ভোটের আগে যে কোনও দলের যে কোনও নেতা তাঁর পরাজয়ের সম্ভাবনাকে ফুৎকারে উড়িয়ে দেবেন, তাঁদের দুর্ভেদ্য দুর্গে প্রতিপক্ষের প্রবল আক্রমণেও আম দরবারে নিভাঁজ রাখবেন মুখ—এটাই প্রত্যাশিত। অতএব, সারদা হোক বা নারদ, নিজেদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব হোক বা বিরোধীদের জোট, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আপাত-নিরুত্তাপ থাকবেন, সেটাই স্বাভাবিক ছিল। তবু সুর কাটছে কেন?
কেন ইদানীং জনসভাতেও তৃণমূলনেত্রীর শরীরী ভাষায় অস্বস্তির ছাপ স্পষ্ট? কেন সুর বদলে নিজেদের শুধরে নেওয়ার আত্মসমর্পণমূলক ভঙ্গি আচমকাই? ফুৎকারেই তো উড়ে যাওয়ার কথা ছিল বিরোধীদের। যদি আশি অথবা নব্বই অথবা নিরানব্বই শতাংশ কাজ হয়ে গিয়ে থাকে!
কারণ, বুদ্ধিমান মমতা রাজনীতির সব তত্ত্বই বোঝেন সম্যক, পাটিগণিত তো বটেই। বাম ও কংগ্রেস হাত মেলালে অঙ্কের হিসাবে জোট যে তৃণমূলের সঙ্গে প্রায় সমানে সমানে লড়াই দিতে পারঙ্গম, এই সম্ভাবনা উদ্বিগ্ন করছিল তৃণমূল শিবিরকে। এবিপি আনন্দ-এ সি নিয়েলসন যৌথ সমীক্ষা তাদের বিনিদ্র রাত কাটাতে বাধ্য করবে সংশয় নেই। কারণ, অঙ্কের পাতায় যে সমানে সমানে লড়াইয়ের ইঙ্গিত ছিল, তারই প্রতিফলন উঠে এল এই সমীক্ষায়।
অতএব ভরসা ভূত। ভূতের নৃত্য অবাধ করা যায় যদি, ভুতুড়ে ভোটারদের যদি ঝাঁকে ঝাঁকে নামিয়ে আনা যায়, তা হলেই নিশ্চিত হবে সিংহাসনের পথ। ভবিষ্যৎ নিরাপদ করতে ভূতের ভূমিকা কতটা জরুরি, সম্যক বুঝছে তৃণমূল।