(বাঁ দিকে) নরেন্দ্র মোদী, অনন্ত মহারাজ এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। —ফাইল চিত্র।
‘গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশন’-এর একটি অংশ আসন্ন লোকসভা ভোটে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলকে সমর্থনের সিদ্ধান্ত নিল। সোমবার শিলিগুড়িতে সাংবাদিক বৈঠক করেন সংগঠনের কয়েক জন পরিচিত মুখ। নিজেদের ‘আদি’ নেতা বলে পরিচয় দিয়ে তাঁদের বক্তব্য, কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকার তাঁদের দাবিদাওয়া পূরণ করেনি। অন্য দিকে, রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের আমলে রাজবংশীদের সার্বিক উন্নয়ন হয়েছে। সেই কারণে এ বারের ভোটে তাঁরা তৃণমূলকে সমর্থনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
গ্রেটার কোচবিহারের দু’টি সংগঠন সক্রিয় রয়েছে কোচবিহারে। তাদের মধ্যে একটির মাথায় রয়েছেন বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ নগেন্দ্র রায় তথা অনন্ত মহারাজ। নগেন্দ্র সরাসরি বিজেপির রাজ্যসভায় মনোনীত সাংসদ হওয়ায়, তিনি যে লোকসভা ভোটে কেন্দ্রের শাসক দলের প্রার্থী নিশীথ প্রামাণিকের হয়ে প্রচার করবেন, তা প্রত্যাশিত। বিজেপির কিছু সিদ্ধান্ত নিয়ে অনন্ত সম্প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করলেও, তাঁর তৃণমূলকে সমর্থনের কোনও সম্ভাবনা যে নেই, সে কথা বলাইবাহুল্য। শিলিগুড়ি ‘আদি’ নেতাদের বক্তব্য প্রসঙ্গে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করে আনন্দবাজার অনলাইন। অনন্তের দাবি, যাঁরা সাংবাদিক বৈঠক করেছেন, তাঁরা গ্রেটার কোচবিহারের কেউ নন। তাঁর কথায়, ‘‘যারা নিজেদের জিসিপিএ বলে দাবি করছে, আসলে তারা সংগঠনের কেউ না। তাদের অনেক আগেই দল থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে।’’
শিলিগুড়িতে যাঁরা সাংবাদিক বৈঠক করেছেন, তাঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন লক্ষ্মীকান্ত বর্মণ, পবিত্র বর্মণ, নীপক বর্মণ। তাঁরা নিজেদের গ্রেটার কোচবিহারের পদাধিকারী বলে দাবি করেছেন। লক্ষ্মীকান্ত সংগঠনের সভাপতি, পবিত্র সাধারণ সম্পাদক এবং নীপক মুখপাত্র বলে দাবি। তাঁদের বক্তব্য, কেন্দ্রীয় সরকার কোচবিহারকে পৃথক রাজ্য বা স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল করার প্রতিশ্রুতি দিলেও, তা পূরণ করেনি। উল্টে অনন্তকে রাজ্যসভার সাংসদ করে তাঁকে নিষ্ক্রিয় করে রাখা হয়েছে। যাতে পৃথক রাজ্যের দাবি আর নতুন করে উঠতে না পারে।
নীপক বলেন, ‘‘আমরা পৃথক রাজ্যের দাবিতে আন্দোলন চালিয়েছি। কেন্দ্র সরকার আমাদের আশ্বাস দিয়েছিল বলেই আমরা তাদের সমর্থন করেছিলাম। কিন্তু তারা প্রতিশ্রুতি রাখেনি। তৃণমূল তা-ও উত্তরবঙ্গ, কামতাপুর ও রাজবংশীদের সার্বিক উন্নয়ন করেছে। যে কারণে আমাদের আরও কিছু দাবি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে রয়েছে। তিনি সেগুলো পূরণ করার আশ্বাস দিয়েছেন। সে জন্য আমরা তৃণমূলকে সমর্থন জানাব।’’
পবিত্রও বলেন, ‘‘বারবার প্রতারণা করেছে কেন্দ্র সরকার। অনন্ত মহারাজকে টোপ দিয়ে সাংসদ করা হয়েছে। জীবন সিংহ (কেএলও প্রধান)-কেও নজরবন্দি করে রেখেছে। আমাদের আওয়াজকে দাবিয়ে রাখতে চাইছে বিজেপি। সে জন্য এ বার তৃণমূলকে সমর্থন করা হবে। যদি তৃণমূল আমাদের দাবি না মানে, তা হলে নোটায় ভোটের জন্য আবেদন জানাব আমরা। এবং বৃহত্তর আন্দোলনে নামব। তবে মুখ্যমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন সার্বিক উন্নয়নের।’’