ প্রকল্পের শ্রমিক) অ্যাকাউন্টে টাকা পৌঁছে দিয়েছেন। এটাই দিদির গ্যারান্টি।’’
বর্ধমান-দুর্গাপুরের বিজেপি সাংসদকে বিঁধে অভিষেকের মন্তব্য, ‘‘যদি কেউ দেখাতে পারেন, সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া বর্ধমানবাসীর জন্য একটাও উন্নয়নের বৈঠক করেছেন, আমি রাজনীতি থেকে অবসর নেব।’’ তাঁর কথায়, ‘‘এই বর্ধমানের মাটিতে প্রধানমন্ত্রী শেষ কবে এসেছিলেন? ১২ এপ্রিল, ২০২১। তিন বছর আপনি কোনও বিজেপি নেতার টিকি খুঁজে পাননি। এখন নির্বাচন এসেছে, বহিরাগত নেতারা, বাংলা-বিরোধী নেতারা আবার ডেলি প্যাসেঞ্জারি শুরু করছেন।?’’
কী প্রতিক্রিয়া বিরোধীদের?
প্রবীণ সিপিএম নেতা অঞ্জন চট্টোপাধ্যায়ের খোঁচা, ‘‘কেন্দ্রের বিজেপি আর রাজ্যের তৃণমূল নেতৃত্বাধীন সরকার শুধু ভাষণ দেয়। মিথ্যা বলায় একে অপরকে টেক্কা দিয়ে মানুষকে ভুল বোঝায়। মানুষ এখন আর ওদের কথায় বিশ্বাস করে না। ভোটে তা বোঝা যাবে।’’ বিজেপির কাটোয়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি গোপাল চট্টোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া, ‘‘প্রধানমন্ত্রী যে গ্যারান্টি দিয়েছিলেন, তা পূরণ করেছেন। নির্বাচনের আগে মানুষকে ভুল বোঝানোর জন্য নানা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে তৃণমূল।’’