(বাঁ দিকে) রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র ।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশে ‘কুরুচিকর’ মন্তব্য নিয়ে নির্বাচন কমিশনের শো-কজ়ের জবাব তিনি দেবেন বলে আনন্দবাজার অনলাইনকে জানিয়েছিলেন পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সেই মতো সোমবার নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই শো-কজ়ের জবাবি চিঠি কমিশনকে পাঠিয়েছেন কলকাতা হাই কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি। সোমবার সন্ধ্যায় সাংবাদিক বৈঠকে নিজেই সে কথা জানিয়েছেন রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক (সিইও) আরিজ আফতাব।
মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে ‘কুরুচিকর’ মন্তব্য করার অভিযোগ উঠেছে অভিজিতের বিরুদ্ধে। গত বৃহস্পতিবার সমাজমাধ্যমে একটি ভিডিয়ো পোস্ট করে তৃণমূল। (ভিডিয়োটির সত্যতা আনন্দবাজার অনলাইন যাচাই করেনি। ) সেই ভিডিয়োয় অভিজিৎকে বলতে শোনা যায়, ‘‘তৃণমূল বলছে, রেখা পাত্রকে কেনা হয়েছিল ২০০০ টাকায়! মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তুমি কত টাকায় বিক্রি হও? তোমার হাতে কেউ আট লক্ষ টাকা গুঁজে দিলে চাকরি হয়, কেউ ১০ লক্ষ টাকা দিলে রেশন হাওয়া হয়ে যায়! কেন তোমার দাম ১০ লক্ষ টাকা? তুমি কেয়া শেঠকে দিয়ে মুখে মেকআপ করাও বলে? আর রেখা পাত্র গরিব মানুষ, লোকের বাড়িতে কাজ করে, আমাদের প্রার্থী। সে জন্য তাঁকে ২০০০ টাকায় কেনা যায়?’’
এই নিয়েই অভিজিতের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে রাজ্যের শাসকদল। মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে ‘কুরুচিকর’ মন্তব্যের জন্য তমলুকের পদ্মপ্রার্থীর বিরুদ্ধে কমিশনের দ্বারস্থও হয় তারা। এর পরেই কমিশন অভিজিৎকে শো-কজ় করে। তাঁকে বলা হয় সোমবার বিকেল ৫টার মধ্যে জবাব দিতে। কমিশন সূত্রে খবর, সেই মতো সোমবার বিকেল ৪টের মধ্যেই শো-কজ়ের জবাব দিয়েছেন অভিজিৎ। সিইও সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, ‘‘তমলুকের বিজেপি প্রার্থী অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় সময়ের মধ্যে শো-কজ় চিঠির জবাব দিয়েছেন। ওই চিঠি কমিশনের কাছে পাঠানো হয়েছে।’’
অভিজিৎ যে শো-কজ়ের জবাব সময়ের মধ্যেই দেবেন, তা রবিবারই আনন্দবাজার অনলাইনকে জানিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু কমিশনের জবাবি চিঠিতে তিনি কী বলবেন, তা অবশ্য তখন স্পষ্ট করেননি অভিজিৎ। তিনি শুধু বলেছিলেন, ‘‘যা ঘটনা ঘটেছে, তা সম্পূর্ণ ভাবে আমি কমিশনে জানাচ্ছি।’’ শেষমেশ অভিজিৎ কী জবাব দিয়েছেন, তা সোমবারও জানা গেল না। সে ব্যাপারে কিছু জানাননি সিইও।
তবে পূর্ব মেদিনীপুরের বিজেপির একটি সূত্রের দাবি, তৃণমূল সমাজমাধ্যমে অভিজিতের যে বক্তব্য ভাইরাল করেছে এবং চৈতন্যপুরের জনসভায় বিজেপি প্রার্থী আসলে যা বলেছেন, তার মধ্যে ‘বিস্তর ফারাক’। জেলার বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, দুটো আলাদা ভিডিয়ো দেখলেই স্পষ্ট হবে যে তৃণমূলের আইটি সেল অভিজিতের বলা বিভিন্ন মন্তব্যের অংশ জুড়ে জুড়ে (এডিট করে) একটা ভিডিয়ো তৈরি করেছে এবং সেই ভিডিয়োই সমাজমাধ্যমে পোস্ট করেছে। প্রকারান্তরে তাঁরা বোঝাতে চেয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে তমলুকের বিজেপি প্রার্থী এমন কোনও মন্তব্য করেননি, যা ‘অশালীন’।