শনিবার ব্রিগেড পরিদর্শনে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত।
আগের বিকেলে ব্রিগেডে পৌঁছে প্রস্তুতির শেষপর্ব পরখ করে নিলেন তৃণমূলের সেনাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। হাতে ম্যাপ নিয়ে মঞ্চের সব দিক, জমায়েতের জায়গা— সবটাই বুঝে নিলেন নিজের মতো করে। গত বৃহস্পতিবার ব্রিগেডে একবার গিয়েছিলেন অভিষেক। কিন্তু তখন কেবল কাঠামো তৈরি হয়েছিল। তার পর গত ৪৮ ঘণ্টায় ধাপে ধাপে প্রায় সবই হয়ে গিয়েছে। প্রতিমা তৈরি। শেষপ্রহরে কেবল চোখ আঁকার কাজটুকু চলছে।
শনিবার বিকাল ৪টে নাগাদ ব্রিগেডের মঞ্চে পৌঁছন অভিষেক। দেখা যায় তাঁর আশপাশে ভিড় করে রয়েছেন ছাত্র-যুব নেতানেত্রীরা। কলকাতার কাউন্সিলর বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায়, অভিষেকের কাকা তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাই স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় (বাবুন), মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের ভাই স্বরূপ বিশ্বাসেরাও ছিলেন অভিষেকের পাশে। আরামবাগের বিদায়ী সাংসদ অপরূপা পোদ্দারকেও দেখা গিয়েছে মঞ্চে।
রবিবার তৃণমূলের ব্রিগেডের সমাবেশের পোশাকি নাম দেওয়া হয়েছে ‘জনগর্জন সভা’। সেই সভায় অনেক কিছুই নতুন থাকছে। মঞ্চ থেকে লম্বা র্যাম্পে হেঁটে মানুষের কাছাকাছি পৌঁছে যাবেন মমতা, অভিষেক। শনিবার সেই র্যাম্পেও নিজে হেঁটে দেখেন অভিষেক। তার পর কর্ডলেস মাইক্রোফোন হাতে নিয়ে আওয়াজ পরীক্ষা করেন। মাঠে জড়ো হওয়া সমর্থকদের উদ্দেশে বলেন, ‘‘জয় বাংলা! কাল (রবিবার) দেখা হবে সকলের সঙ্গে।’’
শনিবার বিকেলে ব্রিগেডের মঞ্চে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক। ছবি: ফেসবুক।
প্রসঙ্গত, ব্রিগেডের সভার স্লোগানও স্থির করে ফেলেছে তৃণমূল। মূল মঞ্চের পটভূমিতে থাকছে বিশাল ‘এলইডি ডিসপ্লে বোর্ড’। যাকে পরিভাষায় বলা হচ্ছে ‘ভিডিয়ো ওয়াল’। এমন তিনটি দেওয়ালের বন্দোবস্ত করা হয়েছে। তার নীচে লেখা হয়েছে, ‘জনগণের গর্জন, বাংলা বিরোধীদের বিসর্জন— তৃণমূলই করবে অধিকার অর্জন’। মোট তিনটি মঞ্চ গড়া হয়েছে ব্রিগেডে। বড় মঞ্চের দুপাশে রয়েছে তুলনামূলক ছোট দু’টি মঞ্চ। সামনে আরও দু’টি ছোট মঞ্চ রয়েছে। যেখানে সভার শুরুতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে বলে তৃণমূলের তরফে জানানো হয়েছে। ব্রিগেড জুড়ে রাখা হয়েছে প্রায় দেড় হাজার লাউডস্পিকার।
সন্দেশখালি নিয়ে বিরোধীরা যখন তাদের প্রচার তুঙ্গে নিয়ে গিয়েছে, তখনই আচমকা ১০ মার্চের জন্য এই ব্রিগেড সমাবেশের কথা ঘোষণা করেছিলেন অভিষেক। তারিখ ২৫ ফেব্রুয়ারি। অর্থাৎ, সমাবেশের প্রস্তুতির জন্য মাত্রই ১৫ দিন সময় পেয়েছে তৃণমূল।
উত্তরবঙ্গ, জঙ্গলমহল এবং দূরবর্তী জেলা থেকে তৃণমূলের যে কর্মী-সমর্থকেরা কলকাতায় এসেছেন বা আসছেন, তাঁদের মোট পাঁচটি জায়গায় থাকার বন্দোবস্ত করা হয়েছে। নিউ টাউনের ইকো পার্ক, কসবার গীতাঞ্জলি স্টেডিয়াম, আলিপুরের মুক্তাঙ্গন উত্তীর্ণ, নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়াম এবং হাওড়ায় একটি জায়গায় তৃণমূলের সমর্থকরা রয়েছেন। গত তিন দিনে সে সব জায়গার পরিকাঠামো ঘুরে দেখে এসেছিলেন অভিষেক। শনিবার হাওড়া ছাড়া বাকি সব জায়গায় গিয়ে জেলা থেকে আগত কর্মী-সমর্থকদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা দেখে আসেন অভিষেক। মঞ্চ থেকে নেমে স্বেচ্ছাসেবকদের উদ্দেশেও প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।