Abhishek Banerjee

এলাকায় ব্যবধান কমলে কাউন্সিলরই দায়ী থাকবেন, বীরভূমে গিয়ে ব্যবস্থার হুঁশিয়ারি দিলেন অভিষেক

লোকসভা ভোটের আগে গত কয়েক মাস ধরেই তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দলের অভিযোগ আসছে একদা অনুব্রত মণ্ডলের ‘গড়’ বলে পরিচিত বীরভূমে। বুধবার সেই বীরভূমেই প্রচারে গিয়েছিলেন অভিষেক।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০২৪ ১৯:২৮
Share:

বীরভূমে তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিদের বৈঠকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: তৃণমূলের ফেসবুক পেজ থেকে।

পুর নির্বাচনে যে এলাকা ভোটে ভরাচ্ছে তৃণমূলকে, সেই এলাকার মানুষই লোকসভায় ভোট দিচ্ছেন তৃণমূলের বিরুদ্ধে। ভোটারদের এই ধারাবাহিকতার অভাবের জন্য এলাকার জনপ্রতিনিধিদের দায়ী করলেন রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার বীরভূমে গিয়ে তিনি এ ব্যাপারে একরকম হুঁশিয়ারিই দিয়ে এসেছেন সেখানকার কাউন্সিলর এবং পঞ্চায়েত প্রধানদের।

Advertisement

তৃণমূল সূত্রের খবর, অভিষেক জানিয়েছেন, যদি তিনি দেখেন, লোকসভা ভোটে জয়ের ব্যবধান কমেছে, তবে ভোটের পরে বুথ ধরে ধরে তিনি তৃণমূল জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন। অভিষেক এ-ও জানিয়েছেন যে, তাঁর কথার অন্যথা হবে না।

লোকসভা ভোটের আগে গত কয়েক মাস ধরেই তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দলের অভিযোগ আসছে একদা অনুব্রত মণ্ডলের ‘গড়’ বলে পরিচিত বীরভূমে। বিভিন্ন এলাকায় তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে পোস্টার পড়ছে। তৃণমূলের অনেকেরই অভিযোগ, সে কাজ করাচ্ছেন বিপক্ষ শিবিরের তৃণমূল নেতারাই।

Advertisement

বীরভূমে অবশ্য এই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নতুন নয়। অনুব্রতের সঙ্গে তৃণমূল নেতা কাজল শেখের প্রতিদ্বন্দ্বিতা দীর্ঘ দিনের। তবে অনুব্রত থাকাকালীন তা মাথাচাড়া দিতে পারেনি। অনুব্রত জেলে যাওয়ার পর কাজলপন্থী তৃণমূল নেতারা সক্রিয় হওয়ায় দুই শিবিরের মধ্যে দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে চলে আসে।

আসলে অনুব্রতের পরে এই কাজলকে বীরভূম জেলা পরিষদের সভাপতি করেছিল তৃণমূল। তাতে দলে তাঁর গুরুত্ব অনেকটাই বেড়ে যায়। পরে অবশ্য কাজলকে কোর কমিটি থেকে ছেঁটে ফেলে তৃণমূল নেতৃত্ব। বর্তমানে কাজল কেতুগ্রামে তৃণমূলের পর্যবেক্ষক। যে কেতুগ্রামে একসময় শেষ কথা ছিলেন অনুব্রত। ফলে দ্বন্দ্ব আরও বেড়েছে বলে সূত্রের খবর।

বুধবার অভিষেক লোকসভা ভোটের প্রচারে গিয়েছিলেন এই বীরভূমেই। সেখানে তারাপীঠে পুজো দেওয়ার পাশাপাশি একটি বেসরকারি হোটেলে তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠকও করেন তিনি।

সূত্রের খবর, সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রের পাঁচটি এবং বোলপুর লোকসভা কেন্দ্রের দু’টি পুরসভার প্রতিনিধিরা। ছিলেন পঞ্চায়েত প্রধান-সহ অন্য জনপ্রতিনিধিরাও। সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, ওই বৈঠকেই জনপ্রতিনিধিদের ভোট নিয়ে হুঁশিয়ার করেছেন অভিষেক। পাশাপাশি বীরভূমের তৃণমূলের নেতাদের মধ্যে বৈরিতা নিয়েও বার্তা দিয়েছেন তিনি।

একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, বৈঠকে অভিষেক বলেছেন, ‘‘পুরনির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থীরা জয়ী হয়। কিন্তু লোকসভা নির্বাচনে সেই সব আসনে তৃণমূলকে হারতে হয়। এটা চলবে না। রেজাল্ট দেখার পরে হেরে যাওয়া বুথের কাউন্সিলদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ এর পাশাপাশিই দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব রুখতে বৈঠকে অভিষেক বীরভূমের তৃণমূল নেতাদের বলেন, ‘‘মান-অভিমান করে কোনও ভাবেই বসে থাকা যাবে না। মান-অভিমান থাকলে একসঙ্গে বসে মিটিয়ে নিতে হবে।’’ পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে অভিষেককে বলতে শোনা যায়, ‘‘বীরভূমে কোনও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নেই। আজকে বৈঠক করেছি। কোনও সমস্যা নেই আর।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement