ভাঙচুর করা হয়েছে মোটরবাইক। নিজস্ব চিত্র।
লোকসভা ভোট যত এগিয়ে আসছে, ততই রাজনৈতিক উত্তেজনার পারদ চড়ছে নন্দীগ্রামে। বৃহস্পতিবার রাতে নন্দীগ্রাম -১ ব্লকের মহম্মদপুরে তৃণমূলের এক অঞ্চল সহ-সভাপতিকে মারধর এবং তাঁর মোটরবাইক ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে বিজেপি কর্মীদের বিরুদ্ধে। ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে বিজেপির স্থানীয় বুথের সভাপতি সৌরেন পড়ুয়াকে গ্রেফতার করেছে নন্দীগ্রাম থানার পুলিশ। আর বিজেপির বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন নন্দীগ্রাম- সহ পূর্ব মেদিনীপুর জেলার বেশ কয়েকটি এলাকার বিশেষ দায়িত্বপ্রাপ্ত তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ।
স্থানীয় সূত্রের খবর, ভেকুটিয়া অঞ্চল তৃণমূল সহ-সভাপতি পদে রয়েছেন রাখহরি ঘড়া। বৃহস্পতিবার রাতে তিনি দোকান বন্ধ করে বাড়ি যাচ্ছিলেন। পথে মহম্মদপুর বাজার লাগোয়া সেতুর উপর তাঁর হামলা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ। জানা গিয়েছে, ওই এলাকায় কয়েকজন যুবক বসে মদ্যপান করছিলেন। তাঁদের সঙ্গে বচসা হয় রাখহরির। তখন তাঁকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। মোটরবাইক ভাঙচুর করা হয়েছে রাখহরির। মোটরবাইক ফেলে পালিয়ে তিনি প্রাণ বাঁচান। রাত পর্যন্ত ঘটনাস্থলে পড়ে ছিল তৃণমূল নেতার ভাঙাচোরা বাইক। পরে ওই তৃণমূল নেতাকে নন্দীগ্রাম সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
ঘটনায় বিজেপি কর্মীদের দিকে আঙুল তুলছে তৃণমূল। রাখহরি বলছেন, ‘‘দোকান বন্ধ করে মোটরবাইকে চেপে বাড়ি ফিরছিলাম। পিছনে এক দাদা বসেছিলেন। মহম্মদপুর বাজারের কাছে সেতুর উপর উঠতেই দাদার মোবাইলে ফোন আসে। তিনি কথা বলছিলেন। সে সময় কয়েকজন বিজেপির কর্মী আমাদের উপর চড়াও হয়। দুজনকেই মারধর করা হয়েছে। মদের বোতল দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। আমার সামনেই মোটরবাইকটিকে ভেঙে টুকরো করা হয়েছে। এরপর স্থানীয় একটি বিজেপির কার্যালয়ে আটকে রাখা হয়েছিল। তবে ওদেরই দু-একজন আমাকে অন্য পথে সেখান থেকে বের করে দেন।’’
রাখহরির বাড়ি ভেকুটিয়া পঞ্চায়েত এলাকার জেলেমারা গ্রামের ৩৫ নম্বর বুথে। রাতেই এ ব্যাপারে নন্দীগ্রাম থানায় লিখিতভাবে অভিযোগ দায়ের করেন ওই তৃণমূল নেতা। সেই মতো রাতে তল্লাশি চালিয়ে সৌরেন পড়ুয়া নামে একজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃত সৌরেন বিজেপির স্থানীয় বুথ সভাপতি। তাঁর স্ত্রী সুস্মিতা পড়ুয়া স্থানীয় পঞ্চায়েতের সদস্য। এ ব্যাপারে তৃণমূল নেতা সমাজ মাধ্যমে সরব হন। তাঁর অভিযোগ, ‘‘ভেকুটিয়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার তৃণমূলের অঞ্চলের সহ-সভাপতি রাখহরি ঘড়ার উপর আচমকা আক্রমণ। বিজেপি ভয় পেয়ে গুন্ডামি করছে। দোষীদের অবিলম্বে গ্রেফতার করা উচিত।’’
যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে পদ্ম শিবির। বিজেপির নন্দীগ্রাম-১ মণ্ডল সভাপতি ধনঞ্জয় ঘড়ার পাল্টা দাবি, পুলিশ সুস্মিতা পড়ুয়ার বাড়ির দরজা- জানলা ভেঙে তাঁর স্বামীকে গভীর রাতে গ্রেফতার করেছে। আর বিজেপি তমলুক সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক মেঘনাদ পাল বলছেন, ‘‘মদের আসরে দুপক্ষের মধ্যে ঝামেলায় আক্রান্ত হন রাখহরি। সেখানে দলের কেউ জড়িত নয়। আসলে কুণাল ঘোষ যেভাবে তৃণমূল কর্মীদের প্ররোচিত করেন, সে জন্য উনি নন্দীগ্রাম থেকে ফেরার পরে একটা না একটা অশান্তি হতেই থাকে।’’